<p style="text-align:justify">‘ছোট্ট বাচ্চাটা এত পরিমাণে কান্নাকাটি করছে যে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা নেই। এতটুকুন বাচ্চা কি মা ছাড়া থাকতে পারে! কষ্টে বুকটা ফেটে যায় ওর কান্না দেখলে। আশপাশের মানুষ আসে ওরে দেখতে, কিন্তু ওর মাকে খুঁজে পাচ্ছি না কোথাও।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমান। জিয়া নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কলতাপাড়া গ্রামের মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে। </p> <p style="text-align:justify">জিয়াউর রহমান জানান, তার স্ত্রী সানজিদা আক্তার দুই বছর ধরে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত। এলাকার বেশ কিছু কবিরাজ দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করার পর জানা গেছে, সানজিদা জিনে ধরা রোগী। সে মোতাবেক চিকিৎসা কার্যক্রমও চলছিল। এরই মধ্যে একটি ছেলেসন্তান জন্ম দিয়েছেন সানজিদা। তাদের দাম্পত্য জীবনে কখনো কোনো কলহ ছিল না। কিন্তু চলতি মাসের ২৪ তারিখ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কাউকে না জানিয়ে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে যান। ফজরের আজান শুনে ঘুম ভাঙলে তাকে বিভিন্ন জায়গায় তন্নতন্ন করে খুঁজেও পাওয়া যায়নি। যাওয়ার সময় সানজিদা পরনের কাপড় ছাড়া বাড়তি কিছু, এমনকি পায়ের স্যান্ডেলটা পর্যন্ত নিয়ে যাননি। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আকবর হোসেন" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/27/1727442971-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আকবর হোসেন</p> </div> </div> </div> সানজিদার স্বামী জিয়াউর রহমান আরো জানান, এই চার দিনে বেশ কিছু কবিরাজের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। তারা একেকজন একেক রকমের তথ্য আর ফেরত আনার আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু কেউ এখন পর্যন্ত রোগীকে ফেরত আনতে পারেননি। দিন যতই যাচ্ছে, ততই তিনি হতাশ হয়ে যাচ্ছেন। বলছেন, ‘জলজ্যান্ত একটা মানুষ এভাবে নাই হয়ে যাবে। তাকে উদ্ধার করার মতো কি কোনো উপায় নেই?’ বাধ্য হয়ে গত বৃহস্পতিবার সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি।</div> </div> <p style="text-align:justify">জিডি সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার লক্ষ্মীপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে সানজিদা। দুলাল মিয়া এবং তার স্ত্রী দুজনই একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। জামাই-শ্বশুর ও আত্মীয়-স্বজন সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজছেন, কিন্তু পাচ্ছেন না। অনেক কবিরাজের কাছে যাচ্ছেন কিন্তু একেকজনের দেওয়া তথ্য একেক রকম। তার পরও সানজিদাকে পাওয়ার জন্য তারা টাকা-পয়সা খরচ করছেন, কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাকে পাওয়া যায়নি। যদি কেউ সানজিদার সন্ধান পেয়ে থাকেন, দয়া করে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন ভুক্তভোগীরা।</p> <p style="text-align:justify">সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারী জানান, এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>