বড় ভাইয়ের ৫ দিন পর মিলল ছোট ভাইয়ের মরদেহ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বড় ভাইয়ের ৫ দিন পর মিলল ছোট ভাইয়ের মরদেহ

সিলেটের জৈন্তাপুরে বড় ভাইয়ের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যুর পাঁচ দিন পর প্রতিবন্ধী ছোট ভাইয়ের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২১ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল ইউনিয়নের নয়াগ্রাম ব্রিজের পাশে একটি ডোবা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত শিশু জারিফ আহমদ (৮) জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের সারিঘাট চৈলাখেল গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। এর আগে গত ১৬ মার্চ নিখোঁজ থাকা জারিফের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলমের মরদেহ শনাক্ত করেন তার বাবা।

দুই ভাইয়ের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যুর ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুলিশ বলছে, তদন্ত করে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা হবে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবন্ধী শিশু জারিফ আহমদকে (৮) চিকিৎসা করানোর জন্য গত ৮ মার্চ বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম (২৬)। এর দুই দিন পর ১০ মার্চ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল এলাকায় আহত অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলমকে পাওয়া গেলেও শিশু জারিফের সন্ধান মেলেনি।

 

এরপর চিকিৎসার জন্য জাহাঙ্গীরকে ভর্তি করা হয় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে ১১ মার্চ বাবা জামাল উদ্দিন নামাজে গেলে ফের নিখোঁজ হন জাহাঙ্গীর আলম। নিখোঁজ থাকা অবস্থায় গত ১৬ মার্চ রোববার জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশের সহায়তায় বাবা জামাল উদ্দিন মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে ময়নাতদন্ত শেষে ১৭ মার্চ জাহাঙ্গীরের মরদেহ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

তবে নিহতের পরিবার জানায়, সে সময় পুলিশ জানিয়েছিল জাহাঙ্গীর আলম মৌলভীবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে তাকে মৌলভীবাজার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে অজ্ঞাত কিছু লোক তাকে ওসমানী হাসপাতালে পাঠায়। এরপর ১৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাহাঙ্গীর।

এদিকে শুক্রবার (২১ মার্চ) সকালে কানাইঘাটে নয়াগ্রাম ব্রিজের পাশ থেকে এক শিশুর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিচয় শনাক্তের পর জানা যায় শিশুটি জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের সারিঘাট চৈলাখেল গ্রামের জামাল উদ্দিনের প্রতিবন্ধী ছেলে জারিফ আহমদ।

পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ বক্সে দায়িত্বরত জেলা পুলিশ সদস্য শুভ বলেন, কানাইঘাট থেকে একটি শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে আনা হয়েছে। সব কাগজপত্র না থাকায় শুক্রবার ময়নাতদন্ত হয়নি। শনিবার ময়নাতদন্ত হবে।

জাহাঙ্গীর ও জারিফের বাবা জামাল উদ্দিন জানান, তার দুই স্ত্রীর সংসারে ১০ জন ছেলে-মেয়ে। এর মধ্যে বড় স্ত্রী ছলিমা বেগমের দুই ছেলে জাহাঙ্গীর ও জারিফ আহমদ নিখোঁজের পর জৈন্তাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু নিখোঁজের পর বড় ছেলের মরদেহ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পাঁচ দিন পর প্রতিবন্ধী শিশু ছেলেরও গলিত মরদেহ কানাইঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কী কারণে দুই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, তার কোনো কিছুই জানেন না তিনি। কারো সঙ্গে পূর্বশত্রুতাও নেই বলে জানান তিনি।

কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, ‘বড়চতুল ইউনিয়নের নয়াগ্রাম ব্রিজের পাশে এক শিশুর গলিত মরদেহের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেটি উদ্ধার করেছে। পরিচয় শনাক্তের পর জানা গেছে, গলিত মরদেহটি জৈন্তাপুর উপজেলার জামাল উদ্দিনের নিখোঁজ প্রতিবন্ধী ছেলে জারিফ আহমদের।'

