উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুরকার-সংগীত পরিচালক শেখ সাদী খান। উপহার দিয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গান। তাকে বাংলাদেশের সংগীতের জাদুকর হিসেবেও অভিহিত করা হয়। গানের মধ্যদিয়ে এই সংগীত পরিচালক নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুরকার-সংগীত পরিচালক শেখ সাদী খান। উপহার দিয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গান। তাকে বাংলাদেশের সংগীতের জাদুকর হিসেবেও অভিহিত করা হয়। গানের মধ্যদিয়ে এই সংগীত পরিচালক নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়।
কেমন আছেন?
ভালো আছি সবার দোয়াতে। বেশ কিছু কাজ হাতে নিয়েছি। বিশেষ করে ‘স্মৃতিময় গানগুলো’ আবার বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হবে। এটির পরিকল্পনা ও গবেষণা আমার।
‘স্মৃতিময় গানগুলো’ অনুষ্ঠানটি মাঝখানে বন্ধ ছিল। কারণ কী?
এগুলো বলতে ভালো লাগে না।
সেই প্রতিবাদ কি সফল হয়েছে?
না। আমরা এখনো প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছি। স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ কেন একটা জাতীয় প্রতিষ্ঠানে থাকবে? কোনো কোনো শিল্পী প্রতিদিন গান করছেন আবার কোনো কোনো শিল্পী ছয় মাস, একবছর বেকার। এটা তো মানতে পারব না। আমার সংগীতে ক্যারিয়ার ৫৪ বছরের। প্রথম থেকেই আমি সত্যের পথে থেকেছি, এখনো থাকব। আমার হাত ধরে এ দেশে প্রথম চলচ্চিত্রে গান করেছেন মান্না দে, আশা ভোঁসলে, কুমার শানুরা। আমি এখনো নতুনদের জায়গা করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই ‘স্মৃতিময় গানগুলো’ অনুষ্ঠানটি দেখলে বুঝতে পারবেন মাহমুদুননবী, ফারুক আহমেদ, আব্দুল জব্বারের মতো শিল্পীদের গানগুলো এখনকার নতুন শিল্পীদের কণ্ঠে তুলে দিচ্ছি। আমি তো ভালোর জন্য, মঙ্গলের জন্য কাজ করছি। এটাতে কেউ বাধা দিলে প্রতিবাদ করবই।
‘একি খেলা চলছে হরদম’ গানটির ইংরেজি ভার্সন করেছিলেন। এ রকম কালজয়ী অনেক গানের স্রষ্টা আপনি। সেগুলো নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে?
নতুন প্রজন্মের কাছে আমার গানগুলো তুলে ধরতে চাই। আরেকটি গান আছে আমার ‘পথ ভেঙে পায়ে পায়ে সেখানে, চলো যাই শান্তির দ্বীপ জ্বলে যেখানে’, সৈয়দ আব্দুল হাদীর গাওয়া, গানটি নতুন করে করা হচ্ছে ইংরেজিতে। এটা শান্তির গান। আমি তো শান্তি পুরস্কার পাব না। তবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে শান্তি বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। গানটি সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতেই উদ্যোগটি নিয়েছি।
আপনার বাবা ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ, চাচা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, আপনার ভাই ওস্তাদ বাহাদুর খাঁ—তিনজনই উপমহাদেশের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তাঁদের তুলে ধরতে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন?
এটা তো আমার দায়িত্ব নয়। উপমহাদেশে কয়টি পরিবার আছে, যারা বংশপরম্পরায় এভাবে সংগীতের সঙ্গে জড়িত! আমাদের এখন সপ্তম জেনারেশন চলছে। এখনো পরিবারের সবাই সংগীতের সঙ্গে যুক্ত আছি। এটা তো সহজ ব্যাপার না। সরকারকে বুঝতে হবে। অবশ্য পরিবারের সদস্য হিসেবে আমারও কিছু করার আছে। সেটা নিয়ে পরিকল্পনাও সাজিয়েছি। শিগগির জানাব।
এক সময় অভিনয়েও নাম লিখিয়েছিলেন...
