<p style="text-align:justify">ভারতে ইলিশ রপ্তানি হবে-এমন খবরে চাঁদপুরে পাইকারি ইলিশের বাজারে কেজিতে দাম বেড়েছে দেড় থেকে ২শ টাকা। পাইকারি বাজারের সঙ্গে ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা পর্যায়েও তার প্রভাব পড়েছে। এতে সাধারণ মানুষ ইলিশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দূরদূরান্ত থেকে আসা অনেকেই মাছ ক্রয় না করে শূন্য হাতে ফিরে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ দরদামও করছেন। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর বড় স্টেশন ইলিশের পাইকারি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।</p> <p style="text-align:justify">রসনায় স্বাদের ভিন্নতা আনতে ইলিশের বিকল্প নেই। আর সেই স্বাদ ও গন্ধের জন্য চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনার রুপালি ইলিশের জুড়িই আলাদা। তবে এখন সেই আগের মতো চাঁদপুরের এই দুই নদীতে মিলছে না ইলিশ। অল্প কিছু মিললেও সাগর ও উপকূলে ধরা ইলিশের চেয়ে স্থানীয় এসব নদীর আকারভেদে ইলিশের দরদামও বেশ চড়া। </p> <p style="text-align:justify">বড় স্টেশনের মাছ ব্যবসায়ী নূরে আলম জানান, পদ্মা ও মেঘনায় ধরা বড় আকারের ইলিশ প্রতি কেজি ২১শ থেকে ২২শ টাকা। ঠিক একই আকারের সাগর ও উপকূলের ইলিশ ১৮শ থেকে ১৯শ টাকা। </p> <p style="text-align:justify">সুমন খান নামে আরেক ব্যবসায়ী জানান, ছোট, মাঝারি এবং বড় আকারের প্রতি মণ ইলিশ ৪০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। </p> <p style="text-align:justify">নোয়াখালীর চেয়ারম্যানঘাট, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, ভোলার চরফ্যাশন থেকে বেশকিছু ইলিশের চালান নিয়ে ব্যাপারীর চাঁদপুরে আসেন। তাদের বক্তব্য এখানে দরদাম ভালো পাওয়া যায়। তার জন্যই মূলত বড় স্টেশন পাইকারি বাজারে আসছেন তারা। এই মাছ বাজারের পাশে নদীর ঘাটে মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত কিছু নৌকাও দেখা গেছে। যেগুলোতে স্থানীয় জেলেরা পদ্মা ও মেঘনায় ধরা ইলিশ নিয়ে ফিরেছেন। তবে তা পরিমাণের তেমন নয়।</p> <p style="text-align:justify">এদিকে, ভারতে ইলিশ রপ্তানি। সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেননি ক্রেতারা। বড় স্টেশনে ইলিশ কিনতে আসা ইকবাল হোসেন বলেন, আমরাই তো ইলিশ খেতে পারি না। তার ওপর আবার রপ্তানি। </p> <p style="text-align:justify">ইলিশ ব্যবসায়ী শামীম জমাদার বলেন, দেশের ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। এরমধ্যে ভারতে রপ্তানি। তাই সঙ্গত কারণে, আকারভেদে দরদামও বেড়েছে।</p> <p style="text-align:justify">চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমিতির সভাপতি আব্দুর বারী জমাদার মানিক বলেন, চাঁদপুর থেকে ১ যুগ আগে সরাসরি ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হতো। কিন্তু এখন আর তা হচ্ছে না। তবে ঢাকার কিছু ব্যবসায়ী চাঁদপুর থেকে ইলিশ ক্রয় করে ভারতে রপ্তানি করছে। এতে চাঁদপুরে মাছ ব্যবসায়ীদের তেমন কাজে আসেনি। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলে এবং চাঁদপুর থেকে সরাসরি ইলিশ ভারতে রপ্তানি হলে, মাছ ব্যবসায়ীরা লাভবান হতো। </p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো জানান, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু বাজারে সরবরাহ সবমিলিয়ে প্রতিদিন ৬ মণ হবে। অথচ ৩-৪ বছর আগেও আড়াই থেকে ৩ হাজার মণ ইলিশ বেচাকেনা হতো চাঁদপুর বড় স্টেশনে।</p> <p style="text-align:justify">অন্যদিকে, সোমবার চাঁদপুরের বড় স্টেশন পাইকারি বাজার থেকে ১ মণ পরিমাণ প্যাকেজ করে প্রায় ৬শ মণ ইলিশ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এসব ইলিশ দেশের বাজারে না ভারতে রপ্তানির জন্য পাঠানো হয়েছে। তার কোনো তথ্য দেননি মাছ ব্যবসায়ীরা।</p> <p style="text-align:justify">মা ইলিশ সংরক্ষণে আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ বিচরণ করে। দেশের এমন ৬টি অভয়াশ্রমে সাধারণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।</p>