তিনি বলেন, ‘মরদেহের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে কি না এ অবস্থায় বোঝা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামান বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর পর ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে আমাদের খবর দেওয়া হলে আমরা নিহতের বাবাকে ডেকে এনে বিষয়টি অবহিত করি। পরে ময়নাতদন্ত শেষে জাহাঙ্গীরের বাবা মরদেহ গ্রহণ করেন। এ ঘটনার পর ১৯ মার্চ আমরা জাহাঙ্গীরের বাবাকে ডেকে এনে সাধারণ ডায়েরি দাখিল করানোর ব্যবস্থা করি। আজ ছোট ভাইয়ের মরদেহ কানাইঘাট থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।’

ওসি বলেন, ‘নিহত দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও ছোট ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের বাবার আলাদা সংসার রয়েছে। এ ঘটনার পেছনে তৃতীয় পক্ষ থাকতে পারে। যার জন্য জারিফের মরদেহ কানাইঘাটে নিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনাটি রহস্যজনক। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রংপুরে সেনাবাহিনীর ভুয়া মেজরসহ আটক ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
শেয়ার
রংপুরে সেনাবাহিনীর ভুয়া মেজরসহ আটক ৫
আটক ফজলে রাব্বি। ছবি : সংগৃহীত

রংপুরে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় ফজলে রাব্বি (২৮) নামে এক ভুয়া মেজরকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এ সময় আরো ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর পরিচয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন তারা।

আজ সোমবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে রংপুর নগরীর জাহাজ কম্পানি মোড় এলাকা থেকে জনতার সহযোগিতায় তাদের আটক করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ূন কাইয়ুম।

আরো পড়ুন
‘সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা যাবে না’, ছাত্রনেতাদের উদ্দেশে আরো যা বললেন নুর

‘সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা যাবে না’, ছাত্রনেতাদের উদ্দেশে আরো যা বললেন নুর

 

তিনি জানান, ভুয়া মেজরের কাছ থেকে ভুয়া আইডি কার্ড, ৪টি মোবাইল ফোন, ওয়াকি-টকি, ইয়ামাহা মোটরসাইকেল, নগদ ২ লাখ ৯০ হাজার ৫৬৫ টাকাসহ সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণামূলক বিভিন্ন কাগজপত্র সনদ উদ্ধার করা হয়েছে। আটক রাব্বি ঠাকুরগাঁও জেলার মোকতার আলমের ছেলে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঈদের বাজার করতে রংপুরের জাহাজ কম্পানি মোড় সংলগ্ন রয়্যালটি মেগা মলে নেমে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত মো. ফজলে রাব্বিসহ বেসামরিক পোশাকে আরো ৪ জনকে দেখতে পান সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ূন কাইয়ুম।

এ সময় তিনি তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তাদের ধাওয়া করে ভুয়া সেনাবাহিনী বলে চিৎকার দিলে স্থানীয় জনতা রাব্বিকে আটক করে। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দেন মো. রাব্বি। পরে নিকটবর্তী সেনাক্যাম্প তাকে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি সেনাবাহিনীর সদস্য নন বলে জানান।
 পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে পালিয়ে যাওয়া আরো ৪ সদস্যকে আটক করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে রাব্বি জানান, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বেকার যুবকদের সেনাবাহিনীর চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

৭৫ কোটি টাকায় সংস্কারের ৪৮ দিনে মাথায় বন্ধ তিতাসের গ্যাসকূপ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৭৫ কোটি টাকায় সংস্কারের ৪৮ দিনে মাথায় বন্ধ তিতাসের গ্যাসকূপ
প্রতীকী ছবি

তিতাস গ্যাসফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপের সংস্কারকাজ (ওয়ার্কওভার) শেষে মাত্র ৪৮ দিন গ্যাস তোলার পর ফের বন্ধ হয়ে গেছে। এবার কূপটি কতদিনে পুনরায় চালু করা যাবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। 

