<p>বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ১৫ ঘণ্টা ধরে অবরোধ করে রেখেছে। বেতন পরিশোধ ছাড়া মহাসড়ক চালু হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে না পুলিশ।</p> <p>শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা। রাত ১১টা ১৫ মিনিটে গাজীপুর শিল্প পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, এখনো মহাসড়কে অবরোধ চলছে। বেতন ছাড়া শ্রমিকেরা মহাসড়ক ছাড়বে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।</p> <p>জানা যায়, ১৫ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ থাকায় দীর্ঘ যানজট অনেক দূর পর্যন্ত চলে গেছে। সালনা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত মহাসড়ক বন্ধ থাকায় বিকল্প পথে চলছে গণপরিবহন। তবে যানজটে আটকাপড়া পরিবহনের যাত্রীরা সীমাহীন কষ্ট ও ভোগান্তিতে পড়েছেন।</p> <p>জানা গেছে, গাজীপুরে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে মহানগরীর বাসন এলাকায় টি অ্যান্ড জেড অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার পাঁচ কারখানা শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে। এতে সালনা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত অন্তত ১০ কিলোমিটার সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে।</p> <p>কারখানাগুলো হলো- টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেসিক ক্লোথিং লিমিটেড, অ্যাপারেলস প্লাস ইকো, বেসিক নীটওয়্যার লিমিটেড, আপারেল আর্ট লিমিটেড।</p> <p>সরেজমিনে দেখা গেছে, গাজীপুর নগরের সালনা থেকে চান্দনা চৌরাস্তা ও ভোগরা বাইপাস হয়ে টঙ্গী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট। বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা হেঁটে হেঁটে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন। বয়স্ক, শিশু এবং নারীরা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে। যাদের সঙ্গে রয়েছেন বড় ব্যাগ-পোটলা-বস্তা তাদেরকেও বেশ কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। ছোট ছোট যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল, রিকশা, ইজিবাইক যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা লাঠিসোটা নিয়ে তেড়ে আসছেন।</p> <p>আন্দোলরত শ্রমিকরা জানায়, গত তিন মাস ধরে বেতন পাইনি, এক টাকাও নাই। বাড়ি ভাড়া দেওয়ার সময় হয়েছে মালিক চাপ দিচ্ছে। এখন বাড়ি ভাড়া দেব কিভাবে এই চিন্তায় মাথায় বাজ পড়েছে। আমরা যদি আন্দোলন না করি তাহলে মালিক আমাদের কথা কিভাবে শুনবে? কিছুদিন ধরে বলতেছে বেতন দেবে কিন্তু এখন পর্যন্ত এক টাকাও দেয়নি।</p> <p>ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে চলাচলকারী অনন্যা পরিবহনের বাস চালক সাইদুল ইসলাম বলেন, চার ঘণ্টা ধরে যানজটে বসে আছি কি কারণে কিছুই বুঝতে পারছি না। শুনলাম সামনে আন্দোলন চলছে শ্রমিকদের। বাসের যাত্রী সব নেমে গেছে আমাদের গাড়ি কখন ছাড়বে জানি না।</p> <p>ইউনাইটেড বাসের ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ মোহাম্মদ কামাল বলেন, আমি ময়মনসিংহ থেকে ছেলের বাসায় যাত্রাবাড়ীতে যাব। তবে ৪ ঘণ্টা ধরে জ্যামে বসে আছি আমার শরীর অনেক খারাপ। আমি কিডনি ও হার্টের রোগী। যেকোনো সময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে পারি। তারা আন্দোলন করছে আমাদের ভোগান্তি দিয়ে। মানুষের কষ্ট যদি না বুঝে তাহলে তারা কিসের শ্রমিক।</p> <p>চান্দনা চৌরাস্তায় ভিআইপি পরিবহনের চালক রায়হান মিয়া বলেন, দুপুর ১টা থেকে যাত্রী নিয়ে বসে আছি। </p> <p>শ্রমিকদের অভিযোগ, গত এপ্রিল মাস থেকে কারখানা বন্ধ ছিল। সেপ্টেম্বরে কারখানা খুললেও দুই মাসের বেতন না দিয়ে কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বারবার বেতন পরিশোধের তারিখ দেওয়া হলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধ করতে হয়েছে।</p>