<p>বগুড়ার শেরপুরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) পর্যন্ত ৫৩ জন রোগীর সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সাতজন। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য একজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি এই উপজেলায় ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশার অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে সবাই আতঙ্কে রয়েছে।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মশার উপদ্রবে উপজেলাবাসীর জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বাসা-বাড়ি থেকে অফিস আদালত সব জায়গায় মশা বেড়েছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের অবস্থা একেবারেই নাজেহাল। শুধু সন্ধ্যায় বা রাতে নয়, দিনের বেলায়ও মশার উৎপাত চলছে সমান তালে। এর সঙ্গে এই উপজেলায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আক্রান্তর মধ্যে মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও শঙ্কায় রয়েছেন রোগীর স্বজনরা। সেইসঙ্গে স্কুল-মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেনে পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা।</p> <p>সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন, নালা-নর্দমায় মশার লার্ভা কিলবিল করছে। এসব স্থান যেন এডিস মশার প্রজননস্থল হয়ে উঠেছে। </p> <p>স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। মশারি, কয়েল ও ইলেকট্রিক ব্যাট ব্যবহার করেও এই প্রাণঘাতী পতঙ্গের কামড় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছি না। মশার উৎপাত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। </p> <p>গৃহিণী সাথী আক্তার বলেন, মশার কারণে রাতে বাসায় সন্তানদের লেখাপড়া করাতে ঝামেলায় পড়ি। আর দিনের বেলার বিড়ম্বনা হলো রাস্তায় ফেলে রাখা বর্জ্যের উৎকট গন্ধ। পৌরসভার ডাস্টবিনের এমন অবস্থা যে সেটা যেন এডির মশার আবাসস্থল হয়ে উঠেছে।</p> <p>শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, মশার কামড়ে মানুষ অ্যানোফিলিস, ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। তাদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকা প্রয়োজন। </p> <p>এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, সারা দেশের ন্যায় এই উপজেলায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার পর্যন্ত এই উপজেলায় ৫৩ জন ব্যক্তি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগীগুলোর সবাইকে আমরা আমাদের হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দিয়েছি। তবে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর সাতজন রোগী বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে। বাকিরা সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। </p> <p>তিনি আরো বলেন, এই উপজেলায় এডিস মশার অস্তিত্ব মিলেছে। তাই সবার মাঝে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বাড়িঘর ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বলেন। পাশাপাশি ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশা থেকে রক্ষা পেতে মশারি টানিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দেন তিনি।</p>