মেরিনা বেসরা। ১৯৭৩ সালে অতিদরিদ্র সাঁওতাল পরিবারে বিয়ে হয় তার। দারিদ্রতার কারণে তিনি অন্যের জমিতে কাজ করে দিনে ৩০ টাকা এবং তার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করে দিনে ৪০ টাকা আয় করতেন। অভাবী এই সংসারে তাদের ঘর আলোকিত করে আসে তিন সন্তান।
মেরিনা বেসরা। ১৯৭৩ সালে অতিদরিদ্র সাঁওতাল পরিবারে বিয়ে হয় তার। দারিদ্রতার কারণে তিনি অন্যের জমিতে কাজ করে দিনে ৩০ টাকা এবং তার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করে দিনে ৪০ টাকা আয় করতেন। অভাবী এই সংসারে তাদের ঘর আলোকিত করে আসে তিন সন্তান।
সাঁওতাল সম্প্রদায়ে বসবাস করে নানাবিধ প্রতিকূলতাকে জয় করে প্রথম ছেলে ২০০১ সালে এইচএসসি পাশ করে বাংলাদেশ রাইফেলস্ (বিডিআর)- এ যোগদান করেন। দ্বিতীয় ছেলে ঢাকায় এনার্জি কোম্পানিতে কর্মরত আর তৃতীয় ছেলে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে ইংরেজীতে অনার্স সম্পন্ন করে ৩৩ তম বিসিএস- এ উত্তীর্ণ হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব পদে যোগদান করেছেন।
শুধু মেরিনা বেসরা নন। নিজ নিজ পেশায় সফল আরো চার নারীকে বিশেষ সম্মাননা দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে রংপুর পর্যটন মোটেলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই সম্মাননা দেয়া হয়।
পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন- অ্যাডভোকেট আনজুমান আরা শাপলা (সমাজ উন্নয়ন), হোসনে আরা বেগম (নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যানে জীবন শুরু), মেরিনা বেসরা (সফল জননী নারী), ফারহানা বিনতে আলম (শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সফল), মাছুমা খানম (অর্থনৈতিকভাবে সফল)।
এই আয়োজনে গিয়ে দপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান বলেছেন, নারীদের জন্য এটি একটি অনুপ্রেরণের জায়গা তৈরি করা। সেই সাথে নারীদের পাশাপাশি আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক অংশ পুরুষ, তাদের সহযোগিতা ছাড়া নারীদের সম্মানিত করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। নারীদের এই জয়যাত্রা আমরা পাশে রাখতে চাই আমাদের পুরুষদেরকে।
তিনি বলেন, নারী-পুরুষ সবাই একসঙ্গে কাজ করবে। রাস্তায় একসঙ্গে হাঁটতে পারবে। মাঝরাতে পুরুষ যেমন নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে, সেভাবে যেন নারীরাও চলাফেরা করতে পারে। আমরা সেরকম সমাজ চাই।
বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বিশেষ অতিথির রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, ডিসি রবিউল ফয়সাল, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (উপসচিব) মনির হোসেন প্রমুখ।
৫ কেটাগরিতে ৪০ জন অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে ৫ জন অদম্য নারীকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।
যশোরের অভয়নগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সুজল সরকার (২৪) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার হরিশপুর গ্রামে ঘরের পেছনে সেচযন্ত্রের সংযোগের জন্য বিদ্যুতের তার টানানোর সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনি মারা যান।
সুজল উপজেলার আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে এসএসসি পাস করেন। অর্থাভাবে তিনি আর লেখাপড়া করতে পারেননি।
সুজল সরকারের কাকা কল্লোল সরকার বলেন, সুজল সরকারের বাড়ির পেছনের দিকে বিলে ১৬ কাঠার ছোট একটি মাছের ঘের আছে। ওই ঘেরে বোরো চাষের সেচের জন্য একটি বৈদ্যুতিক মিটার ছিল।
