<p>মোছাম্মৎ আনোয়রা খাতুন (৬০)। ভিটেমাটি কিছুই নেই। স্বামী নিয়ে নিঃসন্তান আনোয়ারা থাকতেন সরকারের দেওয়া আশ্রয়ণের ঘরে। স্বামীর বয়স্ক ভাতা দিয়েই দুজনের জীবন চলে যাচ্ছিল। প্রায় দুই বছর আগে হঠাৎ স্বামী মারা গেলে বেকায়দায় পড়েন তিনি। পরের মাস থেকেই বন্ধ হয়ে যায় স্বামীর ভাতা। আর এই কার্ডটি নিয়ে যান স্থানীয় মেম্বার। এ অবস্থায় জীবন চালাতে ভিক্ষার পথ বেছে নেন তিনি।</p> <p>আনোয়ারার বাড়ি ছিল নান্দাইল উপজেলার নান্দাইল ইউনিয়নের ভাটিসাভার গ্রামে। শুধু এক টুকরা ভিটে ছিল। সেখানেই দুজন বসবাস করতেন। হঠাৎ স্বামী ছোবেদ আলী ফকির এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে সেই এক টুকরো ভিটা বিক্রি করে দেন। এরপরই সহায়সম্বলহীন দম্পতি পাড়ার সমাজপতিদের বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলেন। পরে সরকারের দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পান। সেখানেই বসবাস করতে থাকেন।</p> <p>উপজেলার চণ্ডীপাশা নতুন বাজারে দেখা হয় আনোয়ারার সঙ্গে। তিনি ভিক্ষা করছিলেন। ভিক্ষা করছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাবা আমি ভিক্ষার মানুষ না। অভাবে পইর‌্যা এই কাম করতাছি। আগে হেইল্যা (স্বামী) আছিন, তার ভাতার টেহা দিয়া কোনো মতে চলতাম। ভালা-মন্দ খাইতাম, অহন তো খাওনেরও জোগাড় নাই। হেইল্যা (স্বামী) মইর‌্যা যাওনের পর আমার কাছতে হেইল্যার কাডটা নিছেগা। এরপর আর টেহা পাই না। আমি অনেক কইছি আমারে বিধবার কাড কইর‌্যা দিত। কিন্তু আরেকজনরে দিয়া দিছে। অহন আমি কিবায় চলি? জীবন বাঁচাইতে ভিক্ষা করতাছি। শইল্যে আর কোলায় না-এর চেয়ে মইর‌্যা গেলে ভালা অইতো।’</p> <p>এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মো. বাবুল মিয়া জানান, আনোয়ারার স্বামী মারা গেলে তাকে বলা হয়েছিল পরিষদে এসে বিধবার কার্ডের জন্য আবেদন করতে। কিন্তু তিনি তা করেননি।</p> <p>নান্দাইল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইনসান আলী জানান, ওই নারীর খোঁজ নিয়ে দ্রুত একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।</p>