<p>‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা আবার আসবে।’ খুলনা রেলস্টেশনের ডিজিটাল বিলবোর্ডে এমন লেখাকে কেন্দ্র করে পুরো স্টেশনজুড়ে হুলুস্থুল কারবার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন কেউ কেউ। তবে বিলবোর্ড স্থাপনের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীকে আটক করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানায় নেওয়া হয়েছে। </p> <p>আটক ব্যক্তির নাম মো. আসলাম হোসেন সেন্টু (৪৬)। এ ঘটনার পর পরই স্টেশন এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভ করেছে খুলনা মহানগর ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপিসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। একইসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারাও সেখানে গিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেন। তবে ঘটনার পর পরই স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ রানা পলাতক রয়েছেন। এমনকি তার মোবাইলটিও বন্ধ।</p> <p>শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে এমন লেখা দেখে সেখানে অবস্থানরত কয়েকজন মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এর পরপরই বোর্ডটি বন্ধ রাখা হয়। তবে ধীরে ধীরে সেখানে লোকজন জড়ো হতে থাকে। অবস্থা ক্রমান্বয়ে জটিল হলে সেখানে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।</p> <p>সহকারী স্টেশন মাস্টার স্নিগ্ধা ঘোষ বলেন, ডিজিটাল বোর্ডের লেখা কোত্থেকে আসে, কে অপারেট করেন তা কিছুই তিনি জানেন না। যদিও তিনি গতকাল সকাল ৯টা ৪০ মিনিট থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ডিউটিতে ছিলেন। তবে এসময় স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ রানার কক্ষ বন্ধ পাওয়া গেছে এবং তার মোবাইলটিও বন্ধ ছিল।</p> <p>খুলনা জিআরপি থানার ওসি মো. ফেরদৌস আলম খান বলেন, রেলওয়ের ডিজিটাল স্ক্রিনে আপত্তিকর একটি লেখা উঠার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর এর অপারেটরকে আটক করা হয়। তাকে পরে কেএমপির খুলনা থানায় হস্তান্তর করা হলেও তার বিরুদ্ধে জিআরপি থানায়ও মামলা করা হবে। এ ছাড়া যেহেতু এটি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বিষয়, সেহেতু তাদের সঙ্গেও কথা বলবেন তিনি।</p> <p>সেখানে উপস্থিত কেএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার (সদর) হুমায়ুন কবির বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল বোর্ডে এমন আপত্তিকর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে সেখান থেকে তারা মো. আসলাম হোসেন সেন্টু নামের একজনকে আটক করে খুলনা থানায় নিয়ে যান। আসলাম ওই ডিজিটাল বোর্ড স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মী। তার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘ত্রিপলী সাইন’। নগরীর সিমেট্টি রোডে ওই প্রতিষ্ঠানের অবস্থান।</p> <p>সেখানে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি নাজমুল হোসেন ইমরান, সুমাইয়া বান্না, রুমি রহমানসহ কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি বলেন, একশ্রেণির ষড়যন্ত্রকারী রেলওয়ের ডিজিটাল বোর্ডে একটি নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠনের নামে বক্তব্য দিয়েছে এতে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এর সঙ্গে কারা জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।</p> <p>এদিকে, এ ঘটনার পর সেখানে নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম তুহিনের নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর একটি মিছিল সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় তুহিন বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত সেটি দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, এতেই প্রমাণিত হয় যে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা এখনো বিভিন্ন দপ্তরে বহাল রয়েছে। এর সঙ্গে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রেল পুলিশ জড়িত বলেও তিনি অভিযোগ করেন।</p>