রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে যুবদল-ছাত্রদলের ৪ নেতাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে জনতা। গত রবিবার রাতে চাঁদাবাজি করার সময় হাতের আটক করে স্থানীয়রা।
আটকৃতরা হলেন আল মাহমুদ রাজ, মাহিদুর জামান ওরফে মোহন হোসেন, নুর আলম ও মো. মাসুদ।
স্থানীয়দের উদ্ধৃত করে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের নেতা নয়নের সহযোগী।
তাদের মধ্যে আল মাহমুদ রাজ নয়ন যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্নার ঘনিষ্ঠ সহযোগী। রাজ ওই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী। তার ১০-১২ জনের ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। তাদের কাছে রয়েছে অবৈধ অস্ত্র।
আরো পড়ুন
ষড়যন্ত্র রুখতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : নজরুল ইসলাম খান
এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত মাহিদুর রহমান ওরফে মোহন হোসেন ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সদস্য ও নয়নের শ্যালক। আর নুর আলম রমনা থানার ১৯ নং ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং মাসুদ ওই ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য ও নয়নের গাড়িচালক।
পুলিশ জানায়, আটকৃকতরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করতেন। তাদের বিরুদ্ধে আরো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ মিলেছে।
এ ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুর রহমান বলেন, গত রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শান্তিনগর বাজারে রূপায়ণ এঞ্জেলের সামনে তাদের বেঁধে রেখে মারধর করা হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নেয়। প্রাথমিক তদন্তে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ জানায়, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন ঘনিষ্ঠ আরো অনেকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা হলেন তপন, সজল, রনি শিকদার, মাসুদ রানা প্রমুখ।
এদিকে এই চার নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর গতকাল সোমবার যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, গুলিস্তানসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত দখল করে এক শ্রেণির দুষ্কৃতকারী জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাফেরা বিঘ্নিত করার পাশাপাশি ফুটপাতকেন্দ্রিক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায়ই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামরত বিএনপির অন্যতম অঙ্গসংগঠন হিসেবে যুবদল এসব অবৈধ দখল-বাণিজ্যকেন্দ্রিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবসময়ই সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে।’
এতে বলা হয়, ‘জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী এ ধরনের কাজে যুবদলের কারো ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা দৃষ্টিগোচর হওয়া মাত্রই অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে বহিষ্কারসহ তার বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে বিভিন্ন সময় দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের অবৈধ দখল বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কতিপয় দুষ্কৃতকারী নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে যুবদলের পরিচয় ব্যবহার করে সংগঠনের ইমেজ ক্ষুন্ন করছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে যুবদল আরো জানায়, ‘দলীয় পরিচয় ব্যবহারকারী এ ধরনের অপরাধীর প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক বন্ধুদের এবং এ জাতীয় অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছন যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন।’
যুবদলের পরিচয় ব্যবহার করে কোথাও দখল বাণিজ্যের কোনো ঘটনা পরিলক্ষিত হওয়া মাত্রই অপরাধীকে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আটক করে যুবদলের কেন্দ্রীয় দপ্তরকে জানানোর জন্য জনসাধারণ, ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়।