তিনি আরও বলেন, ভবদহের কারণে মাছের ঘেরটি জলাবদ্ধ ছিল। সুজল সেচযন্ত্র দিয়ে সেচে ঘেরের মধ্যে বোরো ধান লাগিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রাকিবুল ইসলাম বলেন, মৃত অবস্থায় সুজল নামে এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হয়। সম্ভবত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়েছে।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমাদুল করিম বলেন, মরদেহের সুরতহাল সম্পন্ন হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকার বংশাল এলাকায় ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভ্যানচালক রিপন হোসেন মারা যান। দাফনের ৬ মাস পর ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার লামচর ইউনিয়নের পূর্ব পানপাড়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থান থেকে আদালতের নির্দেশনায় লাশটি উত্তোলন করা হয়।
রিপনের লাশ উত্তোলনের সময় রামগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবব্রত দাস উপস্থিত ছিলেন।
নিহত রিপন পূর্ব পানপাড়া গ্রামের ছত্তর ভূঁইয়া বাড়ির মৃত ইদ্রিস মিয়া ও সুফিয়া বেগম দম্পতির ছেলে। তিনি ঢাকায় ভ্যান চালাতেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বিকেলে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে রিপন গুলিবিদ্ধ হন। ৭ আগস্ট শ্যামলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শামীমা আক্তার রুমা বাদী হয়ে দুই শতাধিক লোককে আসামি করে রাজধানীর কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত রিপনের স্ত্রী শামীমা আক্তার রুমা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গুলি করে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। বিচার পেতে আমি মামলা করেছি।
রামগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবব্রত দাস বলেন, ‘মামলার তদন্তের প্রয়োজনে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।’
মাদারীপুরের শিবচরে এক নারীসহ ৪ মাদকসেবীকে আটক করেছে পুলিশ। প্রমাণ রাখতে ঘরের বাইরে থেকে গোপনে প্রথমেই নারী মাদকসেবীসহ ৪ জনের ইয়াবা সেবনের দৃশ্য নিজ মোবাইলে ধারণ করেন শিবচর থানার ওসি মো. রতন শেখ।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিবচর থানার ওসি মো. রতন শেখের নেতৃত্বে রবিবার ভোররাতে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাবলাতলা হাজী কাইমুদ্দিন শিকদার কান্দি গ্রামের কালু খানের বাড়িতে প্রবেশ করে পুলিশের একটি দল। এসময় ঘরের মধ্যে এক নারীসহ ৪ জন মাদকসেবী ইয়াবা সেবন করছিল।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারী ও অপর ৩ জন যুবক একটি ঘাটের উপর বসে ইয়াবা সেবন করছে। মোবাইলে ভিডিও ধারণ শেষে পুলিশ ঘর থেকে ইয়াবা সেবনরত অবস্থায় নারী মাদক কারবারি ওই গ্রামের মনির হাওলাদারের স্ত্রী রাসনা আক্তার (২৮), ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার জঙ্গরদী গ্রামের আরমান শেখ (৩২), মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার দক্ষিণ শায়েস্তাবাদ গ্রামের রেজা হাওলাদার ওরফে হৃদয় (২৭) ও মাদারীপুরের শফিকুল ইসলামকে (২৬) আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয় ও মাদক সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করে পুলিশ।
রবিবার বিকেলে আটককৃতদের মাদারীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মাদক আইনে মামলা হয়েছে।
শিবচর থানার ওসি রতন শেখ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বাড়িতে ভোররাতে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানকালে একটি ঘরের মধ্যে এক নারী ও তিনজন পুরুষ ইয়াবা সেবন করছিল।
সিলেটের বিশ্বনাথে পুকুরের পানিতে ডুবে মুনতাহা বেগম নামের ২১ মাস বয়সি এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে স্বজনরা। সে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের আজিজনগর গ্রামের আশিক আলীর মেয়ে।
স্থানীয় ইউপির ওয়ার্ড সদস্য আফিজ আলী বলেন, দুপুরে শিশুটি বাড়ির উঠানে খেলছিল।
একপর্যায়ে বাড়ির পাশের পুকুরে তার প্রাণহীন দেহ ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।