<p style="text-align:justify">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাইকে চাকরি দিয়েছে দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।</p> <p style="text-align:justify">বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পক্ষে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মো. ইয়াসিন হোসেন পাভেল পীরগঞ্জের বাবনপুরে শহীদ আবু সাঈদের গ্রামের বাড়িতে তার দুই ভাই আবু হোসেন ও রমজান আলীর নিয়োগপত্র নিয়ে যান। এ সময় নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের হেড অব মার্কেটিং সালাউদ্দিন আহমেদ। এই নিয়োগপত্র গ্রহণ করেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন।</p> <p style="text-align:justify">বসুন্ধরা গ্রুপ শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন বাবা মকবুল হোসেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।</p> <p style="text-align:justify">শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমি আজ অনেক খুশি। আমার দুই ছেলেকে ওরা (বসুন্ধরা গ্রুপ) চাকরি দিছে। আল্লাহ ওমাক ভালো করুক, ওমার প্রতি রহম করুক। ওরা খুব ভালো মানুষ। আমার ছেলেক হারাইছি অনেক কষ্ট। কিন্তু ওরা দুই ছেলেকে বড় (ভালো) চাকরি দিছে, ওর মা (শহীদ আবু সাঈদের মা) খুব খুশি হইসে। আমরা ভালো থাকমো’।</p> <p style="text-align:justify">এ সময় শহীদ আবু সাঈদের বাবা গ্রুপের পরিচালক মো. ইয়াসিন হোসেন পাভেলকে জড়িয়ে কান্না করে বলেন, ‘বাবা, তোমরা আমার গ্রামটার জন্য কিছু করেন। এই গ্রামে অনেক গরিব মানুষ। শীতে তাদের কিছু কম্বল দিবেন।’ এ সময় পরিচালক পাভেল আসন্ন শীতে যত প্রয়োজন, তত কম্বল দেওয়ার ঘোষণা দেন।</p> <p style="text-align:justify">ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মো. ইয়াসিন হোসেন পাভেল বলেন, ‘আন্দোলনের শুরু থেকেই বসুন্ধরা গ্রুপ ছাত্রদের সহযোগিতা করে আসছে। আমরা সর্বপ্রথম অসুস্থদের সহযোগিতা, হাসপাতালে হাসপাতালে গিয়ে তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া এবং সহযোগিতা করে আসছি।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান স্যারের আকাঙ্ক্ষা ছিল যে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারকে সহযোগিতা করব। আমরা আজ তার দুই ভাইকে নিয়োগপত্র দিয়েছি। আমরা তাদের সঙ্গে নিয়ে রংপুর এলাকার মানুষের জন্য কাজ করব।’ পরে তিনি পরিবারে অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের খোঁজখবর নেন। যেকোনো সমস্যায় শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, ‘অনেকে আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু কেউ চাকরি দেয়নি। কিন্তু বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের চাকরি দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আজ তারা আমাদের দুই ভাইকে চাকরি দিছে। আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এই জন্য চেয়ারম্যান স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। আজ থেকে আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের সদস্য হয়ে গেলাম। আমরাও এখন বসুন্ধরার।’</p> <p style="text-align:justify">ছোট ভাই আবু হোসেন বলেন, ‘আমাদের চাকরি দিতে তারা আমাদের বাড়িতে এসেছেন, আমাদের খোঁজ নিয়েছেন এবং আমাদের বাবার হাতে আমাদের কর্মসংস্থানের কাগজ তুলে দিয়েছেন, আমরা খুশি। এ জন্য আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামটা কৃষিনির্ভর, আমি স্যারকে অনুরোধ করব যাতে চেয়ারম্যান স্যার আমাদের গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য ভালো কিছু করেন।’</p> <p style="text-align:justify">এ সময় শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম, বোন সুমি বেগমসহ প্রতিবশেী ও অন্য স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">শহীদ আবু সাঈদের স্বজন মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রথম বুকে পেতে দিয়ে শহীদ হয়েছেন আবু সাঈদ। বৈষম্যেও বিরুদ্ধে তার এই আত্মদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কিন্তু তার পরিবারটি অসচ্ছল-অভাবী। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা মনে করি, বসুন্ধরা অনেক ভালো একটি কাজ করেছে। এমন অসহায় পরিবারের প্রতি সহযোগিতা ও সহমর্মিতার হাত বাড়ানোয় আমরাও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’</p> <p style="text-align:justify">শহীদ আবু সাঈদের গ্রামে গিয়ে জানা যায়, বসুন্ধরা গ্রুপ শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সংকটের সময় পাশে দাঁড়ানোয় তারা অনেক খুশি। শহীদ আবু সাঈদ সংঘের সদস্য হাসান বলেন, ‘আমরা খুশি হয়েছি যে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারকে তারা এত ভালো চাকরি দিয়েছেন।’</p>