<p>ইট পোড়ানোর মৌসুমে সতর্ক থাকতে হয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। প্রায় সময়ই বাতাসে ভেসে আসে ধুলা আর ধোঁয়া। আর তখনই স্কুলের দরজা-জানালা বন্ধ করে দিতে হয়। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তিতে ফেলেছে পাশেই গড়ে ওঠা এক ইটের ভাটা। শুধু শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই নয়, আশপাশের বাড়িতে বসবাসরত মানুষদেরও একই সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।</p> <p>শিক্ষকদের অভিযোগ, স্কুলের সীমানার খুব কাছেই গড়ে তোলা হয়েছে ভাটাটি। যেখানে মৌসুমে বিভিন্ন জাতের কাঠ পুড়িয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এই ভাটার কালো ধোঁয়া আর উড়ে আসা বালি বিদ্যালয় ভবনে প্রবেশ করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। এতে প্রায় সময় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।</p> <p>ভাটার পাশে বসবাসরত বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাটা চালু হলে ঘরবাড়িতে ধুলা-বালির স্তূপ পড়ে যায়। বাড়ির উঠান, বারান্দা, ঘরের ভেতর পর্যন্ত চলে যায় ধুলা-বালি। তাতে অসুবিধায় পড়তে হয় তাদের। এমনকি ধুলা-বালির কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই।</p> <p>ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) ২০১৯ অনুযায়ী, বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ইটভাটার দূষণ: আশপাশে বসবাসকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সিদ্ধান্ত" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/03/20/1710934498-5b8225163883ea35d58a1687bd90c623.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ইটভাটার দূষণ: আশপাশে বসবাসকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সিদ্ধান্ত</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/03/20/1373145" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এলাকাবাসী বলছেন, চার বছর আগে হঠাৎ ইটভাটার কাজ শুরু হয়। শৈলকুপা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম হোসেন মোল্লা স্থানীয় মিজানুর রহমান মধুর সঙ্গে অংশীদারিত্বে ইটভাটাটি প্রতিষ্ঠা করে। ভাটাটি বিদ্যালয় ও বসতবাড়ীর পাশেই অবস্থিত। ফলে বিদ্যালয়ে পাঠদান মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে ইটভাটার পাশের বাড়িতে বসবাস করা ব্যক্তিরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এ সময় তারা ইটভাটাটি উচ্ছেদেরও দাবি জানান।</p> <p>বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা কষ্ট করে পড়ালেখা করে। বাতাস হলে চোখ মেলে চলাফেরা করা যায় না। কালো ধোঁয়া এসে শ্রেণিকক্ষে গন্ধ ছড়ায়। তাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।</p> <p>অভিভাবকেরা বলেন, ‘ইট পোড়ানো মৌসুম এলে বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েদের পাঠিয়ে আমরা সব সময় চিন্তায় থাকি। কখন যেন আমাদের বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিদ্যালয় এলাকায় গেলে পোড়ামাটির গন্ধ নাকে এসে লাগে। চোখ মেলে হাঁটাচলা করলে বালুকণা উড়ে এসে পড়ে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা কালো ধোঁয়ায়। দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ইটভাটার শ্রমিক ছিলেন, সেই আলমগীর এখন চাকরি দেন তরুণদের" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/06/15/1718421646-fcec736e863ed5c5a3b3f55e953dc2b8.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ইটভাটার শ্রমিক ছিলেন, সেই আলমগীর এখন চাকরি দেন তরুণদের</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2024/06/15/1397833" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এ বিষয়ে জানতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম হোসেন মোল্লাকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি শৈলকুপার গাড়াগঞ্জ এলাকায় তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।</p> <p>তবে ইটভাটার অপর মালিক মিজানুর রহমান মধু বলেন, ‘আমি যথাযথ নিয়ম মেনেই ভাটা নির্মাণ করেছি। এখানে তো কারোর কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। আমি ডিসি-ইউএনও সবকিছুই ম্যানেজ করে চলি।’</p> <p>এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা থাকাটা দুঃখজনক। এতে করে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের দায়িত্বরতরা সরেজমিনে গিয়ে ওই ইটভাটাসহ মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’</p>