অভিযোগ উঠেছে, ভালো করে যাচাই না করেই বন্ধ কূপটি ওয়ার্কওভার প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করেছিল বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)। বিজিএফসিএল’র এমডি সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ঘনিষ্ঠজন প্রকৌশলী ফজলুল হক এবং প্রকল্প পরিচালকের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এমনটা হয়েছে।

জানা গেছে, বিজিএফসিএল পরিচালিত তিতাস গ্যাসফিল্ডের ২৭টি কূপের মধ্যে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে ৫টি কূপ। বাকি ২২টি কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। কূপগুলোতে মজুত কমতে থাকায় ক্রমাগত গ্যাসের উৎপাদন কমছে। এমন বাস্তবতায় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে ৫২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন গ্যাসফিল্ডের ৭টি কূপের সংস্কারকাজ হাতে নেয় বিজিএফসিএল।

এরমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-বিশ্বরোড এলাকায় অবস্থিত তিতাসের ১৪ নম্বর কূপটির সংস্কারকাজ শুরু হয় গেল বছরের ১৯ মার্চ। ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়ার্কওভার শেষে একই বছরের ২১ মে কূপটি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এরপর ২৫ মে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয় কূপটি থেকে।

জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তৎকালীন জ্বালানি সচিব মো. নুরুল আলম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওয়ার্কওভার প্রকল্পের পরিচালক ইসমাইল মোল্লা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, কূপটি থেকে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত ৪০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৬শ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলেও জানান তিনি। কিন্তু ৪৮ দিনে মাত্র ২৫৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয় ১৪ নম্বর কূপ থেকে। এরপর এটি বন্ধ হয়ে যায়।

জানা গেছে, এক সময় কূপটি থেকে দৈনিক ২৯ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন হতো। তবে গ্যাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় পানি ওঠার কারণে ২০০৯ সালে কূপটি ওয়ার্কওভার করে দৈনিক ১৯ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন করা হয়। তবে গ্যাসের সঙ্গে পানি ওঠার হার বৃদ্ধির কারণে ২০২১ সালের নভেম্বরে কূপটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

১৪ নম্বর কূপের ব্যর্থতার মধ্যেই গেল বছরের শেষদিকে ১৬ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার কাজ শুরু করে বিজিএফসিএল। যদিও কূপটি আগে থেকেই সচল ছিল। এ কূপটি থেকে আগে প্রতিদিন ১৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হলেও ত্রুটিপূর্ণ ওয়ার্কওভারের পর তা এখন গড়ে ৪ মিলিয়নে নেমে এসেছে। ফলে কূপটি পুনরায় ওয়ার্কওভারের জন্য নতুন করে আরও ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

ওয়ার্কওভার প্রকল্পের পরিচালক মো. ইসমাইল মোল্লা জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে ১৪ নম্বর কূপটি বন্ধ হয়ে গেছে। এত দ্রুত কারিগরি ত্রুটির কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে অপারেশন বিভাগে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। এই প্রতিবেদক পরিচয় দিয়ে পরপর তিন দিন ইসমাইল মোল্লাকে ফোন দেন। প্রতিদিনই তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে এড়িয়ে যান। অথচ অন্য মাধ্যমে খবর নিয়ে জানা যায়, ওই সময় তিনি কোনো মিটিংয়ে ছিলেন না।

বিজিএফসিএলের একটি সূত্র বলছে, নসরুল হামিদ বিপুর ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাদে জ্যেষ্ঠতা ভেঙে বাপেক্সের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক, অপেক্ষাকৃত জুনিয়র কর্মকর্তা প্রকৌশলী ফজলুল হককে বিজিএফসিএলের এমডি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। নিয়োগ পাওয়ার পর নিজের পছন্দের এবং আওয়ামী লীগপন্থি কর্মকর্তাদের নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে অনিময়-দুর্নীতি করছেন তিনি।

