<p style="text-align:justify">পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে খুলনা-ঢাকা নতুন রুটে চালু হওয়া জাহানাবাদ এক্সপ্রেসে করে খুলনা থেকে ভাঙ্গায় এসেছেন মিনু রানী (৫৫)। স্টেশনে নেমে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, খুলনা থেকে ভাঙ্গায় নিরাপদে এবং এত কম সময়ে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। আমার স্বামীকে সাথে নিয়ে এসেছি। শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে যাব। প্রথম ট্রেন যাত্রায় যাত্রী হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">জাহানাবাদ এক্সপ্রেসের আরেক যাত্রী সালমা আক্তার তার দুই মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। তিনিও ভাঙ্গায় নেমেছেন। খুলনা থেকে জাহানাবাদ এক্সপ্রেসে চেপে তিনি যখন ভাঙ্গায় নামেন, তখন তার চোখে-মুখে আনন্দ। সুসজ্জিত ট্রেনটিতে যাত্রী হতে পেরে তিনি ও তার মেয়েরা আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আমি আমার সন্তানদের নিয়ে নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভাঙ্গা স্টেশনে আসতে পেরেছি। স্মরণীয় এই মুহূর্তটি আমার সারা জীবন মনে থাকবে। </p> <p style="text-align:justify">জাহানাবাদ এক্সপ্রেসে খুলনা থেকে ঢাকাগামী যাত্রী মনিরুজ্জামান সিয়াম (৩০) জানান, আমি একটি চাকরির পরীক্ষা দিতে ঢাকা যাচ্ছি। খুলনা থেকে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে এই ট্রেনটি চালু হওয়ায় আমি নিশ্চিন্তে ঢাকায় নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে পারব। ট্রেন চালু না হলে আগের দিন রাতে গিয়ে আমাকে হোটেলে থাকতে হতো। সকাল ছয়টায় খুলনা থেকে ট্রেনটি চালু হওয়ায় আমাদের ছাত্র এবং চাকুরীজীবীদের বিশাল সুবিধা হলো। এখন আর ঢাকার প্রবেশপথে যানজটে পড়তে হবে না। </p> <p style="text-align:justify">ভাঙ্গার হামিরদী ইউনিয়নের বাসিন্দা খুলনা জজ কোর্টের আইনজীবী নজরুল ইসলাম লিটন জানান, ঢাকা-খুলনা নতুন লাইনে রেল চালু হওয়ায় সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছি আমরা। কারণ আমাদের পরিবারের অনেকেই খুলনায় থাকে। আমাদের এলাকার অনেকে খুলনায় পাটের ব্যবসা করেন। এখন আমরা তিন ঘণ্টা  ৪৫ মিনিটে নিরাপদে খুলনা ও ঢাকায় যেতে পারবো। </p> <p style="text-align:justify">ভাঙ্গা মহিলা কলেজের অধ্যাপক বরুণ হালদার বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি খুলনা। রেললাইন চালু হওয়ায় আমি খুব খুশি হয়েছি। সকাল ছয়টায় খুলনা থেকে ট্রেনে উঠে ৮টা ১৬ মিনিটে আমি ভাঙ্গা পৌঁছবো। ফলে মাঝে মাঝে আমি বাড়ি থেকে এসেও ক্লাস করতে পারবো। </p> <p style="text-align:justify">ভাঙ্গা জংশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার সাকিবুর রহমান আকন্দ জানান, খুলনা থেকে জাহানাবাদ এক্সপ্রেসটি ভাঙ্গায় ৮টা ৫৫ মিনিটে পৌঁছেছে। ট্রেনটি ভাঙ্গা থেকে ৮টা ৫৮ মিনিটে ছেড়ে গেছে। ট্রেনটিতে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ১১টি বগী নিয়ে ট্রেনটি খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে এসেছে। সকাল থেকেই ভাঙ্গা জংশনে যাত্রী ও কৌতূহলী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। </p> <p style="text-align:justify">ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনের বুকিং সহকারী হাবিবুর রহমান জানান, আজকের ট্রেন যাত্রায় টিকিটগুলো অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। বুকিং কাউন্টার এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। দ্রুততম সময়ে বুকিং কাউন্টার চালু করা হবে। ভাঙ্গার যাত্রীদের জন্য আরও বেশি প্রচারণা প্রয়োজন রয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">তিনি জানান, ভাঙ্গা থেকে ঢাকা পর্যন্ত এ ট্রেনে শোভন শ্রেণীতে ২৬০ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণীতে ৫০১ টাকা এবং এসি কেবিনে ৫৯৮ টাকা ভাড়া ধার্য করা হয়েছে। অন্যদিকে ভাঙ্গা থেকে খুলনা পর্যন্ত শোভন শ্রেণীতে ১৮৫ টাকা এবং এসি শ্রেণীতে ৩৫১ টাকা ভাড়া ধার্য রয়েছে।</p>