<p>ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার চরপাড়া এলাকায় সেচখালের সেতু ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে অন্তত ২৫ গ্রামের মানুষ। সেতুটি পুনরায় নির্মাণ না করায় ঝিনাইদহ, মাগুরা ও রাজবাড়ি জেলার গড়াই নদী পাড়ের কয়েক হাজার কৃষক, শিক্ষার্থীসহ সবাই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।</p> <p>স্থানীয়রা জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচখালের ওই সেতু দিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপা, মাগুরার শ্রীপুর ও গড়াই নদীর ওপারের রাজবাড়ির পাংশা উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন পারাপার হয়। কৃষকরা মাঠ থেকে ফসল আনা-নেওয়া, বিক্রির জন্য বাজারে যাতায়াত এবং শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে চলাচল করে থাকে। চার বছর আগে সেতু ভেঙে পড়ে যায়। </p> <p>বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঝিনাইদহ নির্বাহী প্রকৌশলী ও গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালককে একাধিকবার অবহিত করা হলেও তারা এ নিয়ে কোনো গুরুত্ব দেননি।</p> <p>খুলুমবাড়িয়া, জালশুকা ও মাদলা গ্রামের বসিন্দারা জানায়, সেতু খারাপ থাকায় তারা অনেক পথ ঘুরে চলাচল করছেন, কৃষকরাও তাদের ফসল কেনা-বেচা ও মাঠ থেকে আনাসহ অন্যান্য কাজে অতিরিক্তি সময় ও টাকা ব্যয় করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের ভাষ্য, স্থানীয় হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর জনদুর্ভোগের কথা ভেবে নিজ অর্থায়নে ভেঙে পড়া সেতুর পাশে বিকল্প একটি পাকা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ঢালাইয়ের কাজ শেষ হলেও মাটিভরাট ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের আগেই দেশের পরিস্থিতি পাল্টে গেলে নির্মাণ কাজ আর শেষ হয়নি। ফলে তাদের দুর্ভোগের অবসান ঘটেনি।</p> <p>অনতিবিলম্বে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে মাদলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙা সেতুর কারণে কয়েক বছর ধরে ভোগান্তিতে পড়েছি। শৈলকুপা সদরে অফিসের কাজে গেলে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’</p> <p>স্থানীয় হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার ওহিদুজ্জামান জানান, ‘এলাকার মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য আমি নিজ অর্থায়নে বিকল্প একটি সেতু তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তবে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন ঘটে। চলমান পরিস্থিতে সেতুর বাকি কাজ আমার পক্ষে করা সম্ভব হচ্ছে না।’</p> <p>শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস বলেন, ‘ওই সেতুর কথা আমি লোকমুখে শুনেছি। আমি এখানে সদ্য যোগদান করেছি। সেতটিু নির্মাণের বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবগত করব।’</p> <p>পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ববধায়ক প্রকৌশলী ও গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল হামিদ জানান, সেচখালের সড়ক, সেতুসহ সব প্রকল্প মেরামত ও নির্মাণকাজের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইিডি)। ফলে ওই সেতু নির্মাণের কাজ তারাই সম্পন্ন করবেন।</p> <p>ঝিনাইদহের এলজিইিডির নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন জানান, ‘সেচখালের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে পড়েছে। সেতুটি পুনরায় নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তবনা পাঠানো হয়েছে। তিনি আশাবাদী হয়ে বলেন, বরাদ্দ পেলে খুব দ্রুতই সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।’</p>