<p>ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশি দূতাবাসে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে মশাল মিছিল বের করেন তারা। </p> <p>মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে বটতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। </p> <p>মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘দূতাবাসে হামলা কেন, নরেন্দ্র মোদি জবাব দে’, ‘আমার মাটি আমার মা, ধ্বংস হতে দেব না’ ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাঁড়াও জনগণ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।</p> <p>সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘ভারত বারবার বলতে চেয়েছে, তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল, যার ফলে নাকি আমরা স্বাধীন হতে পেরেছি। এই স্বীকৃতি নিয়ে তারা আমাদের দেশ থেকে যত ধরনের সুবিধা নেওয়া যায় সব কিছু নিয়েছে। দুঃখের বিষয় এই যে ফ্যাসিস্ট শাসকের সময় ভারত আমাদের দেশ থেকে যেসব সুবিধা পেত গণ-অভ্যুত্থানের পরে গঠিত সরকার এই সুবিধা দিতে একবারের জন্যও না করেনি।’ </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ এখনো পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি। সেই পানি ভোগ করে ভারত। ভারতীয় আগ্রাসনের কারণে আমাদের দেশের নদীর স্বাভাবিক গতি পায়নি। জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে সরকার এসেছে এখন পর্যন্ত তারা এই বিষয়ে কোনো কথা বলেনি। গতকালকে বাংলাদেশের দূতাবাসে যে হামলা হয়েছে তার কোনো সুরাহা এখন পর্যন্ত হয়নি। ভারত যত বড় সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র হোক না কেন তারা বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা জনগণকে শাসন করতে পারবে না।’</p> <p>ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার একাংশের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, ‘ভারতে বাংলাদেশি দূতাবাসে স্থানীয় কিছু উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা একত্র হয়ে হামলা করেছে। যেটা সরাসরি আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা করার শামিল। আমাদের দেশের ওপর হামলার জন্য যতটুকু দায় নেওয়া উচিত, আমাদের দেশের দূতাবাসের ওপরেও হামলার জন্য ততটুকু দায় নেওয়া উচিত। </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই, আপনাদের তাঁবেদার শেখ হাসিনার শাসনামল শেষ হয়েছে। বাংলাদেশকে আগের চোখে দেখলে আপনারা ভুল করবেন। বিদেশি আগ্রাসনের ও ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে এদেশের ছাত্র-জনতা যে বক্তব্য ছড়িয়ে দিচ্ছে সেদিকে খেয়াল করুন আপনারা। আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে যদি এই হামলার দায় বহন করে স্বীকার না করেন তাহলে আমরা আপনাদের (ভারতের) দূতাবাস ঘেরাও করতে বাধ্য হব।’ </p> <p>তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় দাঙ্গা বাধানোর একটি ষড়যন্ত্র করে আসছেন, সেটি আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আপনারা চাচ্ছেন বাংলাদেশে বিভাজন সৃষ্টি করে সেখান থেকে ফায়দা নেওয়ার। এটা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। আমরা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর থেকে হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়েছি। আমরা আপনাদেরকেও রুখে দেব।’</p>