<p style="text-align:justify">জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকেই উত্তপ্ত হতে থাকে রাজধানীর রাজপথ। পরে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ও নতুন সরকার আসার আগ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সহিংসতা হয় ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানায়। এখানে সাতজন পুলিশ নিহত হয়। পুরো থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়।</p> <p style="text-align:justify">সেই সহিংসতার ভয়াবহতা এখনো থানার তিনটি ভবনসহ পুরো চত্বরে দৃশ্যমান। তবে তা সংস্কারের কাজও পুরোদমে চলছে। সাময়িক সময়ের জন্য এই থানার কার্যক্রম চলছে ডেমরা থানায়। গত শনিবার দুপুরে সরেজমিনে এমনই দৃশ্যের দেখা মেলে।</p> <p style="text-align:justify">দুপুর আড়াইটার দিকে গিয়ে দেখা যায়, থানার পাঁচতলাবিশিষ্ট মূল ভবনের তিনটি ফ্লোরে একযোগে সংস্কারকাজ করছেন শ্রমিকরা। প্রতিটি ফ্লোরে প্রায় প্রতিটি রুমই আগুনে পুড়ে গেছে। রাজমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি আর বিদ্যুতের কাজ করা শ্রমিকরা জানান, কাজ শেষ হতে কত দিন লাগতে পারে তা বলা যাচ্ছে না। তবে ওপরমহলের নির্দেশনায় তাঁরা দ্রুতই কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন।</p> <p style="text-align:justify">এমন সময় একজন সেবাপ্রার্থী এসে জানতে পারেন এই থানার কাজ চলছে ডেমরা থানায়। তাঁকে সেখানে যাওয়ার পথ চিনিয়ে দেন পাহারারত আনসার সদস্যরা। </p> <p style="text-align:justify">ভবনের বাইরে ডাম্পিং গাড়ির কয়েকটা কঙ্কাল দেখা যায়। একাধিক কর্মকর্তা জানান, থানার ১২টি গাড়িই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকার পতনের পর সব অস্ত্র ও অনেক গাড়ির যন্ত্রাংশ লুট হয়ে গেছে।</p> <p style="text-align:justify">এর মধ্যে ৫০ শতাংশের মতো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে অন্য থানার দুটো গাড়ি ও দুটো জিপ দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। তাই টহল কিংবা অপারেশনে এসব গাড়ি প্রয়োজনীয়তা মেটাতে পারছে না।</p> <p style="text-align:justify">কর্মকর্তারা জানান, এই থানার চারজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হন। এ ছাড়া এই থানার অধীনে দায়িত্ব পালনের সময় কদমতলী থানার দুজন ও শ্যামপুর থানার একজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে অনেকেই। এসব ঘটনায় এখনো কোনো মামলা করা হয়নি। অন্যদিকে ৪০টির মতো মামলা হয়েছে ছাত্র ও অন্যান্য পেশাজীবী মানুষের মৃত্যুর ঘটনায়।</p> <p style="text-align:justify">সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্দোলনের সময় এই থানায় এতটাই হামলা ও লুটপাটের মতো ঘটনা ঘটে যে অন্য বাহিনী এসে পুলিশকে উদ্ধার করেছে। পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা ছিল কয়েক দিন ধরেই ।</p> <p style="text-align:justify">থানার ওসি (তদন্ত) মহসীন হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাস দেড়েকের আগে স্থাপনা সংস্কার ও আসবাবসহ পুরোপুরি প্রস্তুত হবে বলে মনে হচ্ছে না। সম্প্রতি আইজিপি স্যারসহ ঊর্ধ্বতনরা এসে পরির্দশন করেছেন। ঠিকাদারকে দ্রুত সময়ে কাজ সম্পন্ন করে দিতে বলেছেন তাঁরা।</p>