বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চের ডেকের ভাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। তার পরও যাত্রী পাচ্ছে না ঢাকাগামী চারটি লঞ্চ। যাত্রী সংকটের কারণে দুটি লঞ্চ যাত্রা বাতিল করেছে। যদিও সরকারি নির্ধারিত ডেকের ভাড়া জনপ্রতি ৪৫৮ টাকার বিপরীতে ঈদের সময় ৪০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছিল।
ঈদের বিশেষ সার্ভিসের শেষ দিন সোমবার (১৪ এপ্রিল) চারটি লঞ্চ কমসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করছে।
সোমবার বরিশাল নৌ বন্দর থেকে এমভি পারাবত-১৮, মানামী, শুভরাজ, সুন্দরবন-১২ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। সন্ধ্যার পর থেকেই নৌ বন্দরে যাত্রীদের তেমন একটা ভিড় লক্ষ করা যায়নি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘাটে থাকা লঞ্চগুলো যাত্রী টানতে ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
সে অনুযায়ী পারাবত লঞ্চ প্রথমে ডেকের ভাড়া জনপ্রতি ৫০টা করে ঘোষণা দেয়। ঠিক তখনই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে অপর তিনটি লঞ্চ ৫০ টাকায় যাত্রী লঞ্চে তুলতে শুরু করে।
আরো পড়ুন
ফুলপুরে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঘুড়ি উৎসবে বিজয়ী বসুন্ধরা শুভসংঘ
জানা গেছে, দেশে নৌপথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বেশি যাত্রী চলাচল করে ঢাকা-বরিশাল পথে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে এই নৌপথে যাত্রীসংখ্যা কমে যায়।
আগে যেখানে প্রতিদিন ৬-৮টি লঞ্চ চলাচল করত, মঙ্গলবার থেকে প্রতিদিন দুটি লঞ্চ চলাচল করবে। যদিও এবার ঈদের সময় ১৮টি লঞ্চ বিশেষ সার্ভিসে যুক্ত হয়। এসব লঞ্চ প্রতিদিন রোটেশন করে ছয়টি করে লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী ২৫ মার্চ সার্ভিস চালুর পর থেকে প্রতিদিন সাতটি লঞ্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে এসে যাত্রীদের নামিয়ে আবার ঢাকায় ফিরে গেছে।
আরো পড়ুন
আকাশে আবু সাঈদ-মুগ্ধকে দেখে স্তব্ধ লক্ষাধিক মানুষ
ঠিক একইভাবে ঈদের পর প্রতিদিন সাতটি লঞ্চ বরিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় নামিয়ে আবার বরিশালে ফিরে এসেছে।
এসব লঞ্চে কেবিন মিলছে না, ডেকেও যাত্রীদের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা অবশিষ্ট ছিল না। এ বছর ডেকের যাত্রীদের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১ হাজার ২০০ ও ডাবল কেবিন ২ হাজার ৪০০ টাকা। তবে স্বাভাবিক সময়ে ডেকের যাত্রীদের ভাড়া ৩৫০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১ হাজার এবং ডাবল কেবিন ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হতো।
ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটের চলাচলকারী একাধিক লঞ্চের সুপারভাইজার বলেন, ‘ডেকের ভাড়া ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। যাত্রীদের কাছ থেকে ৩৫০ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছিল। ঈদের সময় ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৪০০ টাকা করা হয়েছিল। সোমবার যাত্রীর তুলনায় লঞ্চ বেশি থাকায় ডেকের ভাড়া মাত্র ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিঙ্গেল কেবিন ১ হাজার, ডাবল কেবিন ২ হাজার টাকা করে নির্ধারিত ছিল। কিন্তু অধিকাংশ কেবিন খালি যাচ্ছে।
সুন্দরবন নেভিগেশন কম্পানির পরিচালক শহিদুর রহমান পিন্টু বলেন, ঈদের বিশেষ সার্ভিস সোমবার যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার মাধ্যমে শেষ হচ্ছে। বিশেষ সার্ভিসে ৬টি লঞ্চ তালিকাভুক্ত থাকলেও চারটি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে। যাত্রী সংকটের কারণে সুন্দরবন-১৬ ঢাকায় যাচ্ছে না। বিশেষ সার্ভিস মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে। তাই মঙ্গলবার থেকে দুটি লঞ্চ ঢাকায় যাবে, ঠিক একইভাবে দুটি লঞ্চ বরিশালে আসবে। নতুন তালিকা অনুযায়ী মঙ্গলবার সুন্দরবন-১৬ বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। তাই আজ ঢাকা যায়নি।
আরো পড়ুন
দূষণে কমছে ইলিশ উৎপাদন, বাড়ছে দাম
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা বলেন, ‘বিশেষ সার্ভিস চালু হওয়ার পর প্রতিদিনই যাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী পাওয়া যাচ্ছিল লঞ্চগুলোতে। ঈদের আগে এবং পরে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল লঞ্চগুলোতে। সোমবার শেষ দিন যাত্রী সংকট ছিল। তাই নির্ধারিত ভাড়ার অনেক কমে ডেকের যাত্রীরা ঢাকার উদ্দেশে বরিশাল নৌ বন্দর ছেড়েছে।’