কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ছাত্র-শিক্ষকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা প্রতিনিধি
শেয়ার
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ছাত্র-শিক্ষকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
তাবলিগ নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ছাত্র-শিক্ষদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

তাবলিগের বিবদমান দুই পক্ষ মাওলানা সাদ ও জুবায়েরের অনুসারীদের সংঘর্ষের জেরে উত্তাল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। পালিত হচ্ছে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি। শিক্ষার্থীদের দাবি কলেজ প্রশাসনের মিথ্যাচার ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁঞাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ সত্য নয়।

বৃহস্পতিবার (২৩  জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় কলেজের ডিগ্রি ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্স শেষ পর্বের শিক্ষার্থী মো. নাহিদুল ইসলাম এ বক্তব্য তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ পাচ্ছেন যাঁরা

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ পাচ্ছেন যাঁরা

 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর ধরে কলেজ ক্যাম্পাস মসজিদে সাপ্তাহিক হাদিসের তালিম চলে আসছে। হঠাৎ করে গত ২০ জানুয়ারি তাবলিগ জামাতের সাপ্তাহিক তালিমটি বন্ধের ঘোষণা দেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁঞা। পরদিন সকালে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের অফিসে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে যান।

পরে এ বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা, যা মোটেও সত্য নয়।

এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ শিরোনামে যে সংবাদ প্রচার করা হয় তা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। বুধবার কলেজ ক্যাম্পাসে প্রায় দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অর্ধদিবস কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। সেখানে কলেজের সাধারণ ছাত্রদেরকে দুষ্কৃতিকারী বলা হয় এবং আমাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

আরো পড়ুন
ফেসবুকে ‘আজেবাজে মন্তব্য’, মামলা করলেন সারজিস

ফেসবুকে ‘আজেবাজে মন্তব্য’, মামলা করলেন সারজিস

 

এ সময় গণিত বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তারেক হোসেন, ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সোলাইমান, ইসলামের ইতিহাসের ছাত্র আশিকুর রহমান, পরিসংখ্যান বিভাগের তৌহিদ বিন সাদিক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষ পর্বের ছাত্র মো. নাঈম খান, মো. উজ্জ্বল মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁঞা কালের কন্ঠকে বলেন, মসজিদে তালিম নিয়ে মাওলানা সাদ ও জুবায়ের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর অপ্রতিকর ঘটনা এড়াতে দুই পক্ষের তালিম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি জানার পর একটি পক্ষ এবং বহিরাগত কিছু লোক আমার কক্ষে ঢুকে অবরুদ্ধ করে পেলে। যা দুঃজনক।

আরো পড়ুন
মেহেরপুর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকে ‘৩ টাকার কমিটি’ বললেন মাসুদ অরুন

মেহেরপুর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকে ‘৩ টাকার কমিটি’ বললেন মাসুদ অরুন

 

গত ১৩ জানুয়ারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে তাবলিগের বিবদমান দুই পক্ষ মাওলানা সাদ ও জুবায়েরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) তাবলিগ জামাতের সাপ্তাহিক তালিম বন্ধের ঘোষণা দেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁঞা। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিনের মতবিরোধে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন কলেজের নজরুল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ধর্মপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অধ্যক্ষের সঙ্গে তুমুল তর্ক-বিতর্কে জড়িয়েছেন মসজিদের মুসল্লি ও ছাত্ররা।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তেঁতুলিয়া

শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার হলেন দুই সমন্বয়ক

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার হলেন দুই সমন্বয়ক
সংগৃহীত ছবি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহকে (ওবায়দুল হক) বহিষ্কার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং জেলা সমন্বয়কদের নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলার আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী, সদস্য মো. আকিব ও মো. মনজিল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এর আগে, আহ্বায়ক ফজলে রাব্বি বিজ্ঞপ্তির একটি কপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নিজস্ব আইডিতে পোস্ট করেন।

