<p style="text-align:justify">সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক হযরত আলী (৩০) হত্যার ঘটনায় মামলায় ৫ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৪ এর বিচারক শায়লা শারমিন এ রায় দেন।</p> <p style="text-align:justify">মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের ঘোষগাউয়ের বাসিন্দা রওশন আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩৩), সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ (বর্তমানে শান্তিগঞ্জ) তাইকাপন গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে সুমন আহমদ (২৯), বরুমপুর গ্রামের ফজিল বারীর ছেলে শিপু মিয়া (২৯), একই গ্রামের মুসুক মিয়ার ছেলে জাকারিয়া ওরফে মুন্না (৩০) ও হরমুজ আলীর ছেলে রুহুল আমিন (৩০)। এই পাঁচ আসামি জামিনে ছিলেন। ২৬ সেপ্টেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখে তারা হাজির হননি। ওই দিন থেকে তারা পলাতক রয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী জায়েদা বেগম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের পর থেকেই আসামিরা পালাতক রয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">রায়ে সন্তোষের কথা জানিয়েছেন নিহতের পরিবার। নিহতের ভাই শুক্কুর আলী বলেন, ‘আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। দীর্ঘ দশ বছর পর ভাই হত্যার বিচার পেয়ে আমরা খুশি। তবে আসামিরা এখনো পলাতক রয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।’</p> <p style="text-align:justify">মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৭ আগস্ট রাত ৮টার দিকে আসামিরা যাত্রী সেজে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলী সিএনজিচালিত অটোরিকশাস্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশা চালক হযরত আলীকে নিয়ে সিলেট থেকে বিয়ানীবাজার যান। সেখানে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিয়ানীবাজারের শিকপুর-বিয়ানীবাজার সড়কের পুরুষপাল এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীরা হযরত আলীকে থামান। যাত্রীবেশী আসামিরা হযরত আলীকে ছুরিকাঘাত করে তার সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে তাঁদের আটক করেন স্থানীয় লোকজন। পরে হযরত আলীকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। তার পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ১৭টি জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়। মূলত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়।</p> <p style="text-align:justify">এ ঘটনায় নিহতের ভাই শুক্কুর আলী বিয়ানীবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ১০ বছর পর বৃহস্পতিবার আদালত মামলার ৫ আসামির ফাঁসির রায় দিলেন। </p> <p style="text-align:justify">সুনামগঞ্জ সদর থানার জাহাঙ্গীর নগর গ্রামের বাসিন্দা হযরত আলী দীর্ঘদিন ধরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে বসবাস করছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) আবদুস সাত্তার, ‘এই রায় সিলেটের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিজ্ঞ আদালত যুক্তিতর্ক শেষে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরই এ রায় দিয়েছেন। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। ’</p> <p style="text-align:justify">বাদীপক্ষের আইনজীবী জায়েদা বেগম জানান, ‘মামলায় ১২ জনের সাক্ষ্য প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। নিহত হযরত আলীকে যখন ছুরিকাঘাত করে ফেলে যাওয়া হয় তখন স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন। সময় তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে যান। বিজ্ঞ আদালত যুক্তিতর্ক শেষে ৩০২/৩৪ ধারায় এ রায় দিয়েছেন। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।’</p>