যুদ্ধ-সংঘাত কোনো পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে না। এসব বিষয় কোনো মানুষের কাম্য নয়। আমরা কোন সংঘাত বা যুদ্ধ চাই না। রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে কুমুদিনী উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজে অধ্যয়নরত চতুর্থ বর্ষের কয়েকজন ছাত্রীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা এসব কথা বলেন।
কাশ্মিরি ছাত্রীরা বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তির দেশ। এদেশে নিরাপত্তায় কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট অন্যতম। এখানে কোনো হানাহানি নেই, নেই কোন অস্থিতিশীলতা। কাশ্মির-পাকিস্তানিদের মধ্যে যে সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছে, তা কাম্য নয়।
আমরা শান্তি চাই।
তারা বলেন, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। ছুটির প্রয়োজন হলে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরতে পারছি। আবার মা-বাবা বাংলাদেশে যখন-তখন আসতে পারছেন।
ভিসা জটিলতা দেখা দিলে কুমুদিনী পরিবারের পক্ষ থেকে অনলাইনে প্রত্যয়ন অ্যাম্বাসিতে জমা দিয়ে ভিসা সমস্যাও সমাধান করা হয়ে থাকে।
পহেলগাম, তুতমারি গালি এবং রামপুর সেক্টর এলাকায় পাকিস্তানি সেনারা একাধিকবার গুলি ছুড়েছে। এজন্য ওইসব এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে তারা জেনেছেন।
কুমুদিনী উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী আনছুসনি জানায়, মা-বাবাসহ পরিবারের সকলের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। কাশ্মিরের হারি রাস্তা শহরের বাসিন্দা তিনি।
দুই মাস আগে ছুটি কাটিয়ে কাশ্মির থেকে কলেজে এসেছেন। পাকিস্তানি সেনারা পহেলগাম, তুতমারি গালি এবং রামপুর সেক্টর এলাকায় গুলি চালিয়েছে বলে জেনেছেন। কুমুদিনী ক্যাম্পাস শান্তিপ্রিয় ক্যাম্পাস উল্লেখ করে বলেন, এখানে তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মাসকান ও উছড়া বলেন, সংঘাত-যুদ্ধ কোন পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে না। কাশ্মির-পাকিস্তানি সংঘাত চাই না, যুদ্ধ চাই না। আমরা শান্তি চাই।
ডা. শিনফার হাসান বলেন, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর কুমুদিনী হাসপাতালে ইন্টার্ন শেষ করেছি। কাশ্মির-পাকিস্তানের উত্তেজনার বিষয়ে শান্তি কামনা করেন তিনি। কুমুদিনী ক্যাম্পাসের বিষয়ে বলেন, এখানে নিরাপত্তার বিষয়ে কোন বিকল্প নেই। তাছাড়া মির্জাপুর শহরের মানুষ শান্তিপ্রিয়। চলাফেরায় কোনো ঝুঁকি নেই।
কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন চন্দ্র সরকার জানান, কাশ্মির-পাকিস্তানি উত্তেজনার বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজে অধ্যয়নরত ভারতের ছাত্রীরা কোন ধরনের উদ্বিগ্ন নয়। তারা লেখাপড়ার সময় ছাড়া পরিবার-পরিজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। এছাড়া ঈদ, পূজা ছাড়াও ছুটি নিয়ে পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন।
কুমুদিনী উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. এম এ হালিম বলেন, ছাত্রীরা সরকারিভাবে ৫ বছরের ভিসা পান। ভারতের ছাত্রী ভর্তি চলছে। আগামী মে মাসে ভর্তি শেষ হবে। এই কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ১২০ জন ও ডেন্টাল কোর্সে ৪০ জন ভর্তির সুযোগ রয়েছে। এরমধ্যে শতকরা ৪৫ জন ভারত ও নেপালের ছাত্রী ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
বর্তমান সময়ে ভারতের সংঘে সম্পর্কের টানাপোড়নের কারণে ভারতের ছাত্রীর ভর্তি সংখ্যা কমে আসছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।