<p style="text-align:justify">কলেজ শিক্ষার্থী তামিম হোসাইন একসময় পাড়ার মাঠে ব্যাট-বল হাতে ছুটে বেড়াতেন। তিনি এখন বিছানা আর বাড়ির আঙিনায় ছটফট করে দিন কাটাচ্ছেন। একসময়ে তার দু’চোখ ভরা ছিল স্বপ্ন। এখন সে দু’চোখে অনিশ্চয়তা আর দুশ্চিন্তার কালো ঘোর। তামিম হোসাইনের বয়স মাত্র ২৩ বছর। এ বয়সে জীবনের ক্যানভাস থাকার কথা ছিল বণির্ল। কিন্তু তা আজ ফ্যাকাসে, বিবর্ণ।</p> <p style="text-align:justify">তামিম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। পুলিশের ছোড়া গুলিতে তার বাঁ হাত এখন সারা জীবনের জন্য অকেজো হওয়ার পথে। ফলে পড়াশোনা শেষ করে ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন তার দুঃস্বপ্নে রূপ নিয়েছে। তামিমের বাঁ হাতের রগ আর হাড়ের ভেতরে এখনো রয়ে গেছে গুলি। ফলে উন্নত চিকিৎসা না পেলে চিরদিনের জন্য বাঁ হাত অকেজো হয়ে যেত পারে বলে আশঙ্কা করেছেন ডাক্তাররা। আহতের পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই সকাল ১১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল মাদারীপুর পৌর শহরের লেকপাড়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732257531-a715a9dfd22ee99214bbaa5d95eb4bab.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/22/1449394" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">একদিকে শিক্ষার্থী, অন্যদিকে তৎকালীন সরকার সমর্থিত ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ বাহিনী। তিন ঘণ্টাব্যাপী চলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়লে পুলিশ ব্যাপকভাবে গুলি ছুড়তে থাকে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এদের মধ্যে মাদারীপুর সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ডিগ্রি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তামিম হোসাইনের শরীরের একাধিক জায়গায় গুলি লাগে। আহত তামিমকে সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরের দিন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার তিন দিন পর ঢাকার সিএমএইচে পাঠানো হয়।</p> <p style="text-align:justify">সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন তামিম। তবে তার বাঁ হাতের তালুর রগ আর একটি আঙুলের গুলি বের করা যায়নি। তার বাম হাতটি বলতে গেলে অকেজো হওয়ার পথে। আর্থিক সমস্যার কারণে উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছে না পরিবারটি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="৫৬ তরুণ-তরুণী পুলিশে চাকরি পেলেন টাকা ছাড়াই" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732256582-873d338051c80727f1bcbb1b2903afdd.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>৫৬ তরুণ-তরুণী পুলিশে চাকরি পেলেন টাকা ছাড়াই</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/22/1449391" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">আহত তামিমের মা মোসাম্মৎ নাজমা বেগম বলেন, ‘সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা চলে তামিমের। কিন্তু বাঁ হাতের রগে গুলি থাকায় হাতটি অকেজো হওয়ার পথে। এরই মধ্যে কয়েকটি সংগঠন থেকে কিছু সহযোগিতা করা হয়েছে। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। শুনেছি, সরকারিভাবে চিকিৎসা করা হবে। কিন্তু তার কোনো প্রতিফলন দেখছি না। আমাদের তেমন আর্থিক সচ্ছলতা নেই। সরকারি সাহায্য খুব দরকার।’</p> <p style="text-align:justify">তামিমের স্বপ্ন ছিল ব্যাংকার হওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্নে বাধ সেজেছে বাঁ হাতের অক্ষমতা। তামিমের বাবা মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের বাহেরান্দী গ্রামের মো. আনোয়ার মাতুব্বর। তিনি ঢাকায় বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করেন। আনোয়ার মাতুব্বরের দুই মেয়ে আর একমাত্র ছেলে তামিম।</p> <p style="text-align:justify">সামান্য আয়ে চলছিল তাদের সংসার। আনোয়ার মাতুব্বরের পক্ষে ছেলের উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব না। বর্তমানে তামিমের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন অন্তত ১০ লাখের বেশি টাকা। তাই এ স্বপ্নবাজ তরুণের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর দাবি আহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর।</p> <p style="text-align:justify">আর উদীয়মান তরুণ তামিমের দাবি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জীবনের মায়া ত্যাগ করে যারা গুলির সামনে নিজেদের বুক উঁচিয়ে কেউ শহীদ আবার কেউ বা আহত হয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার জন্য সরকারের এগিয়ে আসা। ‘না হলে অধরাই থেকে যাবে আমাদের স্বপ্ন’- উল্লেখ করেন তামিম।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে বন্দুক হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732255925-7151184986aed9f8f418938930271d37.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে বন্দুক হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/11/22/1449389" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এদিকে জেলা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, যারা সত্যিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের সহযোগিতা করা হবে। যদি কেউ আইনগত ব্যবস্থা নিতে চায়, সে ক্ষেত্রেও পুলিশ প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর কোনো পুলিশ সরাসরি দায়ী হলে তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।</p>