আরো পড়ুন

রাজধানীতে সিসি ক্যামেরা সংকটে বাড়ছে অপরাধ

রাজধানীতে সিসি ক্যামেরা সংকটে বাড়ছে অপরাধ

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পঞ্চগড় জেলা থেকে জানানো যাচ্ছে যে তেঁতুলিয়া উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছিলেন মো. হযরত আলী ও মো. ওবায়দুল্লাহ। কিন্তু ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে নানা ধরনের শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। 

সেই সঙ্গে জেলা সমন্বয়কদের নিয়ে মিথ্যাচার করে বক্তব্য দেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের কাজকে কোনোভাবেই সমর্থন করে না।

তাই শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পঞ্চগড় জেলার পক্ষ থেকে তাদের বহিষ্কার করা হলো। পরবর্তী সময়ে, তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

আরো পড়ুন

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হলেন ১০৪ কর্মকর্তা

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হলেন ১০৪ কর্মকর্তা

 

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলার আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী বলেন, ‘তাদের বহিষ্কারের মূল কারণ তারা বিভিন্ন অফিসে গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। এর প্রতিবাদ করায় তারা আমাদের গুপ্ত সংগঠন ও শিবির বলে যাচ্ছে।

জেলা সমন্বয়ক সান ও আমাকে মারতে এসেছে। একই সঙ্গে তারা আমাদের গুপ্ত সংগঠনের সদস্য বলে আখ্যা দিয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘তেঁতুলিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে আমরা সব সময় তাদের প্রাধান্য দিয়েছি। কিছুদিন আগে শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উস্কানি ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একক সিদ্ধান্তে হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধনের ডাক দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করেন। 

 

আরো পড়ুন

ওজু নিয়ে মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন বুলু

অজু নিয়ে মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন বুলু

 

 

প্রচারের কিছুক্ষণ পরই তেঁতুলিয়ায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে যুক্ত থাকা সমন্বয়ক, পঞ্চগড় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের একক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিরোধিতা ও তাদের কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ার আহ্বান জানান।

পরে রাতেই তাদের কর্মসূচি স্থগিত হয়।’

‘এই সুযোগে ইউএনওর নামের সঙ্গে আমাদের যুক্ত করে অপপ্রচার চালানো শুরু করে তারা। যার কোনো ভিত্তি না থাকায় এবং বিভিন্ন শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকায় আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা তাদের বহিষ্কার করি। কারণ আমরা সুশৃঙ্খলতায় বিশ্বাস করি’, বলেন আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী।

বহিষ্কারের কারণ জানতে গেলে হযরত আলী ও ওবায়দুল হক বলেন, ‘আমরা কারো বাপের কথায় আন্দোলন করিনি। সারা দেশের প্রেক্ষাপটে আমরা নিজেদের জায়গা থেকে সবার মতো আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। তবে যে অভিযোগ তুলে আমাদের বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ে কোনো কমিটি নেই। 

আর সে কারণে তিনি বহিষ্কার করতে পারেন না। আমরা যতদূর জানি, সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী শিবির করেন। তার মতাদর্শ বা শিবিরের সঙ্গে যুক্ত না হওয়ায় তেঁতুলিয়ার ইউএনও এটা করিয়েছেন। আমরা শুরু থেকে তেঁতুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে কাজ করে গেছি। যেহেতু এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে, আমরা এর জবাব চাই।’

এদিকে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বী বলেন, বহিষ্কারের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি কারো সঙ্গে যুক্ত না, শৃঙ্খলার বাইরে কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত না। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তার সত্যতা যাচাই করে দেখা আমাদের উচিত। আমরা বাংলাদেশ সরকারের চাকরি করতে এসেছি, আমরা সরকারের নির্দেশনা মেনে কাজ করি। এখানে কারো শেল্টারের প্রয়োজন নেই। কারো ছত্রচ্ছয়ায় থেকে অপকর্ম করার প্রচেষ্টা করার কোনো সুযোগ এই চাকরিতে নেই। 

