<p>ঢালিউডের পর্দায় বাংলার নবাব হিসেবে পরিচিত কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র। চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে দর্শকদের অনেক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিলেও আজকাল পর্দায় দেখা মেলে না এই অভিনেতার। এর আগে জানা গিয়েছিল, প্রবীর মিত্রের দিন কাটে চার দেয়ালের মাঝে। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানাবিধ অসুখ। সম্প্রতি তাঁর সন্তান মিঠু মিত্র গণমাধ্যমকে জানালেন, শারীরিকভাবে আরো ভেঙে পড়েছেন পর্দার রঙিন ‘নবাব’। </p> <p>মিঠু বলেন, প্রবীর মিত্র কথা বলার চেষ্টা করেন ঠিকই, তবে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। সেটিও ওনার মুডের ওপর নির্ভর করে। যখন ইচ্ছা হয় তখন বলেন। কানেও কম শোনেন। এ ছাড়া ডিমেনশিয়া রোগ আছে। সে কারণে মাঝেমাঝে কিছু কথা ভুলে যান।</p> <p>তবে মানুষজন চেনার ক্ষমতা এখনো আছে উল্লেখ করে অভিনেতার ছেলে বলেন, আমরা যারা কাছাকাছি আছি তাদের চিনতে পারেন।</p> <p>আক্ষেপ করে মিঠুন জানান, এফডিসি বা অভিনয়জীবন নিয়ে খুব একটা স্মৃতিচারণা করেন না অভিনেতা। তা ছাড়া চলচ্চিত্রের কেউ প্রবীর মিত্রের খোঁজও নেন না।</p> <p>প্রবীর কুমার মিত্রের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুরের নতুনবাজারে। পৈতৃক নিবাস কেরানীগঞ্জের শাক্তায়। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চায় যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। পরে ওই পরিচালকের জলছবি সিনেমার মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় তার অভিষেক হয়। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় প্রবীর মিত্রকে দেখা গেছে। এ ছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ চলচ্চিত্রে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছে ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সীমার’, ‘তীর ভাঙা ঢেউ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘অঙ্গার’, ‘পুত্রবধূ’, ‘নয়নের আলো’, ‘চাষীর মেয়ে’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘আবদার’, ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ইত্যাদি।</p> <p>কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্রে অনবদ্য অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা পান তিনি। সর্বশেষ প্রবীর মিত্র এসডি রুবেল পরিচালিত ‘বৃদ্ধাশ্রম’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এরপর আর কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি তিনি।</p>