মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে যা বললেন আবরারের মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া
শেয়ার
মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে যা বললেন আবরারের মা
ছবি : কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আবরারের মা রোকেয়া খাতুন। তিনি দ্রুত রায় কার্যকর ও পলাতক আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে আজ রবিবার (১৬ মার্চ) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় আদালতকক্ষে আবরার ফাহাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আদালতের রায় শোনার পরে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাসায় আবরারের মা রোকেয়া খাতুন, দাদা আব্দুল গফুর বিশ্বাস, মেজো চাচি নিলুফা ইয়াসমিন ও সেজো চাচি মমতাজ বেগমও রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আরো পড়ুন
ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৫, ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও

ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৫, ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও

 

শহীদ আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় হাইকোর্ট আজ যে রায় দিয়েছেন তাতে আমি সন্তোষ প্রকাশ করছি। শুধু আমরা নয়, সারা দেশের মানুষও সন্তুষ্ট।

২০২২ সালের রায় বহাল রয়েছে। প্রথম যখন রায় ঘোষণা করা হয়েছিল, সে রায়েও দেশবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছিল। আমি বর্তমান সরকার, বিচার বিভাগের সংশ্লিষ্টরা, ছাত্রজনতা, সাংবাদিক ও দেশবাসীর সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মৃত্যুর চার বছর পরেও আমার সন্তানকে কেউ ভুলে যায়নি।
সবাই আমার আবরারকে মনে রেখেছে, কেউ ভুলে যায়নি।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান র‍্যাগিংমুক্ত থাক। বর্তমানে যেমন জুলুম-অত্যাচার নেই। তেমন যেন সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব সময় নিরাপদ থাকে। ভবিষ্যতে যেন আমার মতো কাউকে সন্তান হারাতে না হয়।

শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন লক্ষ্য যেন ধ্বংস না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যে রায় হয়েছে, সেটা দ্রুত কার্যকর করা হোক। যাতে আবরারের মতো কাউকে জুলুম-অত্যাচার করতে না পারে কেউ। এ রকম কাজ করার কেউ সাহস না পাই। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উচিত, শিক্ষার্থীদের ছেলের মতো করে দেখা। পিতামাতার মতো শাসন করতে হবে।’

আরো পড়ুন
মদন পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মদন পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু (মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মোজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুর রহমান মাজেদ (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামছুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং এসএম মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)। 

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামি হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), সদস্য আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ)।

আরো পড়ুন
বইটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, সম্পূর্ণ গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস না : আসিফ মাহমুদ

বইটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, সম্পূর্ণ গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস না : আসিফ মাহমুদ

 

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করে সংগঠনটির ক্যাডাররা। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।  

আবরার ফাহাদ ১৯৯৮ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. বরকত উল্লাহ এবং মায়ের নাম রোকেয়া খাতুন।

আবরার কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং পরে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। নটর ডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ আবরার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। তার ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বর্তমানে বুয়েটে মেকানিক্যাল বিভাগে অধ্যয়নরত।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি, প্রবাসীর স্ত্রীকে জরিমানা

সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি, প্রবাসীর স্ত্রীকে জরিমানা

ফরিদপুর চরভদ্রাসনে অবৈধভাবে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির অপরাধের সঙ্গে জড়িত মনিরা বেগম নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুর ৪টার দিকে উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নে কানাইরটেক গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত ফারাবী। এসময় চরভদ্রাসন থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শেখ ফরহাদ, ভূমি কার্যালয়ের সার্টিফিকেট পেশকার রাসেল মুন্সী উপস্থিত ছিলেন।

এ ঘটনায় ভেকু মেশিনের ব্যাটারি ও যন্ত্রপাতি জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত মনিরা বেগম উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের কানাইরটেক গ্রামের প্রবাসী মঞ্জু মৃধার স্ত্রী। 

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিশাত ফারাবী বলেন, ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির অপরাধের সঙ্গে মনিরা বেগম নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কৃষি জমিতে যেন কেউ অবৈধভাবে মাটি কাটতে না পারে সেজন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্য

ফেসবুকে মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটুক্তি, ছাত্রলীগ নেতা আটক

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
শেয়ার
ফেসবুকে মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটুক্তি, ছাত্রলীগ নেতা আটক

নাটোরের সিংড়ায় ফেসবুকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটুক্তি করার অভিযোগে সাকিবুল হাসান স্বচ্ছ নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিংড়া বাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। সাকিবুল হাসান স্বচ্ছ খাজুরা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ফেসবুকের একটি রাজনৈতিক পোস্টের কমেন্ট সেকশনে মন্তব্য করতে গিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটুক্তি করেছে ওই ছাত্রলীগ নেতা।

এমন অভিযোগ উঠলে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপরে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা থানায় বিচার দাবি করেন এবং একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ বিষয়ে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, মহানবীকে কটুক্তির ঘটনায় একজনকে আটক করেছি। এ বিষয়ে তদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

