<p style="text-align:justify">রংপুর সেটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণের পর জরুরি সেবা পেতে চরম ভোগান্তি পেতে হচ্ছে নগরবাসীকে। দিনের পর দিন ঘুরেও কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ায় গোসা হচ্ছেন অনেকে। ক্ষোভ বাড়ছে নাগরিক সেবা পেতে আসা মানুষজনের।</p> <p style="text-align:justify">সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশাল জনসংখ্যার বিপরীতে প্রশাসনিক বাড়তি দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছে তারা। এদিকে, প্রশাসনিক কাজের বাইরে সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই কর্মকর্তা বাড়তি চাপ সামলাতে না পেরে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। </p> <p style="text-align:justify">অব্যাহতি পাওয়া কাউন্সিলরা বলছেন, সরকার চাইলে সরকারের সব শর্ত মেনে সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তারা।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর সরকার রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ও ৩৩টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপর থেকেই জন্মসনদ, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন, ওয়ারিশান সনদ, নাগরিকত্বসহ জরুরি সেবা পেতে দিনের পর দিন ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরবাসী।</p> <p style="text-align:justify">সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিনই অসংখ্য সেবা প্রত্যাশী ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসগুলোতে ভিড় করছেন, ভিড় করছেন নগর ভবনেও। অনলাইন অফলাইনে আবেদন করার পর নির্দিষ্ট তারিখে প্রয়োজনীয় কাগজ পাচ্ছেন না তারা। বিশেষ করে, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সরকারি স্কুল তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদনে জন্মসনদ জরুরি হয়ে পড়ছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে এই সনদ না পেলে অনেক অভিভাবকই আবেদন করতে পারবেন না। </p> <p style="text-align:justify">নগর ভবন সূত্রে জানা যায়, জন্মসনদ, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন, ওয়ারিশান সনদ, নাগরিকত্ব পেতে কয়েক শ' আবেদন করলেও মাত্র দুই'শ আবেদন জমা নিচ্ছে।  অন্যসব ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বাড়তি চাপে ব্যাপক হিমশিম খাচ্ছেন নগরভবনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা।</p> <p style="text-align:justify">এদিকে, সরকারি কাজের বাইরে বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব থাকা দুই কর্মকর্তা বিটিসিএলের জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল মালেক ও এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিসুল ওহাব খান স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন।</p> <p style="text-align:justify">নগরীর গুড়াতিপাড়ার বাসিন্দা ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ছেলের স্কুল ভর্তিতে জন্ম সনদ প্রয়োজন। গত সাত দিন ধরে কখনো নগর ভবন, আবার কখনো স্থানীয় কাউন্সিলর অফিসে আসা যাওয়া করছি, কিন্তু সমাধান হচ্ছে না। জন্ম সনদ না পেলে তো বাচ্চার স্কুলে আবেদন করাতে পারবো না। </p> <p style="text-align:justify">নগরীর আদর্শপাড়ার বাসিন্দা মোখলেসুর রহমান বলেন, আমার স্ত্রীর মৃত্যু সনদ নেয়ার জন্য দেড়মাস ধরে ঘুরছি, কিন্তু পাচ্ছি না। এই কাগজ সেই কাগজ চাচ্ছে তারা। এতো হয়রানি ভালো লাগে না।</p> <p style="text-align:justify">সিটির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাহমুদুর রহমান টিটু বলেন, আমাদের কাছে সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন লোকজন আসছেন। কিন্তু আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারছি না। তিনি বলেন, আমরা যাদের চিনি, জানি তাদের দেখেই নাগরিকত্ব, ওয়ারিশ সনদ এবং জন্মসনদ দিয়ে দিতাম। এখন সরকারি কর্মকর্তারা তো চিনেন না, তাই সমস্যা হচ্ছে। এতে মানুষজন হয়রানিতে পড়ছেন।</p> <p style="text-align:justify">নগর ভবনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমা বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আমরা এগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।</p> <p style="text-align:justify">সুজন রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ২০৩ বর্গ কিলোমিটারের এই নগরীতে প্রায় ১০ লাখ লোকের বসবাস। দীর্ঘমেয়াদি এমন দুর্ভোগে পড়লে সরকারের ভালো দিকগুলোতে প্রভাব পড়বে। নাগরিক ভোগান্তি রোধে এসব বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।</p>