<p>ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মুসলমান ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কেউ মারা গেলে মাটির নিচে হয় শেষ ঠিকানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বসবাসরত এই দুই সম্প্রদায়ের বেলায়ও একই রীতি। তবে ব্যতিক্রম হলো, মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কবরস্থান ও সমাধিক্ষেত্র (চার্চ ইয়ার্ড) একবারে পাশাপাশি। আলাদা সীমানা প্রাচীরে বিভাজন করা কবরস্থান ও সমাধিক্ষেত্রে চিরঘুমে শান্তিতে শুয়ে আছে দুই সম্প্রদায়ের কয়েক শ মানুষ।</p> <p>ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এমনিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির বেশ কিছু উদাহরণ রয়েছে। শ্মশাণের পাশে কবরস্থান, মাদরাসা লাগোয়া মন্দির। তবে মুসলমান ও খ্রিস্টানদের পাশাপাশি চিরঘুমের ঠিকানা জেলাতে এই একটিই। যেটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার দক্ষিণ মৌড়াইলে অবস্থিত। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে যা বললেন মিজানুর রহমান আজহারী" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/28/1735362583-7151184986aed9f8f418938930271d37.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে যা বললেন মিজানুর রহমান আজহারী</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/28/1462230" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ পার হয়ে উল্টোদিকে মৌড়াইলের পথ ধরে কয়েক শ গজ পশ্চিমে যেতে কবরস্থান সমাধিক্ষেত্রের দেখা মিলে দেখা। এক দুপুরে কবরস্থান থেকে কিছু লোক বের হচ্ছিলেন, কিছু ঢুকছিলেন। ভেতরে থাকাতে দেখা গেলো- একজনকে কবরস্থ করা হচ্ছে। এ কবরস্থানে কয়েক শ জনের কবর দৃশ্যমান। কবরস্থান ঘেঁষেই সমাধিক্ষেত্র। ধর্মীয় চিহ্ন দেখে স্পষ্টতই বুঝা যায় এটি খ্রিস্টানদের। এ সমাধিক্ষেত্রে অর্ধ শতাধিক খ্রিস্টান শুয়ে আছে বলে ধারণা পাওয়া যায়।</p> <p>কবরস্থান ও সমাধিক্ষেত্রটি ঠিক কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটির স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। কবরস্থানের সামনে থাকা একটি লেখায় দেখা যায়, ১৯৭৮ সালে এর সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। সেই অনুযায়ী কবরস্থান ও সমাধিক্ষেত্র শত বছরের পুরনো বলে অনেকে দাবি করেন।</p> <p>ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে মুসলমান ও হিন্দুর পাশাপাশি খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরাও বসবাস করেছেন। খ্রিস্টানদের মাধ্যমে পরিচালিত মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র এবং একটি বিদ্যালয়ে জেলায় বেশ নাম কুড়িয়েছে। সব ধর্মের মানুষই এ দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিয়ে থাকেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ, লক্ষাধিক নেতাকর্মী জড়ো হচ্ছেন বিমানবন্দরে" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/28/1735364737-794cdb9c73f8c687c66ee249c67e263a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ, লক্ষাধিক নেতাকর্মী জড়ো হচ্ছেন বিমানবন্দরে</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/28/1462236" target="_blank"> </a></div> </div> <p>স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক রিয়াজ আহমেদ অপু বলেন, ‘আলাদা দুটি সীমানা প্রাচীর মুসলমান ও খ্রিস্টানদের কবরস্থানকে ভাগ করেছে। খ্রিস্টানদের কবর দিতে এখানে কোনো সমস্যা হয় না। আমাদের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। আমরা একে অপরের যেকোনো কাজে সহযোগিতা করি।’</p> <p>খিস্ট্রান সম্প্রদায়ের মার্টিন নাথ বলেন, ‘আমরা ধারণা কবরস্থান ও সামাধিক্ষেত্রটি প্রায় ১০০ বছরের পুরনো। কিন্তু আমাদের মাঝে এ নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। আমরা একে অপরের পরিপূরক। এটি সম্প্রীতির উদাহরণও হতে পারে।’</p> <p>তিনি জানান, সম্প্রতি কবরস্থানের সীমানা দেওয়াল ভেঙে আমাদের দেওয়ালও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ নিয়ে কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা পরিষদে একটি আবেদন জমা দেওয়া আছে।</p> <p>সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহবায়ক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর বলেন, ‘আমরা তো একই স্রষ্টার সৃষ্টি। চির বিদায়ের পর মুসলমান ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন যেভাবে পাশাপাশি শান্তিতে শুয়ে আছে জীবদ্দশায়ও আমরা এমন দেখতে চাই। আমরা চাই আমাদের বিশ্বাসের জায়গাটা এক থাকুক।’</p> <p>সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনেক উদাহরণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আমাদের এলাকায় মুসলমান ও খ্রিস্টানদের পাশাপাশি কবরস্থান। খ্রিস্টানদের কবরস্থানটি রক্ষায় আমি যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করি। তাদের কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর বিষয়েও সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছি।’</p>