মন্তব্য

চট্টগ্রামে বাসায় ডেকে নিয়ে নারীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
চট্টগ্রামে বাসায় ডেকে নিয়ে নারীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
সংগৃহীত ছবি

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকায় এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মো. মনজুর আহমেদ মঞ্জু (৩৮) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণে সহযোগিতার করা অভিযোগে মঞ্জুর বন্ধু মো. সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার (১৬ মার্চ) তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

তিনি বলেন, রবিবার দুপুর ৩টার দিকে ভুক্তভোগী নারীকে পতেঙ্গা থানার হাদীপাড়া শাওনের ভাড়াঘর নিচতলায় ডেকে নিয়ে যায় সাইফুল। রুমে নিয়ে মো. সাইফুল তার বন্ধু মো. মনজুর আহমদের সঙ্গে ভিকটিম নারীকে পরিচয় করিয়া দেয়। পরে সাইফুল ভিকটিমকে রুমে বসার জন্য বলে নিজে বাসার বাইরে চলে যায়। এই সুযোগে মো. মনজুর আহমেদ নারীকে ধর্ষণ করেন।

পরে এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী পতেঙ্গা থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার ১ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

মন্তব্য

ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে স্বজনদের ভাঙচুর

কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
শেয়ার
ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে স্বজনদের ভাঙচুর
নিহত ইমরান হোসেন। ছবি : কালের কণ্ঠ

কুমিল্লা নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১৬ মার্চ) রাতে কুমিল্লা নগরীর ট্রমা হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই নিহতের  স্বজনরা ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে দাবি তুলে হাসপাতালের বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর চালায়।

এদিকে হাসপাতাল ভাঙচুর চলাকালে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা পালিয়ে গেছে বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।

পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

নিহত ইমরান হোসেন (২১) কুমিল্লা নগরীর ১৪নং ওয়ার্ড ২য় মুরাদপুর এলাকার দুবাই প্রবাসী হুমায়ুন মিয়ার ছেলে। 

নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, ইসমাইল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিল। পরে, কুমিল্লা নগরীর ট্রমা হাসপাতালে ডা. আতাউর রহমানের কাছে চিকিৎসা নিতে আসলে চিকিৎসক ইসমাইলকে সার্জারি করার পরামর্শ দেন।

পরে শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ৮টায় সার্জারি করার উদ্দেশ্যে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। চার ঘণ্টার অপারেশনের সময়ের কথা জানালেও অপারেশন সম্পন্ন হয় সাত ঘণ্টায়। পরে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে রোগীকে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।

ঘটনার দিন রবিবার বিকালে রোগীর কোনো সাড়া শব্দ না পাওয়ায় রোগীর স্বজনরা রোগী মারা গেছে দাবি করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার কথা বলে।

বিকাল পার হয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেনি। বরং রোগীকে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধ আনায় রোগীর স্বজনদের দিয়ে।

নিহত ইসমাইলের চাচা জাকির হোসেন বলেন, আমার ভাতিজাকে তারা সামান্য অপারেশনের কথা বলেছিল। কিন্তু, তারা সাত ঘণ্টা ওটিতে রেখেছিল। পরে রোগীর সমস্যা হয়েছে এ কথা বলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার কথা বলে।

আমরা রাজি হই। কিন্তু লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার পর প্রায় ৩ দিন হয়ে গেলেও তারা আমাদের রোগীকে দেখতে দেয়নি। পরে নানা অজুহাতে আইসিউতে ঢুকে দেখি যে আমাদের রোগী মৃত। কিন্তু তারপরও তারা মৃত রোগীর চিকিৎসা করানোর জন্য পরীক্ষা ফি ও ওষুধ কিনিয়েছে আমাদেরকে দিয়ে। তারা আমাদেরকে ২৫ হাজার টাকার অপারেশনের কথা বলে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেয় ধাপে ধাপে। একজন রোগীর ৩ দিনে লাখ টাকার ওষুধ কিভাবে লাগে। তাদের গাফিলতির কারণে আমাদের রোগী মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই। এদিকে, রোগী মারা যাওয়ার খবর জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতাল ভাঙচুর চালায়।

রোগীর মা নাজমা বেগম বলেন, ট্রমা হাসপাতালের ডা. আতাউর রহমান শুক্রবার সকাল ৮টায় আমার ছেলের অপারেশন করায়। মারা গেছে রবিবার বিকাল ৫টা বাজে, কিন্তু সন্ধ্যা পার হয়ে গেলেও তারা জানায়নি। রাতে আমরা মারা যাওয়ার খবর পাই। তারা মারা যাওয়ার পরেও ওষুধ আনতে বলেছিল আমাদের। আমরা রোগী মারা গেছে দাবি করার পর তারা ওষুধ ফেরত পাঠায়। এটা রাত ৯টার ঘটনা। ডাক্তারের কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলতেও রাজী হয়নি। তারা আমার ছেলেকে অবহেলায় মেরে ফেলেছে। তারা কয়েক দফায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলে টাকা নিয়েছে। কিন্তু একবারও বলেনি আমার ছেলে মারা গেছে।

রাতে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