<p>শীত আসতেই ঢাকার কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস বা পোশাক পল্লীতে শীতবস্ত্রের পাইকারি বাজারে শীতবস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কারিগর ও ব্যবসায়ীরা। এখান থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন রং ও নকশার বিপুল পরিমাণ শীতবস্ত্র রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের অভিজাত বিপণি বিতান ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ দোকানগুলোতে সরবরাহ হচ্ছে।</p> <p>স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, কেরানীগঞ্জে তৈরি শীতবস্ত্রের গুণগত মান ও দাম দুটোই ভালো হওয়ায় সারা দেশ থেকে পাইকারি ক্রেতারা ছুটে আসছেন। তারা জানান- এখানে বছরজুড়েই নানা ধরনের পোশাকের ব্যবসা চললেও বিশেষ করে শীতকাল, দুই ঈদ ও দুর্গাপূজার সময়েই বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী এই শীতে এখানকার প্রায় ১০ হাজার পাইকারি দোকানে হাজার কোটি টাকার শীতবস্ত্র বিক্রি হবে বলে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন।</p> <p>শনিবার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লী, কালীগঞ্জ ও পূর্ব আগানগর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কারখানায় শ্রমিক-কারিগররা এবং দোকানের মালিক-বিক্রয়কর্মীরা শীতের পোশাক তৈরি ও বিক্রির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।</p> <p>দেশের নানা অঞ্চল থেকে আসা পাইকাররা কেরানীগঞ্জের তৈরি পোশাকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। টাঙ্গাইল  রোটিয়া বাজার এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী মো. শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি প্রতিবছরই ঈদ, পূজা ও শীত মৌসুমে কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লী থেকে পাইকারি দরে পোশাক কিনে নেন। এর বড় কারণ হলো- এখানে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সব বয়সের মানুষের শীতের পোশাক পাওয়া যায়।</p> <p>বরিশাল থেকে আসা নিজাম হাওলাদার বলেন, ‘প্রতিবছর শীত মৌসুমে এখানে পোশাক কিনতে আসি। এখানকার শীতবস্ত্র দামে কম। আবার তৈরিও হয় বিদেশি পোশাকের আদলে। যার কারণে আমাদের এলাকায় এখানকার পোশাকের চাহিদা প্রচুর।</p> <p>রংপুর সদর থেকে আসা ব্যবসায়ী মো. রশীদ মিয়া জানান, আমাদের উত্তরঞ্চলে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতের কাপড় কেনাকাটার ধুম লেগেছে। আমি গত সপ্তাহে এক লট মাল নিয়েছি তা শেষ হয়ে গেছে। আজ আরো বেশি করে নিতে আসছি। কেরানীগঞ্জের তৈরি মাল দেখতে যেমন সুন্দর হয় পরতে তেমনই আরামদায়ক এবং দাম কম থাকায় আমরা ব্যবসায়ীরা যেমন এখান থেকে তৈরি পোশাক ক্রয় করে  আনন্দ পাই, বিক্রি করেও আনন্দ পাই।</p> <p>বিগ ব্রাদার ফ্যাসন হাউজের মালিক হাজি শওকত হোসেন বলেন, ‘মূলত শীতকাল ও ঈদ উৎসবই আমাদের সবচেয়ে বড় মৌসুম। এবারে শীত একটু দেরিতে আসায় বাজার জমতেও দেরি হয়েছে। তারপরও আশা করছি যদি বাজার ভালো হয় তাহলে আমাদের ব্যবসাও ভালো হবে। এ বছর আমাদের খুয়াসা জ্যাকেট, জিন্স লেডিস জ্যাকেট ও জিন্স শার্ট বেশি চলছে।</p> <p>খাজা মার্কেটের শামীম মোল্লা বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে যেকোনো রুচিশীল তৈরি পোশাক অত্যন্ত সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। তাই পাইকারদের বিভিন্ন পণ্যের জন্য তেমন ঘোরাঘুরি করতে হয় না। এ ছাড়া রাজধানীর মতো এখানে যানজটও নেই। ফলে কেনাকাটা করে পাইকাররা সহজেই নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরতে পারেন। এসব কারণে ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাইকারদের কাছে দিন দিন আমাদের তৈরি পোশাকের কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করছি বাজার ভালো থাকলে এ বছর হাজার কোটি টাকা ব্যবসা হবে কেরানীগঞ্জের এই গার্মেন্টস পল্লীতে।</p>