<p>এই যুবকের কাজই সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়। সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড তো রয়েছেই। এসব কাজ পরিচালনায় এলাকার কয়েকজন যুবককে নিয়ে সংগঠন করা হয়েছে। তাদের এসব কাজে যারাই প্রতিবাদ করেন, তাদের ওপর চালানো হয় অত্যাচার-নির্যাতন। তুচ্ছ ঘটনায় পিস্তল প্রদর্শন ছাড়াও কোপানো হয় রামদা দিয়ে। এর মধ্যে দু'-একটি ঘটনায় মামলা হলেও  জামিনে এসে অনেকেই কুপিয়ে জখম করেছেন। এসব অভিযোগ ময়মনসিংহের নান্দাইলের চন্ডীপাশা ইউনিয়নের ধুরুয়া গ্রামের ওয়াহিদুজ্জামান তানভীরের (২২) বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীরা ছাড়াও চার গ্রামের মানুষ বুধবার (২০ নভেম্বর) তার বিচারের দাবি করে সংবাদ সম্মেলন, মাননবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।</p> <p>থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, তানভীর অজ্ঞানপার্টি চক্রের দলনেতা। তা ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে তিনি তার দলবল নিয়ে ভাড়ায় যান। গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের কয়েকদিন আগে একটি পিস্তলসহ পুলিশ তানভীরকে গ্রেপ্তার করে এক প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস থেকে। পরে মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরে জামিনে এসে ফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড  শুরু করেছেন। এ অবস্থায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর যৌথবাহিনীর হাতে তানভীর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে গ্রামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শুরু করেন। কুপিয়ে জখম করেন কমপক্ষে চারজনকে। </p> <p>এই যুবকের অত্যাচারের প্রতিবাদে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ধুরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের পাশে খোলা জায়গায় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে চার গ্রামের লোকজন। ওই সংবাদ সম্মেলনে এলাকার ইউপি সদস্য মাহফুজুল বারীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এইচ এম মিজান। লিখিত বক্তব্যে তানভীরকে সন্ত্রাসী উল্লেখ করে বলা হয়, তিনি গ্রামে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। তার হাতে মারধরের শিকার হয়ে পঙ্গু হয়েছেন পাশের চণ্ডিপাশা গ্রামের চা-দোকানি মো. জুয়েল মিয়া (৩৩)। সংবাদ সম্মেলনে জুয়েল বলেন, ধুরুয়া গ্রামের সড়ক দিয়ে বাড়ি যাবার কারণে তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। তিনি এখনও সুস্থ হননি। পঙ্গু শরীর নিয়ে ব্যবসা চালাতে পারছেন না। মামলাও করতে পারেননি। </p> <p>এ ছাড়া তানভীরের মারধরে কাটলীপাড়া গ্রামের সুজন সরকার, রসুলপুর গ্রামের হেলাল মিয়া ও আবদুল হেলিম, ধুরুয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম, আজিজুল হক, নজরুল ইসলাম আহত হয়েছেন। </p> <p>আহতরা অভিযোগ করে বলেন, মারধরের কোনো বিচার না পেলেও গত ১৩ নভেম্বর ধুরুয়া গ্রামের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন তানভীর। মামলায় এমন ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে যারা ঘটনার সময় এলাকায় ছিলেন না। সাংবাদিক ইলিয়াছ উদ্দিন ফকির জানান, তার ছেলে প্রকৌশলী ফকির গোলাম রব্বানী ঢাকায় অবস্থান করলেও তাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। </p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আদালতে দায়ের করা মামলাটি ময়মনসিংহের অপরাধ তদন্ত সংস্থা (সিআইডি) তদন্ত করছে।</p> <p>এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ধুরুয়া গ্রামে অবস্থিত বাড়িতে গিয়ে তানভীরকে পাওয়া যায়নি। তবে নান্দাইল থানার ওসি ফরিদ আহম্মেদ জানান, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এখন তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা হচ্ছে। সে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী।</p>