<p style="text-align:justify">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে সিলেটে গুলিবিদ্ধ হন চাঁদপুরের সন্তান আকবর হোসেন। সিলেট মদন মোহন কলেজের এই ছাত্রের বুক, পিঠ ও হাতে গুলি লাগে। এতে প্রাণে রক্ষা পেলেও গুরুতর আহত হন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা চলছে। কিন্তু অর্থের অভাবে উন্নতি চিকিৎসা হচ্ছে না তার। ফলে অসুস্থতা নিয়ে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে অবস্থান করছেন আকবর হোসেন।</p> <p style="text-align:justify">সিলেট মদন মোহন সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকবর হোসেন। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা গ্রামের দিনমজুর প্রতিবন্ধী রওশন আলী ও ফেরদৌসী বেগম দম্পতির ছেলে তিনি। গত ৪ আগস্ট সিলেটে কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। </p> <p style="text-align:justify">এ সময় বিপরীত দিক থেকে ছোড়া গুলিতে বুক, হাত, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হন আকবর হোসেন। আহত অবস্থায় ওই দিনই তাকে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হলেও অর্থাভাবে চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন তিনি। গুলির ক্ষত নিয়ে বাড়িতে বিছানায় পড়ে থাকলেও প্রতিবন্ধী বাবা ছেলের চিকিৎসা না করাতে পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সিরাজগঞ্জে অন্যের জমি দখল করে বিএনপির কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/27/1727440148-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সিরাজগঞ্জে অন্যের জমি দখল করে বিএনপির কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/09/27/1429493" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">আহত আকবর হোসেনের বাবা রওশন আলী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পুরো শরীরজুড়ে রয়েছে ছররা গুলির ক্ষত-বিক্ষতের চিহ্ন। এরই মধ্যে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ছেলের কোনোমতে চিকিৎসা করালেও পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে পারেননি। </p> <p style="text-align:justify">আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করলেও আমার ছেলের বেলায় তা জোটেনি।’ </p> <p style="text-align:justify">হাউমাউ করে কেঁদে তিনি আরো বলেন, ‘আমি একসময় প্রবাসে ছিলাম। সেখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আমার হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। বর্তমানে দিনমজুরি করে পরিবার নিয়ে কোনো মতে বেঁচে আছি। এখন আবার ছেলের এই অবস্থা। ছেলের চিকিৎসায় ব্যয় মেটাতে না পেরে এখন আমাকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।’</p> <p style="text-align:justify">আহত আকবর হোসেনের মা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে মেধাবী। নিজ সন্তানের শরীর থেকে ছররা গুলির ছোট ছোট কার্তুজ উঠিয়েছি। সেই গুলি আমার কাছে রয়েছে।’ ছেলের সুস্থতা ও ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হোক, এটাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তার আকুতি। </p> <p style="text-align:justify">আহত আকবর হোসেন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৭ জুলাই থেকে সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলাম। প্রথম দিকে হালকা আঘাতের শিকার হলেও ৪ আগস্ট পুলিশের ছররা গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হলে আমাকে প্রথমে সিলেট মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। জীবনে কিছু পাই বা না পাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আছি এবং আগামীতেও থাকব। কারণ আমি একজন ছাত্র। আমি লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটি চাকরি করে মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাতে চাই।’</p>