<p>কৌশলে জমি দখল আর এলাকায় মাদক কারবারির সম্রাজ্য গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মফিজুল হকের বিরুদ্ধে। পেশায় নিজেকে তিনি পরিচয় দেন জমি কেনা-বেচার দালাল ও ব্যবসায়ী হিসেবে।</p> <p>স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার যেকোনো জমি সমস্যা দেখা দিলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের গডফাদারদের প্রভাব খাটিয়ে ওই জমির বায়নামা সূত্রে মালিক বনে যান মফিজুল। এরপর এলাকার সন্ত্রাসী, বখাটেদের দিয়ে সেখানে অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে তুলে ও মাদক সেবীদের নিরাপদ আস্তানা বানিয়ে ফেলেন তিনি। এলাকার উঠতি বয়সের যুবকদের হাতে মাদক তুলে দেন বিভিন্ন মাদক দ্রব্য।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে রাজধানীতে ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/28/1730092538-7151184986aed9f8f418938930271d37.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে রাজধানীতে ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/dhaka/2024/10/28/1440006" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সম্প্রতি সদর উপজেলার আরাজি সিংপাড়া ১৪ হাত কালিতলা এলাকায় এমন একটি আস্তানায় গোপন ক্যামেরা বসালে তাতে মাদকের রমরমা কারবার ও মাদকসেবীদের নিরাপদ আস্তানার চিত্রের সত্যতা উঠে আসে। এরপর টের পেয়ে ওই আস্তানায় মাদক কারবার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন মফিজুল হক। স্থানীয়রা ওই ইউপি সদস্যের এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন হুমকি ও প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। প্রশাসন বলছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p> <p>কালিতলা এলাকার বাসিন্দা বদিউল ইসলাম বলেন, ‘ইউপি সদস্য মফিজুল আওয়ামী লীগের প্রভাব ও ক্ষমতায় দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জমি দখলসহ স্থানীয় যুবকদের দ্বারা মাদক কারবার করে আসছেন। এলাকার অনেক যুবককে মফিজুল মাদকসেবী বানিয়েছেন। এই যুবকরাই মাদকাসক্ত হয়ে এলাকায় চুরি ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়। তাদের অত্যাচারে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ।’</p> <p>একই এলাকার বাসিন্দা ও কালি মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুবাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘মফিজুল কালি মন্দিরের জমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (দোকানঘর) করেছেন। মন্দিরের রেকর্ডিয় জমি হলো দেবত্ব সম্পত্তি যা তিনি জোড়পূর্বক দখল করে ভোগ দখল করছেন। মন্দিরের জমি মন্দিরকে ফেরত দিতে তাকে বহুবার অনুরোধ করা হয়েছে, কিন্তু তিনি উল্টো বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছেন।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পদ্মায় জেলেদের হামলায় ২ পু‌লিশ সদস্য নি‌খোঁজ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/28/1730102981-9bf4989c13221da464270f151d4201b2.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পদ্মায় জেলেদের হামলায় ২ পু‌লিশ সদস্য নি‌খোঁজ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/28/1440043" target="_blank"> </a></div> </div> <p>একই এলাকার ফজলুর রহমান ও দুলাল জানান, জেলা যুবলীগের সভাপতি আপেলের ডান হাত ইউপি সদস্য মফিজুল। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে মফিজুল এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। এই সন্ত্রাসীরা সাধারণ মানুষের জমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। তার ভয়ে এলাকার মানুষ কোনো প্রতিবাদ করে না। কেউ তার বিরুদ্ধে গেলে বা তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোসহ মারধর করা হয়। প্রশাসন যেন মফিজুলের সব অন্যায়ের বিচার করেন এবং তাকে আইনের আওতায় আনেন সেই অনুরোধ জানান এলাকাবাসী।</p> <p>ইউপি সদস্য মফিজুল হক তার বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও তার অস্থায়ী ঘরে মাদক সেবন করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, তিনি জমি কেনা-বেচার অর্থাৎ দালালী ব্যবসার করে থাকেন। তার সুনাম নষ্ট করতে এলাকার বিপক্ষ একটি শক্তি অপপ্রচার চালাচ্ছে। তার দুই ভাই বিদেশে থাকে এবং এজন্যই তিনি অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা স্বাবলম্বী। তিনি কোনো মাদকের সঙ্গে যুক্ত নন। কিছুদিন পূর্বে একটি অস্থায়ী ঘর তুলেছিলেন, সেখানে অপরিচিত কেউ মাদক সেবন করছিল এমন খবর পাওয়ার পর তিনি ওই ঘরটির ঘেরা খুলে ফেলেন। জমি দখল ও সন্ত্রাস তিনি নন, বরং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তিনি। যুবলীগ সভাপতির সঙ্গে তার পরিচিতি ছিল কিন্তু তিনি নিজে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নন।</p> <p>ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, প্রমাণিত হলে তার পদ থেকে অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>