<p>মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কাওছার জামান বাবলা। বুধবার (২০ নভেম্বর) নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন তিনি।</p> <p>বাবলা বলেন, ১৩ নভেম্বর বিএনপি কর্মী মামুনুর রশীদ মামুন বাদী হয়ে ১৮১ জনের নামে মামলা করেন। আওয়ামী লীগ ছাড়া নিরীহ, নিরপরাধ মানুষসহ রংপুর ও পার্শ্ববর্তী জেলার বাসিন্দাদের মামলার আসামি করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে মামুন জানান, তিনি ২৫ জনের নাম দিলেও সামু অন্যদের আসামি করে এজাহারে সই করাতে বাধ্য করেন। এ কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। মামলা বাণিজ্যসহ নিরীহ ব্যক্তিদের হয়রানি করার প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে মেতে ওঠেন সামু। </p> <p>তিনি আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালানো রংপুরের একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে মামলা অব্যাহতি দেওয়ার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা চাঁদাবাজি করেছেন সামু। দলের স্বার্থে এসবের প্রতিবাদ করায় বিভিন্নভাবে আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন তিনি । এ ব্যাপারে মাহিগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেছেন বলে জানান বাবলা।</p> <p>১৮ নভেম্বর মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাবলার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন সামু। সেই সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের লোকজনদের স্থান করে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।</p> <p>সামু বলেন, রংপুরের একটি মহল বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্টের গভীর ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা একটি চক্র জনসম্মুখে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী দোসরদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন জনকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের নামে তা চালিয়ে দেওয়ার কূটকৌশল করছে। এই মহলটি দলীয় পদ-পদবির নাম ভাঙিয়ে বিভিন্নভাবে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছে। কিন্তু তারা খুনি হাসিনা হটাও আন্দোলনে কোনো মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নেয়নি। বরং তারা আন্দোলনকে ব্যাহত করতে নানা প্রকার প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছে।</p> <p>মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদ ও মামলা বাণিজ্যের হোতাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ১৯ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচবারের নির্বাচিত সাবেক কাউন্সিলর নুরুন্নবী ফুলু।</p> <p>মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহারসহ সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক মামলা বাণিজ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ফুলু বলেন, 'আমি কখনও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না বর্তমানেও নেই। মামলার বাদী মামুনুর রশীদ মামুনকে আমি চিনি না। তিনি আমাকে চেনেন না। শুধু হয়রানি ও বাণিজ্যের জন্য আমাকে আসামি করা হয়েছে। আমাকে মামলায় জড়ানোর ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।</p> <p>রংপুরে নিহত-আহতদের পক্ষে মামলা নিয়ে বিএনপির মধ্যেই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন নিয়ে দলের মধ্যে অন্তর্কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী।</p>