ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে ট্যানারি শ্রমিকদের কর্মবিরতি-বিক্ষোভ

সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা
শেয়ার
ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে ট্যানারি শ্রমিকদের কর্মবিরতি-বিক্ষোভ
সংগৃহীত ছবি

সরকার ঘোষিত পাঁচটি গ্রেডে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি এবং বিক্ষোভ করেছেন সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে কর্মরত বিভিন্ন ট্যানারির শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ব্যানারে সাভারের হরিণধরা এলাকায় অবস্থিত বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী আন্দোলনকারী শ্রমিকরা জানান, 'দীর্ঘ ১৩ মাস ধরে আমরা অপেক্ষা করছি, এখন আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছি।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।'

বাধ্য হয়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, অন্যান্য সেক্টরে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার পরপরই তা বাস্তবায়ন হলেও ট্যানারি শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি এখনও বাস্তবায়ন করেননি মালিকরা। বিভিন্ন টাল বাহানায় মালিকপক্ষ শুধু কালক্ষেপণই করছে।

ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সদস্য ও শিল্পনগরীর এপেক্স ট্যানারিতে কর্মরত নারী শ্রমিক নিলুফা আক্তার বলেন, 'সরকার আমাদের জন্য মোট পাঁচটি গ্রেডে মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে।

যেখানে সর্বনিম্ন মজুরি ১৮ হাজার এক টাকা এবং সব পক্ষের সম্মতিতেই এ নতুন মজুরি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মালিকরা এখন এসে বলে এ মজুরি তাদের জন্য বেশি হয়ে গেছে।'

ফারুক হোসেন নামের আরেক শ্রমিক বলেন, 'গত বছরের ২১ নভেম্বর সরকার আমাদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু এখনও সেই মজুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি।

আমাদের পেটে ক্ষুধা, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে আগের বেতনে আর সংসার চলে না। সেইজন্য ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এটি চলবে।'

ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, ‘গত নভেম্বরে ট্যানারি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করার পর থেকে বিভিন্ন সময় মালিকপক্ষের সঙ্গে বহুবার আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনোভাবেই মালিকপক্ষ সরকার ঘোষিত নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করেনি।

ফলে শ্রমিকরা এখন কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে, আন্দোলন করছে। আজকের কর্মসূচি চলমান আন্দোলনেরই অংশ।'

ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ট্যানারি শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরির যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এটি এখনই বাস্তবায়ন করতে হবে। এখন কোনটি মানা হবে, কোনটি মানা হবে না এমন আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। মালিকপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছেন। এরপরও মালিকপক্ষ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করলে ওভারটাইম না করার যে সিদ্ধান্ত আছে, সেটি কার্যকর করা হবে।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্লা বলেন, মজুরি সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চলছে। রবিবার লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) উপদেষ্টা অসুস্থ থাকায় সবার সম্মতিতে পরবর্তী একটি তারিখ নির্ধারণ করে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান করা হবে।

গত বছরের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ট্যানারি শিল্পের শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য ন্যূনতম মজুরিসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ট্যানারি শিল্পের নতুন মজুরি কাঠামোতে সর্বোচ্চ বা প্রথম গ্রেডে আছেন স্কিন সিলেক্টর বা হ্যান্ড মেজারার, বৈদ্যুতিক ও মেশিন মেরামত মিস্ত্রি, হ্যান্ড ফ্রেশার ম্যান ও বয়লার অপারেটরসহ ১৩ ধরনের শ্রমিক। 

প্রথম গ্রেডের শ্রমিকের জন্য ন্যূনতম মজুরি ধরা হয়েছে হয়েছে ৩৪ হাজার ১৬৮ টাকা, দ্বিতীয় গ্রেডে ২৮ হাজার ৩৮৮ টাকা, তৃতীয় গ্রেডে ২৪ হাজার দুই টাকা এবং চতুর্থ গ্রেডে ২০ হাজার ৯৯৩ টাকা। এই চার গ্রেডের বাইরে অদক্ষ সাধারণ ও অন্য শ্রমিকদের পঞ্চম গ্রেডে ১৮ হাজার এক টাকা নির্ধারণ করা হয়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুতে তোলপাড়

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুতে তোলপাড়
সংগৃহীত ছবি

কুমিল্লায় গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক এক যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় সারা দেশ তোলপাড়। নিরাপত্তা হেফাজতে বেসামরিক নাগরিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। নিহতের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, অমানবিক নির্যাতনের ফলে মো. তৌহিদুল ইসলাম (৪০) নামে ওই যুবদল নেতা মারা গেছেন। 

শুক্রবার দুপুরে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের কমান্ডারকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার এবং মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনে একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্তদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। 

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার এ মৃত্যুর ঘটনায় জরুরি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস যে কোনো ধরনের হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জরুরি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বিবৃতিতে যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর যুবদল নেতার মৃত্যুতে উদ্বেগ জানিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

নিরাপত্তা হেফাজতে নিহত তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ইটাল্লা গ্রামের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম বন্দরে একটি শিপিং এজেন্ট কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

