<p style="text-align:justify">নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে এক কৃষকের দেড় একর জমির বোরো ধান মই দিয়ে নষ্ট করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকের ছেলে পরাগ সরকার।</p> <p style="text-align:justify">অভিযুক্ত হলেন, উপজেলার ইছাপুর গ্রামের চানফর মিয়া, তার দুই ছেলে রাকিব মিয়া ও শাকিব মিয়া এবং চানফর মিয়ার  চাচাতো ভাই আঙ্গুর মিয়া। ভুক্তভোগী পরাগ সরকার উপজেলার বলরামপুর গ্রামের দুলাল সরকারের ছেলে।</p> <p style="text-align:justify">অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইছাপুর গ্রামের আঙ্গুর মিয়ার বাবা ছাত্তার মিয়ার কাছ থেকে ৩০ বছর আগে ১ একর ৫০ শতক জমি কিনে নেন পাশের বলরামপুর গ্রামের দুলাল সরকার। কাগজপত্র সমস্যা থাকায় ওই সময় জমিটি দলিল করে দিতে পারেননি ছাত্তার মিয়া। কয়েক বছর পর ছাত্তার মিয়া মারা যান। </p> <p style="text-align:justify">তবে সেই সময় থেকে জমি ভোগ দখল করে আসছেন দুলাল মিয়া। কিন্তু ৭-৮ বছর ধরে ছাত্তার মিয়ার ছেলে আঙ্গুর মিয়া ও তার চাচাতো ভাই ও ভাতিজারা সেই জমি দখলের পাঁয়তারা করতে থাকে। এ নিয়ে গ্রামে দুই-তিন দফা দরবার সালিশও হয়। তবে গ্রামের লোকজন ওই জমি দুলাল সরকারের বলে রায় দেন।  </p> <p style="text-align:justify">গত ডিসেম্বর মাসে জমিতে বোরো ধান রোপণ করেন দুলাল সরকার। গত ১০ জানুয়ারি সকালে ওই জমিতে মই দিয়ে রোপণ করা বোরো ধান মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয় আঙ্গুর মিয়া, চানফর ও তার ছেলেরা। ফসলে মই দেওয়ার সময় ভুক্তভোগী পরাগ সরকার বাঁধা দিতে গেলে তাকে মেরে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় দুলাল সরকারের ছেলে পরাগ সরকার থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে বলরামপুর গ্রামের  মো. শহীদ মিয়া, অমিত সরকার ও সৌরভ সরকার বলেন, ‘এই জমিটি দীর্ঘ বছর ধরে দুলাল সরকার চাষাবাদ করে আসছেন। এটি তার জমি বলেই জানি। মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব যদি থেকেও থাকে, তবে মই দিয়ে ফসল নষ্ট করা ঠিক হয়নি।’</p> <p style="text-align:justify">ইছাপুর গ্রামের সাধন সরকার বলেন, ‘ফসল তো কারো ক্ষতি করেনি। এটা দেশের ক্ষতি, দশের ক্ষতি। দ্বন্দ্ব যাই থাকুক, আলোচনায় সমাধান করা যেত। ফসলের জমিতে মই দেওয়াটা ঠিক হয়নি। এটা কোনো মানুষের কাজ হতে পারে না।’</p> <p style="text-align:justify">মেন্দিপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘দুলাল সরকার ওই জমি কিনেছে-এটা এলাকার সবাই জানে। দীর্ঘ বছর ধরে চাষাবাদ করে আসছেন তিনি। জমি নিয়ে তাদের আলোচনা থাকলে করুক। কিন্তু রোপণ করা ধান খেতে মই দিয়ে ফসল নষ্ট করা কোনো সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে না।’</p> <p style="text-align:justify">ভুক্তভোগী কৃষক দুলাল সরকার বলেন, ‘৩০ বছর আগে ওই জমি কিনেছিলাম। কাগজে সমস্যা থাকায় তখন জমি দলিল করে দিতে পারেনি। পরে দলিল করে দেওয়ার আগেই মারা যান ছাত্তার মিয়া। মারা যাওয়ার পর তার ছেলে ও ভাই ভাতিজারা জমি দখলের পাঁয়তারা করতে থাকে। এ নিয়ে গ্রামে দরবার সালিশ হলেও তারা এসব মানতে নারাজ। দীর্ঘ বছর ধরে চাষাবাদ করে আসছি।  সম্প্রতি রোপণ করা বোরো ধান মই দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে তারা। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’</p> <p style="text-align:justify">অভিযুক্ত আঙ্গুর মিয়া বলেন, ‘ওই জমির কাগজপত্র আমাদের। তাদের কাগজপত্র থাকলে দেখাতে বলেন। জমিতে মই দেওয়ার কোনো প্রমাণ আছে তাদের কাছে?’ তাদের মেরে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’<br />  </p>