যদি কারো অভিযোগ থাকে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করুক। আমি আমার শ্রদ্ধেয় অভিভাবক জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি স্যারকে বলেছি, যদি কোনো অভিযোগ থাকে তার তদন্ত হোক। তদন্ত হওয়ার পর সত্য প্রমাণিত হলে আমাকে শাস্তি দেওয়া হোক। আর যদি তা না হয়, তাহলে এটাকে অপপ্রচার হিসেবে ধরে নেওয়া হোক।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের এখানে অনেকে অনেকভাবে চাঁদাবাজির চেষ্টা করেছে, করে আসছে। এগুলোর বিরুদ্ধে আমি সব সময় সোচ্চার থাকায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে।’

মন্তব্য

টঙ্গীতে ডেভিল হান্টে আটক ১৮

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর
শেয়ার
টঙ্গীতে ডেভিল হান্টে আটক ১৮
সংগৃহীত ছবি

টঙ্গীর দুই থানায় ডেভিল হান্ট অভিযানে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থক। টঙ্গীর পূর্ব ও পশ্চিম থানা পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ডেভিল হান্ট অভিযানে ১৬ জন আটক করা হয়েছে।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসকান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, ডেভিল হান্ট অভিযানে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে টঙ্গীতে গণপিটুনিতে ছিনতাইকারী সন্দেহে একজন নিহত হওয়ার পর ছিনতাই কিছুটা কমেছে-এমনটাই দাবি সাধারণ মানুষের। তবুও তাদের মধ্যে ছিনতাই আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে তারা জানান।

মন্তব্য

জীবিকার সন্ধানে প্রতি মাসে দেশ ছাড়ছেন ঝিনাইদহের ৮৩৩ যুবক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
শেয়ার
জীবিকার সন্ধানে প্রতি মাসে দেশ ছাড়ছেন ঝিনাইদহের ৮৩৩ যুবক
ছবি: কালের কণ্ঠ

কর্মসংস্থানের জন্য ঝিনাইদহ জেলা থেকে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি মাসে এ জেলা থেকে গড়ে ৮৩৩ জন বেকার যুবক কর্মসংস্থানের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। ফলে ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ছে। এদের বেশির ভাগই ছাত্র ও বেকার যুবক।

 

বর্তমানে ঝিনাইদহের ১ লাখ ২৪ হাজার নাগরিক বিদেশে কর্মের জন্য অবস্থান করছেন। এর মধ্যে নারী রয়েছেন ১৪ হাজারেরও বেশি।

জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ৮ বছরে ঝিনাইদহ জেলা থেকে বিভিন্ন দেশে ৫৫ হাজার বেকার যুবক বিদেশ গেছেন। এর মধ্যে অন্তত ৪ হাজার নারী রয়েছেন।

তবে তাদের এই যাত্রা স্বস্তিদায়ক হচ্ছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতারিত হয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকে। 

সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের কর্মশালায় চাকরির জন্য বিদেশ গমনের এই তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা যায়, ২০১৫ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত জেলার সদর, হরিণাকুণ্ডু, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে অন্তত ২৫ যুবক সাগর পাড়ি দিয়ে বিদেশে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছেন।

এর মধ্যে সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের ৩ জন, পিরোজপুর গ্রামের ২ জন, মিয়াকুণ্ডু গ্রামের ৪ জন, মহামায়া ও গাড়ামারা গ্রামের ৮ জন, হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর ও সড়াবাড়িয়া গ্রামের ৮ জনসহ একাধিক যুবক রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে লাশ হয়ে ফিরে আসলেও বেশির ভাগ নিখোঁজ রয়েছেন।

জেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আব্দুল আলীম বলেন, ঝিনাইদহ জেলায় সবশেষ জরিপে ২০ লাখ ৫ হাজার জনসংখ্যা রয়েছে। এর মধ্যে ৩ দশমিক ১ শতাংশ বেকার। সে হিসেবে জেলায় বেকারের সংখ্যা হবে প্রায় ৬০ হাজার।