রবিবার তাঁর বাবা মোখলেছুর রহমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ি ফেরেন। শুক্রবার বাবার কুলখানির কথা ছিল। তিনি চার কন্যাসন্তানের জনক।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বলেন, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয় তৌহিদুল ইসলামকে নিয়ে যেতে। পুলিশ তাকে হস্তান্তরের সময় তিনি অচেতন অবস্থায় ছিলেন।

হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে তাকে কেন আটক করা হয়েছিল বা কীভাবে মৃত্যু ঘটেছে, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তৌহিদুলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তৌহিদুল ইসলামের ভাই সাদেকুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তারা বাবার কুলখানির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাড়ি আসেন। তাদের সঙ্গে পুলিশের পোশাক পরা কাউকে দেখা যায়নি, তবে সাদা পোশাকে পাঁচজন যুবক ছিলেন। তারা তৌহিদুলকে আটক করেন, এরপর সবার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ঘরে তল্লাশি করেন, কিন্তু কিছু পাননি। তৌহিদুলকে আটকের কারণ জানতে চাইলেও কোনো উত্তর দেননি এবং তাকে গাড়িতে করে নিয়ে যান। 

সকালে আবারও সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাড়ি এসে ব্যাপক তল্লাশি করেন উল্লেখ করে সাদেকুর রহমান বলেন, সকালেও তৌহিদুল তাদের গাড়িতে ছিলেন। কিন্তু তাকে গাড়ি থেকে নামানো হয়নি। দূর থেকে তাকে নিস্তেজ মনে হচ্ছিল। 

তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার বলেন, ‘আমার চারটি মেয়ে এখনো ছোট। আমি জানি না কীভাবে তাদের নিয়ে বাঁচব। আমার স্বামী কোনো অপরাধ করেনি। তাকে কেন নির্যাতন করে হত্যা করা হলো? আমি পুরো ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং বিচার চাই।’

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ ছিল না। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ইলেকট্রিক শক দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। আমরা পুরো ঘটনার তদন্ত চাই।’ 

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তানভীর আহমেদ বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরের দিকে পুলিশ তৌহিদুল ইসলামকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। পরীক্ষানিরীক্ষার পর দেখা যায়, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন।’

কমান্ডার প্রত্যাহার, বিচার হবে সেনা আইনে : গতকাল আইএসপিআর বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘৩১ জানুয়ারি ৩টয় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে আটক মো. তৌহিদুল ইসলাম (৪০) একই দিন সাড়ে ১২টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এ অনাকাক্সিক্ষত ও দুঃখজনক ঘটনাটি তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডারকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্ঘাটনের জন্য একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, তদন্তের নির্দেশ : কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটকের পর যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনা জরুরি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লায় তরুণ তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জরুরি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে কোনো ধরনের হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

যুবদল নেতাকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে : মির্জা ফখরুল : কুমিল্লায় যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামকে সাদা পোশাকধারী লোকেরা ‘নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে সরকার ও প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসররা এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, তার অনসুন্ধান জরুরি বলেও দাবি করেন তিনি। 

গতকাল বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আমলে এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি আরও বলেন, ‘কোনো সরকারি বাহিনীই আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। অপরাধ সংঘটনকারী যতই শক্তিশালী হোক, তাকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া আইনের শাসনের অন্যতম শর্ত। আামি তৌহিদুল ইসলামকে হত্যার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই।’

যুবদলের নিন্দা ও প্রতিবাদ : জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন যৌথ বাহিনী কর্তৃক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামকে নৃশংসভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। নেতৃদ্বয় এ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।

ছাত্রদলের প্রতিবাদ : যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। গতকাল বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকারের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারকে অতিদ্রুত সব রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

ছাত্রশিবিরের প্রতিবাদ : যুবদল নেতা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম যৌথ বিবৃতিতে বলেন, একটি সভ্য দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হলো নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যুবদল নেতার এ হত্যাকা  ফ্যাসিবাদের সেই নির্মম হত্যাযজ্ঞেরই পুনরাবৃত্তি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উদ্বেগ : যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুতে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। 

গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ ও বিচার দাবি করে বলা হয়, তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো অস্ত্র থাকার অভিযোগ ছিল না এবং তাকে অজ্ঞাত কারণে গভীর রাতে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা থানায় যোগাযোগ করেও কোনো খোঁজ পাননি। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় পরিবারের সদস্যরা এ মৃত্যুকে পরিকল্পিত ও সন্দেহমূলক দাবি করেছেন। 

আসক মনে করে, এ ধরনের ঘটনা মানবাধিকার ও আইনের শাসনের পরিপন্থি। আটক ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আসক এ ঘটনার স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও দ্রুত বিচারিক তদন্ত এবং দায়ীদের যথাযথ আইনি শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে।

এমএসএফ : এদিকে যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘স্বজনদের দাবি, আটকের পর অমানবিক নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের শরীরে নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত নির্যাতনে মৃত্যুর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

নবীনগরে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যুবকের মৃত্যু, চালক আহত

