<p>ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ হতে অপহৃত আট মাসের শিশু সাইফানকে মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে র‌্যাব-১০। এ ঘটনায় র‌্যাব-৮-এর সহযোগিতায় শরীয়তপুর জেলার পালং এলাকা হতে তানজিলা আক্তার পারভীন নামের এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।</p> <p>সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১০) অধিনায়কের পক্ষে সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) তাপস কর্মকার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, অপহৃত শিশু সাইফানের মা সাকিলা এনাম, বাবা এনামুল হক মজুমদার দীর্ঘদিন ধরে তার তিন সন্তান নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন আগানগর এলাকায় ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করছেন। ১২ অক্টোবর সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ছয়টায় সাকিলার বাসায় এসে তার অসহায়ত্বের কথা বলে শুধু থাকা-খাওয়ার বিনিময়ে কাজ চান তানজিলা। অসহায়ত্বের কথা শুনে সরল বিশ্বাসে মানবিক দিক বিবেচনা করে তানজিলাকে তার বাসায় আশ্রয় দেন সাকিলা। তার পরেরদিন সকাল ১১টার দিকে সাকিলার মেজো ছেলে আহনাফ (৬) আইসক্রিম খাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করলে তাকে ও সাইফানকে নিয়ে আইসক্রিম আনার জন্য দোকানে যায় তানজিলা। তার কিছুক্ষণ পর আহনাফ আইসক্রিম নিয়ে একা বাসায় গেলে আহনাফের মা সাকিলা আহনাফকে জিজ্ঞাসা করেন, তানজিলা ও সাইফান কোথায়? আহনাফ তার মাকে জানায় যে পারভীন আহনাফকে আইসক্রিম কিনে দিয়ে বলেছে, তুমি বাসায় যাও। আমি সাইফানকে নিয়ে আসতেছি। সাকিলা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর তানজিলা ও সাইফানের কোন খোঁজখবর না পেয়ে আশপাশের সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে। কোথায় সাইফান ও পারভীনের সন্ধান না পেলে দিশেহারা হয়ে সাকিলা। পরবর্তীতে সাকিলা তার স্বামী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে ১৪ অক্টোবর ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় তানজিলা এবং অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন।</p> <p>তিনি আরো জানান, ‘র‍্যাব-১০-এর একটি অভিযানিক দল দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে  অপহৃত সাইফানকে দ্রুত উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় র‍্যাব-১০-এর অভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও র‌্যাব-০৮-এর সহায়তায় শরীয়তপুর জেলার পালং থানাধীন চর লক্ষ্মী নারায়ণ এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে অপহৃত শিশু সাইফানকে উদ্ধার করে অপহরণকারী তানজিলা আক্তার পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়।</p> <p>সন্তান পেয়ে সাকিলা এনাম বলেন, ‘আমি র‍্যাব-১০ এর জন্য আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করব। আমার অপহৃত সন্তানকে তারা দ্রুত উদ্ধার করে দিয়েছে। এটা র‍্যাব বলে সম্ভব হয়েছে।’</p> <p>জিজ্ঞাসাবাদে তানজিলা বলেন, তার স্বামী প্রবাসে থাকেন। তার কোনো সন্তান হয় না। প্রবাসী স্বামীকে জানিয়েছেন, তিনি অন্তঃসত্ত্বা। স্বামী বাড়ি আসার সময় হয়েছে। তাই একটি বাচ্চা না হলে তার সংসার টিকবে না বলে শিশুটিকে চুরি করেন তিনি।</p> <p>আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।</p>