<p>শেরপুর সদর উপজেলায় কীটনাশক ব্যবহার করায় এক কৃষকের এক বিঘা পরিমাণ বেগুনের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এ ঘটনায় দোকানির বিরুদ্ধে ভুল কীটনাশক দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী কৃষক আবুল হোসেন।</p> <p>ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বলাইরচর কান্দাপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়ার দোকান থেকে বেগুনের পোকা দমনের কীটনাশক চাইলে তিনি আগাছা দমনের কীটনাশক দেন। পরবর্তীতে কীটনাশক প্রয়োগে জমির সব বেগুনগাছ মরে যায়। এতে অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতির শিকার হন ওই কৃষক। এ ঘটনায় স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিস বসলেও উল্টো নানা ধরনের হুমকির শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগী আবুল হোসেন।</p> <p>স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই কীটনাশক ব্যবসায়ী একজন মুদি দোকানদার। অথচ কীটনাশকসহ নানা ধরনের বালাইনাশক বিক্রি করে এলাকার কৃষকদের ক্ষতি করে আসছেন। শুক্রবার সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দাসহ কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে এমন সব অভিযোগ আসে এই প্রতিবেদকের হাতে।</p> <p>ভুক্তভোগীর প্রতিবেশীরা জানায়, কৃষক আবুল হোসেন প্রতিবছরের মতো এবারও এক বিঘা জমিতে উন্নত জাতের বেগুনের চাষ করেন। তার ক্ষেতের প্রায় সব গাছেই ঝুলছে বেগুন। ইতোমধ্যে বেগুন বিক্রিও শুরু করেছেন। মঞ্জু মিয়া তাকে পূর্বশত্রুতার জের ধরে মডেল নামে আগাছা দমনের কীটনাশক দেন। </p> <p>ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি মূর্খ মানুষ। বেগুনে পোকা হয়েছে। তাই পোকা দমনের কীটনাশক চাইলে সে যে কীটনাশক দিয়েছে আমি সেটাই ক্ষেতে স্প্রে করেছি। সকালে দেখি সব গাছ মরা। ধারদেনা করে বেগুনের চাষ করেছিলাম।’</p> <p>স্থানীয় কৃষক মালেক মিয়া বলেন, ‘মঞ্জু মিয়ার ভুলের কারণে আবুল হোসেনের বেগুন ক্ষেত নষ্ট হলো। তার ক্ষেত থেকে প্রতিদিন এক থেকে দুই মণ বেগুন বিক্রি করা যেত। অন্তত আরো দুই মাস বিক্রি করতে পারতেন। এই বেগুন বিক্রির টাকা দিয়ে সংসারের খরচ করেও ধারদেনা পরিশোধ করতেন তিনি। আমরাও বিচার চাই।’</p> <p>তবে অভিযুক্ত কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়া বলেন, ‘আমার ভুল হয়নি। আমি ঠিকই দিয়েছি।’</p> <p>এ বিষয়ে শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমরা কৃষকদের এই বিষয়গুলো নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করি, যাতে কোনো কৃষক প্রতারিত না হন। তা ছাড়া বেগুনের ক্ষেতে আগাছা দমনের কীটনাশক দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে কীটনাশক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>