বিজিএফসিএলের সিবিএ সভাপতি নূর আলম বলেন, শুধু কোম্পানির এমডির অদক্ষতায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সুফল মিলছে না। ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার কাজটি ভালোভাবে করতে পারেনি বিধায় বেশিদিন গ্যাস উত্তোলন করা যায়নি।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজিএফসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, আমি কোনো সিন্ডিকেট করিনি। আর আমার সঙ্গে নসরুল হামিদ বিপুর কোনো ঘনিষ্ঠতা ছিল না। আমার মাথাতে এগুলো কখনো আসেইনি। আমি এমডি হয়ে আসার পর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বা ব্যক্তিস্বার্থে কিছুই করিনি।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

২ দিনেও নেভেনি শাপলার বিলের আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৬ ইউনিট

    আগুন নিভাতে ভরসা জোয়ারের পানি  পুড়ে গেছে ৫ একর বনভূমি
বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী, বাগেরহাট
বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী, বাগেরহাট
শেয়ার
২ দিনেও নেভেনি শাপলার বিলের আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৬ ইউনিট
ছবি: কালের কণ্ঠ

বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনের শাপলার বিলে এখনও আগুন জ্বলছে। দুই দিনেও আগুন সম্পূর্ণ নিভানো সম্ভব হয়নি। আজ সোমবার বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে আগুন, আবার কখনো ধোঁয়া দেখা গেছে। প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ভোলা নদী থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি নিয়ে আগুন নিভানোর কাজ চলছে।

তবে ভোলা নদীর জোয়ারের পানি আগুন নিভানোর একমাত্র ভরসা। ভাটার সময় নদীতে পানি না থাকায় আগুনে পানি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। 

এরমধ্যে প্রায় পাঁচ একর বনভূমি আগুনে পুড়ে গেছে। ফায়ার ব্রিগেড, বন বিভাগ এবং স্থানীয় গ্রামবাসী আগুন নিভানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

একটানা চলছে আগুন নিভানোর কাজ। তবে এই মুহুর্তে আগুনের ভয়াবহতা নেই বলে ফায়ার ব্রিগেড এবং সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

খুলনা ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. আবু বক্কর জামান জানান, 'প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে ভোলা নদীতে পাইপ লাইন স্থাপন করে পাম্পের মাধ্যমে পানি নিয়ে আগুন নিভানোর কাজ চলছে। রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা পানি দিয়ে আগুন নিভানোর কাজ শুরু করেন।

সেই থেকে একটানা আগুন নিভানোর কাজ চলছে। কিন্তু ভোলা নদীর জোয়ারে উপর নির্ভর করছে আগুন নিভানোর কাজ।' ভাটার সময় নদীতে পানি না থাকলে আগুনে পানি দেওয়ার কাজ বন্ধ থাকে বলে তিনি জানান।

সহকারী পরিচালক মো. আবু বক্কর জামান আরো জানান, এই মুহুত্বে সুন্দরবনে জ্বলতে থাকা আগুনের ভয়াবহতা নেই। সকালেও থেমে থেমে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

সেই সাথে মাঝে মধ্যে ধোঁয়া উড়ছে। রবিবার রাতভর ৮টি ফায়ার স্টেশনের ৪১ জন এবং সোমবার সকালে ৬টি ফায়ার স্টেশনের ৩৫ জন সদস্য আগুন নিভানোর কাজে অংশ নিয়েছেন।' 

কাছাকাছি পানির উৎসহ এবং পর্যাপ্ত পানি থাকলে অল্প সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতো বলে তিনি জানান। তবে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে কিছু জানাতে পারেননি ওই কর্মকর্তা।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাস জানান, 'আগুন যাতে সুন্দরবনে ছড়াতে না পারে এজন্য শাপলার বিল এলাকায় প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ফায়ার লেন কাটা হয়েছে। আগুন ওই ফায়ার লেন অতিক্রম করতে পারেনি। গাছ আর লতাপাতার কারণে ফায়ার লেনের ওই ৫ কিলোমিটারের মধ্যে সব স্থানে সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত পানি দেওয়া সম্ভব হয়নি।'

