<p>ভাঙ্গায় প্রকাশ্যে আসমা আক্তার নামের এক নারীর বর্তমান স্বামী আকবর খরাতি (৫৫)-কে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার সাবেক স্বামী রমজান মাতুব্বরের (৫৪) বিরুদ্ধে। নিহত আকবর খরাতি ভাঙ্গা পৌরসভার হাজরাহাটি মহল্লার কলম খরাতির ছেলে।</p> <p>ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভাঙ্গা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের খারাকান্দি মহল্লার ওই নারীর বাবার বাড়িতে। রবিবার দুপুর একটার দিকে আকবর শেখকে তার নিজ দোকানের মধ্যে কোপানো ও এলোপাতাড়ি পিটানো হয়। পরে তাকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। রবিবার বিকেল ৪টার দিকে আহত আকবর খয়রাতি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বর্তমান স্ত্রী ও তার সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থাকতেন।</p> <p>পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গা পৌরসভার খারাকান্দি মহল্লার আব্দুল হাইয়ের মেয়ে আসমা আক্তারের (৪৪) সঙ্গে ২৩ বছর আগে একই মহল্লার রমজান মাতুব্বরের (৫৪) বিয়ে হয়। আট বছর সংসার করেন এ দম্পতি। তাদের আশিক নামের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। এরপর গত ১৫ বছর আগে আসমা আক্তার আগের স্বামী রমজানকে তালাক দিয়ে পাশের হাজরাহাটি মহল্লার আকবরকে বিয়ে করে বাবার বাড়িতে বাস করছিলেন। আকবর শ্বশুরবাড়ির একটি ঘরে মুদি দোকান করতেন। তাদের ময়না নামের একটি মেয়ে রয়েছে।</p> <p>ভাঙ্গা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আইয়ুব আলী বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি, আসমার আগের স্বামী রবিবার দুপুর ১টার দিকে বর্তমান স্বামীর মুদি দোকানে এসে আকবরকে হাতুড়ি দিয়ে প্রথমে পিটায়। একপর্যায়ে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। গুরুতর আহত আকবরকে প্রথমে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকেলে তার মৃত্যু হয়। আসমা আক্তারের আগের পক্ষের এক ছেলে ও পরের পক্ষের এক কন্যাসন্তান রয়েছে।’</p> <p>আকবর খরাতির ২ বোন লিনা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ভাইকে হত্যা করেছে রমজান। ভাইকে কয়েক দিন আগেও হুমকি দিয়েছিল। আমি রমজানের কঠিন শাস্তি চাই।’</p> <p>ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত সহকারী চিকিৎসক আক্তার হোসেন বলেন, ‘গুরুতর আহত আকবর নামের ব্যক্তির বাঁ পাশের কানের পাশে কোপ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’</p> <p>ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, ‘আমি যতটুকু জেনেছি খারাকান্দি মহল্লার আসমা নামক এক নারী প্রথমে রমজান নামক একজনকে বিয়ে করেন। পরবর্তী সময়ে আকবর নামক আরেকজনকে বিয়ে করেন। গত তিন-চার বছর আগে আগের স্বামী রমজান পুনরায় আসমাকে নিয়ে চলে যান। এরপর বর্তমান স্বামী তার লোকজন নিয়ে আবার আসমাকে নিয়ে আসেন। এর জের ধরেই আজকের ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি।’</p>