আমি অনুরোধের কারণেই দুটো ছবি করেছি। আশির দশকে ‘নয়নে নয়নে’ ছবিতে সংগীত পরিচালক হিসেবেই হাজির হয়েছিলাম। গত বছর সংগীত পরিচালক ইমন সাহার স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি ‘সাইলেন্স-দ্য জার্নি অব মিউজিক’-এ অভিনয় করেছি। এটা গানের ওপর বলেই করা হয়েছে।
গত বছর জীবনীগ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন। ৫৪ বছরের ক্যারিয়ার নিশ্চয়ই অনেক ঘটনাবহুল। আরো লিখবেন?
প্রকাশকরা তো বলেনই লিখতে। আমারও ইচ্ছা আছে। হাজারো ঘটনার স্বাক্ষী আমি। সেগুলো তুলে ধরলে নতুন প্রজন্ম অনেক কিছু জানতে পারবে। দেখি, সামনে লিখব।
সম্পর্কিত খবর
‘মন দুয়ারী’র পর ঈদে ফের জুটি হয়ে আসছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও নাজনীন নীহা। তারা ফিরছেন সেই একই জাকারিয়া সৌখিনের রচনা এবং পরিচালনায়। নতুন এই নাটকটির নাম ‘মেঘবালিকা’।
পারিবারিক মূল্যবোধ এবং প্রেম বিষয়ক গল্পের এই নাটকে দেখা যাবে আবিদ (অপূর্ব) নায়লার (নীহা) থেকে অনেক সিনিয়র।
‘মন-দুয়ারী’ এবং ‘মেঘবালিকা’ পাশাপাশি সময়ে নির্মিত হয়েছে।
জাকারিয়া সৌখিন বলেন, ‘এবারের গল্পটি মূলত প্রেমের। ছটফটানি টাইপের প্রেম। কিছুটা অস্থির, কিছুটা ইমোশনাল আর কিছুটা যন্ত্রণার।
অপূর্ব বলেন, ‘এটা সুন্দর একটি নাটক। সৌখিন বরাবরের মতোই খুব যত্ম নিয়ে নাটকটি নির্মাণ করেছেন। আর নীহা ভালো অভিনয় করেছে। এখন ওর যে টাইপের ক্যারেক্টারে অভিনয় করা দরকার, এ নাটকে ঠিক সেই টাইপের ক্যারেকটার পেয়েছে। সব মিলিয়ে দারুণ একটি নাটক। ঈদের আয়োজনে এমন নাটকই দেখতে চায় দর্শক। আমার বিশ্বাস, সবাই এক বসাতে নাটকটি তৃপ্তি নিয়ে দেখবে।’
নাজনীন নীহা বলেন, “আসলে আমি ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আছি। এ সময়ে অপূর্ব ভাইয়ের সাথে পর পর দুটি নাটকে অভিনয় করতে পেরেছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। ‘মেঘবালিকা’ নাটক নিয়ে আমি খুবই এক্সাইটেড। আমার বিশ্বাস, ‘মন-দুয়ারী’র মতো ‘মেঘবালিকা’ও দর্শকের মন জয় করে নেবে।”
নাটকটিতে আরো অভিনয় করেছে সমাপ্তি মাশুক, সমু চৌধুরী, মিলি বাশারসহ আরো অনেকে। এটি প্রচারিত হবে ধূপছায়া এন্টারটেইনমেন্ট ইউটিউব চ্যানেলে।
ইমরুল নূর
দুই যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে ভেঙে প্রতিবারই গড়ছেন নতুন করে। যার দরুন এখনো তিনি সবার কাছে প্রিয়, একই সঙ্গে ভীষণ জনপ্রিয়; বলছি আব্দুন নূর সজলের কথা। নাটক ছেড়ে সিনেমায় থিতু হয়ে কুড়াচ্ছেন প্রশংসা।
‘জ্বীন’-এ কাজ করেছিলেন। এর পরের সিক্যুয়ালে আপনাকে দেখা যায়নি।
রহস্য তো অবশ্যই কিছু একটা আছে। যেটা দর্শকেরা অনুমানও করতে পারবেন না। এই ছবিটাতে এত পরিমাণ টুইস্ট রয়েছে, যা দেখে দর্শকরাও অবাক হবেন।
‘জ্বীন ৩’ সিনেমাটি থেকে আপনার প্রাপ্তি কী, কেমন ছিল এই ছবিটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা?
