<p style="text-align:justify">জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি লবণাক্ততার সঙ্গে লড়াইটা দিন দিন বড় হচ্ছে। এ জন্য ক্ষতিপূরণের ন্যায্য হিস্যা দাবি করেছেন খুলনার কয়রা উপজেলাবাসী।</p> <p style="text-align:justify">আজ শনিবার সকাল ১১টায় কয়রা উপজেলা পরিষদের সামনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের আয়োজনে মানববন্ধন হয়। সেখানে বিভিন্ন দাবি জানিয়ে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন তারা।</p> <p style="text-align:justify">এ সময় স্বপ্না রানী মণ্ডল নামে এক নারী বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছি। প্রতিবছর ঝড়, জলোচ্ছ্বাসে আমরা ঘরবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে পথে বসি। আমাদের নদী তীরবর্তী বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় প্রতিবছর তা দুর্বল হয়ে পড়ছে। ছোট-বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেই দুর্বল বাঁধ ভেঙে বছরের পর বছর নোনা পানিবন্দি থাকতে হচ্ছে। জলবায়ু তহবিলের টাকায় শহর অঞ্চলের উন্নয়ন হলেও উপকূলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনে পর্যাপ্ত বরাদ্দ আসে না। আমরা এর নায্য হিস্যা চাই।’</p> <p style="text-align:justify">কপোতাক্ষ নদ তীরবর্তী মদিনাবাদ গ্রাম থেকে মানববন্ধনে যোগ দেন হালিমা খাতুন। তার হাতে ছিল একটি প্ল্যাকার্ড। সেখানে লেখা ছিল ‘জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত করুন, আমাদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করুন’। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাসীর কাছে উপকূলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পক্ষ থেকে আমরা দাবি তুলে ধরেছি। জলবায়ু পরিবর্তনে যারা দায়ী, আমরা তাদের কাছে ক্ষতিপূরণ চাই। সে ক্ষতিপূরণ হতে হবে নায্যতার ভিত্তিতে।’</p> <p style="text-align:justify">কয়রা উপজেলা বাজেট মনিটরিং ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘উন্নত দেশের মাত্রাতিরিক্ত কার্বণ নিঃসরণের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। বিশেষ করে কয়রা উপজেলাসহ দক্ষিণাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে। কয়রার মাটি, পানি, স্বাস্থ্য, কৃষিতে বৈরী অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। লবণাক্ততায় উপকূলের মানুষ জমি, বাড়িঘর এমনকি কর্ম হারিয়ে অনিশ্চিত জীবনযাপন করছে। লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। বিশ্বের ধনী দেশগুলোকে এর দায় নিতে হবে। জলবায়ু সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">সুন্দরবন সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতিবছর উপকূলে দুর্যোগ বাড়ছে। লবণাক্ততার আগ্রাসনে ফসলের উৎপাদন কমছে। উপকূলের মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা সমাধানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সবাইকে অবদান রাখতে হবে।’</p>