তবে সরকারি এই জরিপ সঠিক মনে করেন না অনেকেই। কারণ, প্রতিটি বাড়িতেই একাধিক বেকার যুবক রয়েছেন। বাড়ি বাড়ি কর্মক্ষম বেকার যুবক থাকায় দিন দিন সংসারে অশান্তি বেড়ে যাচ্ছে। চাকরি না পেয়ে অনেকে হতাশ হয়ে বিপথগামী হয়েছেন।

শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে অনেক চেষ্টা করেও তিনি চাকরি পাচ্ছিলেন না। তাই ৬ বছর আগে কর্মসংস্থানের জন্য তিনি কুয়েতে গেছেন।

জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সামিউল ইসলাম বলেন, এখন যারা বিদেশ যাচ্ছে তাদের মধ্যে মালয়েশিয়া ও সৌদি আরবে যাবার প্রবণতা বেশি। প্রতিমাসে আমাদের জেলা থেকে গড়ে ৮৩৩ জন মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে যাচ্ছেন। বর্তমানে জেলার ৬ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রয়েছেন।

জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে আসেন সদর উপজেলার চাপড়ী গ্রামের আব্দুল আলীম। তিনি বলেন, অনার্স পাস করার পর চাকরির জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো চাকরি পাইনি। তাই বাবার কিছু জমি বিক্রি করে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

এদিকে বেকার যুবকদের ভিসাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে ঋণ সুবিধা দিচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। ঝিনাইদহে ব্যাংকের শাখা স্থাপিত হওয়ার পর থেকে ৫ বছরে প্রায় ২ হাজার যুবককে ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। সে হিসেবে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে প্রায় ২২ কোটিরও বেশি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে।

ঝিনাইদহ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ রুস্তম আলী বলেন, আমাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বেকার যুবকদের দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। যাতে তারা বিদেশে গিয়ে ভালো বেতনে কাজ করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, কর্মী হিসেবে যারাই বিদেশে যাবেন, তাদেরই আমাদের এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। নইলে দালালের খপ্পরে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সুজন-এর জেলা কিমিটর সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী আমিনুর রহমান টুকু বলেন, অনেক বেকার যুবকদের মাঠে কাজ করা ছাড়া উপায় থাকে না। ফলে তারা বাধ্য হয়ে বিদেশে যাচ্ছেন। আর এই সুযোগে দালালদের মাধ্যমে বিদেশ পাড়ি দিয়ে প্রতারিত হয়ে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে অনেকেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নজর দেওয়া উচিত।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল কালের কণ্ঠকে বলেন, দক্ষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিদেশ গিয়ে অনেকেই ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আবার দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হয়ে অনেকে সর্বস্ব হারিয়েছেন। তাই বিদেশ গমনের আগে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যেতে হবে। এজন্য বর্তমানে সরকারিভাবে অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, দালালদের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ার বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

মন্তব্য

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দুই কারারক্ষী সাময়িক বরখাস্ত

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
শেয়ার
ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দুই কারারক্ষী সাময়িক বরখাস্ত
সংগৃহীত ছবি

ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ করাতে দুই কারারক্ষীর ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে জেলা কারাগারের সহকারী প্রধান কারারক্ষী আমিনুল ও কারারক্ষী রহিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বুধবার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে কারা কর্তৃপক্ষ এ ব্যবস্থা নেয়। 

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কারারক্ষী রহিম এক বন্দির স্বজনের সঙ্গে কথা বলছেন। সেখানে স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে টাকা লাগবে এমন দরদাম করছেন।

এরপর সহকারী প্রধান কারারক্ষী আমিনুল কারারক্ষী রহিমের সঙ্গে কথা বলেন এবং সাক্ষাতের জন্য ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ৪০০ টাকা গ্রহণ করেন। ভিডিওটি ভাইরালের পর অভিযুক্ত কারারক্ষী আমিনুল ও রহিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা সাময়িক বরখাস্তের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ওই ভিডিওটি নজরে আসার পর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