<p>কক্সবাজারের মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল আত্মসাৎ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কেন্দ্রের সাবেক প্রকল্প পরিচালক (পিডি)সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দুদকের উপপরিচালক মো. আহসানুল কবির পলাশ বাদী হয়ে কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।</p> <p>মামলা দায়েরের বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, মামলাটি করা হয়েছে মাতারবাড়ী গত ৩১ আগস্ট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ১৭ কোটি ৭ লাখ টাকা মূল্যের মালপত্র আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে।</p> <p>মামলার আসামিরা হলেন- প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কম্পানির (সিপিজিসিবিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মো. আলফাজ উদ্দীন, নিরাপত্তা প্রধান মো. রায়হান, চট্টগ্রামের ইকবাল মেরিনের স্বত্তাধিকারী মো. ইকবাল হোসেন, কর্মচারী মো. নিজাম উদ্দিন ও মো. সেলিম।</p> <p>দুদক সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প পরিচালকের যোগসাজশে অন্যান্যরা গত ৩১ আগস্ট মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪ নম্বর জেটি ঘাট দিয়ে সমুদ্রপথে পাচারকালে প্রায় ১৭ কোটি ৭ লাখ টাকা মূল্যের বিদেশি বৈদ্যুতিক কেবল জব্দ করে নৌবাহিনী। এ সময় পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়। পরে ১ সেপ্টেম্বর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সিপিজিসিবিএলের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।</p> <p>অভিযোগ রয়েছে, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পটির অভ্যন্তরে বিদেশি আমদানি করা এরকম মালামাল পাচারের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও ভুরি ভুরি এরকম পাচারের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এরকম ধরাধরির ঘটনা কোনো সময়েই ঘটেনি। এর আগে রাতের বেলায় চোরাই মালামাল পাচার হতো। কিন্তু পাচার এমনভাবেই নির্বিঘ্নে হয়েছে যে, পাচারে কোনো বাধাবিঘ্নের ঘটনা না থাকায় পাচারে জড়িত সিন্ডিকেট দিনের বেলায় পাচারকেই একদম সহজভাবে নিয়েছে।</p> <p>প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপের মাতারবাড়ী ইউনিয়নে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনের জন্য ২০১৪ সাল থেকে এক হাজার ৬০৮ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়। এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদানের ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথমে ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হলেও ডলারের মূল্যবৃদ্ধি জনিত কারণ দেখিয়ে সর্বশেষ ৬২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়।</p> <p>জাপানী সংস্থা-জাইকার অর্থায়নে বাংলাদেশের সরকার মালিকানাধীন কম্পানি কোল পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিচালনা করে আসছে। প্রকল্পের প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে কেন্দ্রটিতে।</p> <p>প্রসঙ্গত, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যাপক দুর্নীতি ও হরিলুট বিষয় নিয়ে ইতিপূর্বে কালের কণ্ঠে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। </p>