ফেসবুকে করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার রাতে উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লক্ষীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে জামায়াতের সমর্থক মো: তারেক চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা হয়।
সে সময় এ নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করেন স্থানীয়রা। গত ১৩ মার্চ সেই পুরনো একটি স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেন যুবদলকর্মী হৃদয়। এ ঘটনার জের ধরে ১৬ মার্চ হৃদয়কে স্থানীয় লক্ষীপুর বাজারে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা মারধর করেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য পরদিন রাতে একটি সালিশি সভার আহ্বান করা হয়। তবে সভা শুরুর আগেই দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হন উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর। খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আলকরা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো: শরিফ বলেন, ২০২০ সালে স্থানীয় জামায়াত সমর্থক মো: তারেক চৌধুরী এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। সে সময় স্থানীয়রা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল। ১৩ মার্চ ওই স্ট্যাটাসে যুবদলের কর্মী হৃদয় মন্তব্য করে লিখেন— এ ঘটনায় তো এখনও ধর্ষণকারীর বিচার হয়নি। এর জের ধরেই তারা হৃদয়কে মারধর করেছে।
ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সোমবার রাতে বিচারের নামে তারা আমাদেরকে ডেকে নিয়ে হামলা করেছে। এতে সবুজ, নাহিদ, রিসাদ, বাবলু গুরুতর আহত হয়েছে। এ ছাড়াও আমাদের আরো ৫ জন কর্মী আহত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়ীঘরে ভাংচুর চালায়।
অন্যদিকে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো: বেলাল হোসেন বলেন, ফেসবুকে মন্তব্যকে ঘিরে এ ঘটনার সূত্রপাত। বিএনপির লোকজন পূর্ব পরিকল্পনা করে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এতে হানিফ, জাহিদ, সাকিল, কুসুম, শরীফ ও নাছিরসহ আমাদের ১০ জন কর্মী আহত হয়েছেন। আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়ীঘর ভাংচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিঃ শাহ আলম বলেন, জামায়াত পূর্ব পরিকল্পনা করে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: হিলাল উদ্দিন বলেন, হৃদয় এবং মো: তারেক চৌধুরী প্রতিবেশী। ফেসবুকে করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষটি রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।