<p style="text-align:justify">বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আহত হয়ে ৫০ দিন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকার পর জুনায়েদ ইসলাম রাতুলের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যায় সে।</p> <p style="text-align:justify">রাতুলের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু তার আগেই চলে গেল সবার প্রিয় রাতুল। তার মৃত্যুর পর বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শহীদ রাতুলের বাবা জিয়াউর রহমানের হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা।</p> <p style="text-align:justify">এ সময় জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা বলেন, ‘ছোট্ট রাতুল এখন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। সে শুধু বগুড়ার নয়, গোটা দেশের সম্পদ। রাতুলের মতো সোনার টুকরাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। সবাই মিলে দেশটাকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারলেই শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।’ তিনি শহীদ রাতুলের খুনিদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দেন।</p> <p style="text-align:justify">রাতুল বগুড়া উপশহরের পথ পাবলিক স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বাবার নাম জিয়াউর রহমান। তাদের বাসা হাকিরমোড় ঘোনপাড়া এলাকায়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের খবরে শহরে বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। বিকেলে সেই মিছিলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। সেখানে রাতুলের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। </p> <p style="text-align:justify">এদিকে রাতুলের মা রোকেয়া বেগম ছেলের বই, কাপড়, খেলনা ও আর্ট পেনসিল বক্সসহ রাতুলের প্রিয় জিনিস দেখছেন আর কাঁদছেন। একটু পর পর যে জিনিসগুলো রাতুলের সবচেয়ে বেশি পছন্দের, তা বের করে প্রতিবেশী ও স্বজনদের দেখাচ্ছেন আর সেগুলো জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। </p> <p style="text-align:justify">রাতুলের বাবা জিয়াউর রহমান জানান, স্কেটিংয়ের জুতা রাতুলের খুব পছন্দের। প্রতিদিন স্কেটিং শেষে যত্ন করে রেখে দিত। অবসরে খেলাধুলা ও বই পড়ার নেশা ছিল রাতুলের। গুলি লাগার কয়েক দিন আগে আমার সঙ্গে মার্কেটে গিয়ে স্কেটিং ও ছোটদের রূপকথার গল্পের বই কিনে নেয়। মৃত্যুর আগের রাতে ভিডিও কলে আমাকে বলল, ‘বাবা, তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। কবে আসবা? ছেলের কথা শুনে আমি সোমবার বিকেলে ঢাকার পথে রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এরই মধ্যে ভোরে খবর পাই, সে আর নেই।’</p> <p style="text-align:justify">এদিকে বুধবার বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতদের মধ্যে ৪৩ জনকে অনুদান দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা ৪২ জন আহত ছাত্র-জনতার মাঝে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকার চেক বিতরণ করেন।</p>