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
শেয়ার
নবীনগরে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যুবকের মৃত্যু, চালক আহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় শিহাব উদ্দিন (২৬) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলচালক বোরহান মিয়া (২৬)।

আজ রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে জেলার নবীনগর-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের আলীয়াবাদ পুরান গ্যারেজের কাছে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

আরো পড়ুন
গোপনে টিউলিপের তথ্য নিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা

গোপনে টিউলিপের তথ্য নিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা

 

নিহত শিহাব উদ্দিন রফিক মিয়ার ছেলে।

মোটরসাইকেলের চালক বোরহান মিয়া ফরিদ মিয়ার ছেলে। তাদের দুজনেরই বাড়ি নবীনগর পৌর এলাকার আলীয়াবাদ গ্রামে। সম্পর্কে তারা আপন চাচাতো ভাই।

জানা যায়, দুর্ঘটনার পরপরই লোকজন দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শিহাবকে মৃত ঘোষণা করেন।

 আশঙ্কাজনক অবস্থায় বোরহানকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

নবীনগর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক কালের কণ্ঠকে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আজ রবিবার সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে দুই চাচাতো ভাই বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলে উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের সলিমগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সামান্য দূরে যাওয়ার পরই আলীয়াবাদ পুরান গ্যারেজের কাছে একটি গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সজোরে ধাক্কা খায়।’

আরো পড়ুন
ট্রাম্পের নির্দেশে সোমালিয়ায় মার্কিন বিমান হামলা

ট্রাম্পের নির্দেশে সোমালিয়ায় মার্কিন বিমান হামলা

 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার (সাকমো) রুখসানা খাতুন বলেন, ‘ওই দুর্ঘটনার পরপরই লোকজন দুজনকে সরকারি এই হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

তবে হাসপাতালে আনার আগেই ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন। অপর গুরুতর আহত যুবককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আমরা ঢাকায় পাঠাই।’

মন্তব্য

ছেলের বৌ-ভাত থেকে আটক হলেন আওয়ামী লীগ নেতা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ছেলের বৌ-ভাত থেকে আটক হলেন আওয়ামী লীগ নেতা
সংগৃহীত ছবি

চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাস এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ছেলের বৌ-ভাত অনুষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ফখরুল আনোয়ারকে আটক করা হয়েছে। তিনি ফটিকছড়ি আসনের সাবেক এমপি রফিকুল আনোয়ারের ছোট ভাই। শনিবার (১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে খুলশী থানা পুলিশ তাকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আরো পড়ুন
চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১০ জন গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১০ জন গ্রেপ্তার

 

জানা গেছে, টাইগারপাস এলাকার নেভী কনভেনশন হলে সাবেক এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনির চাচা ফখরুল আনোয়ারের ছেলের বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান চলছিল।

অনুষ্ঠানে সনি ও সাবেক এমপি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী উপস্থিত থাকার কথা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় সেখানে ছাত্র-জনতা হাজির হয়ে স্লোগান দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে ফখরুল আনোয়ারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের নাতনির সঙ্গে ফখরুল আনোয়ারের ছেলের বিয়ে পরবর্তী শনিবার রাতে বৌ-ভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল নেভি কনভেনশন হলে।

রাত ৯টার দিকে বিয়েতে আসা কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাদের উপস্থিতির বিষয়টি সমন্বয়কদের অবগত করেন।

আরো পড়ুন
আ.লীগের নাম উচ্চারণ করলে পিটিয়ে গ্রাম ছাড়া করার ঘোষণা

আ.লীগের নাম উচ্চারণ করলে পিটিয়ে গ্রাম ছাড়া করার ঘোষণা

 

হঠাৎ করেই শতাধিক যুবক কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে জড়ো হয়। তারা এ সময় ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে। তারা ফখরুল আনোয়ারকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ফখরুল আনোয়ারকে আটক করে।

আরো পড়ুন
বরিশালের আবাসন খাত : ১৮৩০ কোটি টাকার বিনিয়োগ আটকা দুই বছর

বরিশালের আবাসন খাত : ১৮৩০ কোটি টাকার বিনিয়োগ আটকা দুই বছর

 

সিএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) মুহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা রয়েছে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল।

মন্তব্য

চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১০ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১০ জন গ্রেপ্তার
ছবি : কালের কণ্ঠ

চট্টগ্রামের সদরঘাট থানার নেভাল-২ এলাকায় মিছিলের প্রস্তুতিকালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিম কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযুদ্ধ ছাত্রমঞ্চের সক্রিয় নেতা সাব্বিরের নেতৃত্ব নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সক্রিয় কর্মীরা মিছিলসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

এমন সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- সাব্বির হোসেন (২৩), মোহাম্মদ সাজিদ ইরফান (২০), কামরুল ইসলাম ওয়াসিম (১৯), সাজ্জাদ হোসেন মারুফ (২০), আবু বক্কর সিদ্দিক (২৩), মোহাম্মদ শাহিদ সাব্বির (২২),  তন্ময় দাশ (২৩),  নিলয় শীল (২৩), কৌশিক ধর (২২) ও সোলেমান আহমেদ (২৫)।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