<p>বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সুন্দরবনের ওপর দিয়ে ঝোড়ো বাতাস বইছে। বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারে প্রায় তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরছে। </p> <p>বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে সাগর মোহনায় সুন্দরবনের দুবলার চর এলাকার ওপর দিয়ে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। ঘূর্ণিঝড় দানা উপকূলে ধেয়ে আসার খবরে বাগেরহাটের নদীপারের মানুষের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাগেরহাটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাত কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জেলায় ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। </p> <p>বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জানায়, ঘূর্ণিঝড় দানা উপকূলের দিকে ধেয়ে আসার খবরে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বিশেষ করে দিনমজুর আর স্বল্প আয়ের মানুষ বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগে পড়েছে।</p> <p>সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলার চর জেলেপল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে সুন্দরবনের দুবলার চর এলাকার ওপর দিয়ে প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। চারদিক থেকে ঝোড়ো বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ আসছে। সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারে প্রায় ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।</p> <p>সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির জানান, বন বিভাগের নৌযান ও অস্ত্র নিরাপদে রাখা হয়েছে। সুন্দরবনের ওপর দিয়ে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে।</p> <p>বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুণী জানান, জেলায় মোট ৩৩৮ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে সাত কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া মোরেলগঞ্জের দৈবজ্ঞহাটি এলাকায় ২০ কিলোমিটার বাঁধের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩.৮-৪ মিটার। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইন অনুযায়ী বাঁধের উচ্চতা ৪.৭ মিটার হতে হবে। জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেলে ওই সব এলাকায় বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।</p> <p>বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান জানান, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলায় ৩৫৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্যোগকালীন সময়ে দুই লাখ ছয় হাজার ৬৫১ জন দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। সেই সঙ্গে মানুষ তাদের গবাদি পশুও আশ্রয়কেন্দ্র নিয়ে আসতে পারবে। জেলাব্যাপী সিপিপি ও স্বেচ্ছাসেবক মিলে তিন হাজার ৫০৫ জন সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলায় ৮৪টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।</p>