এসিএফ দ্বীপেন চন্দ্র দাস আরো জানান, সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা ঘটলে কাছাকাছি পানির উৎসহ না থাকায় আগুন নিভাতে বেগ পেতে হয়। ভোলা নদী থেকে আগুনের ওই স্থান প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে। পলিমাটি জমে ভোলা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে সব সময় নদীতে পানি থাকে না। পানির জন্য শুধুমাত্র জোয়ারের উপর নির্ভর করতে হয়। ভাটার সময় নদীতে পানি না থাকলে আগুনে পানি দেওয়া সম্ভব হয় না।'

এসিএফ দ্বীপেন চন্দ্র দাস জানান, শাপলার বিল এলাকায় যে স্থানে আগুনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে বলা যাতীয় গাছ এবং বিভিন্ন লতাপাতা বেশি রয়েছে। তাদের প্রাথমিক ধারণা, আগুনে পাঁচ এককর বনভূমি পুড়ে গেছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, 'আগুন নিভানোর কাজ চলছে। বন বিভাগ, ফায়ার স্টেশন, সিপিজি, ভিটিআরটি এবং গ্রামবাসী আগুন নিভানোর কাজে অংশ নিয়েছে। সুন্দরবনের টেপার বিলে আগুনের ঘটনায় গঠিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে শাপলার বিলে আগুনের ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সুন্দরবনে আগুনের সুত্রপাত এবং আগুনে জীববৈচিত্রের ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে।'

প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের শাপলার বিলের আগুনের আগে বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলা জেলাধীন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি ক্যাম্পের টেপার বিল এলাকায় শনিবার সকাল ৭টার দিকে আগুন জ্বলতে দেখে বন বিভাগ। 

পরে ফায়ার ব্রিগেড কর্মী এবং স্থানীয় গ্রামবাসী চেষ্টা চালিয়ে রবিবার দুপুরে টেপার বিলের আগুন সম্পূর্ণ ভাবে নির্বাপণ করতে সক্ষম হয়। টেপার বিলের আগুনে প্রায় চার একর বনভূমি পুড়ে গেছে। টেপার বিলের আগুনের সুত্রপাত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এর একদিন পর রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাগেরহাট জেলাধীন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর টহল ফাঁড়ির ২৩ শের সিলার শাপলার বিল এলাকায় গহীন বনে আগুন দেখতে পায় বন বিভাগ। এর পর শুরু হয় আগুন নিভানোর কাজ। আগুন যাতে বনে ছড়িয়ে পড়তে না পারে এজন্য শাপলার বিল এলাকায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ফায়ার লেন কাটা হয়। 

বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, সিপিজি, ভিটিআরটি এবং স্থানীয় গ্রামবাসী আগুন নিভানোর কাজে অংশ নিয়েছেন। আজ সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত আগুন নিভানোর কাজ চলছে বলে জানা গেছে। 

এদিকে একদিনের ব্যবধানে সুন্দরবনের দুই স্থানে ৭ কিলোমিটারের দুরত্বে আগুনের ঘটনায় বন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নাশকতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

মন্তব্য

জয়পুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তাক আবারও গ্রেপ্তার

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
শেয়ার
জয়পুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তাক আবারও গ্রেপ্তার
মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক। ছবি : সংগৃহীত

বিস্ফোরক আইনে শিক্ষার্থীর দায়ের করা মামলায় জয়পুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে (৪৮) আবারও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল রবিবার (২৪ মার্চ) রাতে জয়পুরহাট জেলগেট থেকে জেলা গোয়েন্দা ও থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জয়পুরহাট শহরের আরাফাত নগর মহল্লার ঠিকাদার আব্দুল হাফিজের ছেলে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাসহ কয়েকটি মামলায় পলাতক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর জয়পুরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

পরে আদালতের নির্দেশে ৮২ দিন পর তিনি জামিনে ছাড়া পেলে রবিবার রাতে জেল গেট থেকে তাকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়।

জয়পুরহাট থানার ওসি নুর আলম সিদ্দিক বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জয়পুরহাট সদরের পাথুরিয়া গ্রামের গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী শাফি সরকারের দায়ের করা মামলায় জয়পুরহাটের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