<p>হাতে হাতকড়া পরা অবস্থায় মায়ের জানাজা ও দাফনে অংশ নিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। মায়ের মৃত্যুতে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পান তিনি। তবে জানাজার সময় তার হাতকড়া খোলা হয়নি। এমনকি হাতকড়া নিয়েই মায়ের মরদেহ কাঁধে কবরস্থানে যান ছাত্রলীগের এ নেতা। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে প্যারোলে চার ঘণ্টার জন্য মুক্তি পান তিনি।</p> <p>হাতে হাতকড়া, কাঁধে মায়ের লাশ-এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা গেছে। ফেসবুকে সেই ছবি দেখে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, মায়ের লাশ বহনের সময়ও হাতে হাতকড়া থাকতেই হবে! হাতকড়া না থাকলে পরিবারের লোকজন অন্তত মানসিক শান্তি পেতেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সাড়ে ১২ বছরের কম বয়সী মুক্তিযোদ্ধা ২১১১, বাদ যাচ্ছে নাম" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/11/1733913650-d6d55a82f7452d28747769bddd786a39.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সাড়ে ১২ বছরের কম বয়সী মুক্তিযোদ্ধা ২১১১, বাদ যাচ্ছে নাম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/12/11/1456347" target="_blank"> </a></div> </div> <p>চুয়াডাঙ্গা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, যে যুবকের হাতে হাতকড়া তার নাম মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে আবুল হোসেন। জাহাঙ্গীর হোসেন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কেদারগঞ্জ গ্রামের মৃত কবির হোসেনের ছেলে।<br />  <br /> তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা সময়ের জন্য জাহাঙ্গীরকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।</p> <p>চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রুবাইত আজাদ সুস্থির বলেন, জাহাঙ্গীর চুয়াডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের সহসভাপতি।<br />  </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="লং মার্চের সমর্থনে পথে পথে মানুষের স্লোগান" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/11/1733912820-8e6e6528145bcf34f6dfb747d4fd777e.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>লং মার্চের সমর্থনে পথে পথে মানুষের স্লোগান</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Politics/2024/12/11/1456341" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জাহাঙ্গীরের মামা আলাউদ্দিন বলেন, ‘জাহাঙ্গীর তার মায়ের দাফনে অংশ নিতে পেরেছে। মায়ের জন্য দুহাত তুলে দোয়া করতে পেরেছে এতেই আমরা খুশি।’</p> <p>চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘হাতে মিথ্যা মামলার হাতকড়া, কাঁধে মায়ের লাশ....জাহাঙ্গীর কিভাবে তোমাকে সান্তনা দেব? সে ভাষা আমার জানা নেই।’</p> <p>ওই লেখার সঙ্গে ওবাইদুর রহমান জিপু একটি ভিডিও দিয়েছেন। সেই ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের গাড়ি থেকে জাহাঙ্গীর নামছেন। হাতে হাতকড়া এবং দড়ি বাঁধা। মায়ের লাশের খাটিয়া জাহাঙ্গীরের কাঁধে। জাহাঙ্গীর স্বজনদের বুকে আছড়ে পড়ছেন তখনো হাতে হাতকড়া। ওজু করছেন তখনো হাতকড়া। মায়ের লাশ কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছেন তখনো হাতকড়া। এই লেখায় মন্তব্য করেছেন অনেকে। বশির উদ্দিন নামের একজন লিখেছেন, ‘এ রকম দৃশ্য যেন কোনো দলের ভাইয়ের না আসে।’</p> <p>জোয়ার্দ্দার জুয়েল নামের একজন তার ফেসবুক পেজে পুলিশ প্রহরায় জাহাঙ্গীরের ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘কখনো ভুলব না...হাতে হাতকড়া কাঁধে মায়ের লাশ...।</p> <p>চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেলার মো. ফখরউদ্দিন বলেন, ঘনিষ্ঠ কোনো নিকটাত্মীয় মারা গেলে তার দাফনকাজে অংশ নেওয়ার জন্য কয়েক ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার বিধান আছে। মৃত ব্যক্তির স্বজনরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করে এভাবে মুক্তির অনুমতি পেতে পারেন। এই পদ্ধতিতেই জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তাকে আবার নির্দিষ্ট সময়ের পর কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।</p> <p>চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, গত ১২ নভেম্বর থেকে জাহাঙ্গীর চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে আটক। গত ৫ আগস্ট সংঘটিত একটি ঘটনা নিয়ে করা বিস্ফোরক ও নাশকতা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।</p> <p>চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান বলেন, আইনগত প্রক্রিয়া মেনে জাহাঙ্গীরকে তার মায়ের দাফনে শরিক হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ নেমেই প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রেও সেসব নিয়ম মেনেই তাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। কেউ প্যারোলে মুক্ত থাকাকালীন সময়ে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন হয়-এমন কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মোতায়ন রাখা হয়। জাহাঙ্গীরের প্যারোলে মুক্তির ক্ষেত্রেও আইন অনুযায়ী সব কিছু করা হয়েছে।</p> <p>জাহাঙ্গীরের মা আলেয়া খাতুন (৬৫) স্ট্রোক করে মঙ্গলবার সকালে মারা যান। মায়ের দাফনে অংশ নেওয়ার জন্য পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।</p>