সিনেমাটির আগের দুই কিস্তি দর্শকদের কাছ থেকে অভাবনীয় ভালোবাসা পেয়েছে, যে কারণে ‘জ্বীন ৩’ নিয়ে আসা। প্রাপ্তি আসলে অনেক কিছু। সবাই চায়, একটা সুন্দর গল্পে কাজ করা। চমৎকার একটা গল্প পেয়েছি।
অভিজ্ঞতার কথা যদি বলি, এবারের গল্পটা যেহেতু একটু আলাদা, তাই পরিশ্রমের মাত্রাটাও ছিল অতিরিক্ত। প্রত্যেকটা শিল্পী অনেক এফোর্ট দিয়ে কাজটি করেছেন। কোনো ঘুম নেই, বিরতি নেই। সবাই যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন কাজটার জন্য। অবশেষে কাজটা যখন সামনে আসছে তখন সত্যি ভালো লাগছে, যখন দর্শকরা প্রকাশ্যে আসা কনটেন্টগুলো দেখে প্রশংসা করছেন তখন মনে হচ্ছে যে, কষ্ট কিছুটা হলেও কাজে দিয়েছে।
এখানে আপনার জন্য চ্যালেঞ্জ কী ছিল?
এবারের গল্পটাতে পরিশ্রমী দৃশ্য বেশি ছিল। গল্প রিভিল হয়ে যাবে দেখে এখন কিছু বলতে পারছি না। এতটুকু বলতে পারি, যে যে দৃশ্য দর্শকদের সামনে আসবে মনে দাগ কাটবে।
অনেকটা হুট করেই সিনেমাটির ঘোষণা দেওয়া, এরপর দ্রুত শুটিং শেষ করে সেটাকে প্রেক্ষাগৃহে নিয়ে আসছেন। এতে করে কাজের মান কতটা বজায় থাকছে বলে মনে করেন?
হুট করে ঘোষণা দেওয়া বলতে পারেন। কিন্তু এটা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা চলছিল মাস কয়েক আগে থেকেই। আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েই আগাচ্ছিলাম। এক মাসের মতো রিহার্সেলও করেছি। তারপরে শুটিংয়ে গিয়েছি। সে জন্য খুব একটা সমস্যা হয়নি। কাজের মানের ক্ষেত্রেও কোনো কম্প্রোমাইজ ছিল না। তবে এটা সত্যি, যেহেতু ছবিটা ঈদের জন্য তাই আমাদের হাতে সময়টা কম ছিল।
সদ্যই উন্মুক্ত হয়েছে সিনেমাটির প্রথম গান ‘কন্যা’। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
অভাবনীয় সাড়া পাচ্ছি। গানটি রিলিজ হয়েছে মাত্র এক দিন হলো, অথচ ফেসবুকে ঢুকলেই দেখছি ফেসবুক পুরো কন্যাময়। সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে আমার সহকর্মীরাও গানটি শেয়ার দিয়েছেন। পাশাপাশি ফোনে, মেসেজে তাদের ভালো লাগার কথা জানাচ্ছেন। গানটি সবাই পছন্দ করবেন, এমন একটা ধারণা ছিল কিন্তু এত বেশি পছন্দ করবেন বুঝতে পারিনি।
গানটির শুটিং করেছিলাম ৫ দিন। বাগেরহাট ও খুলনায় শুটিং করেছি। গানটার শুট করার আগে আমি বেশ অসুস্থ ছিলাম। ভোকাল কর্ডে ইনফেকশন হয়েছিল, সেখান থেকে জ্বর এসেছিল। শরীরও নড়াতে পারছিলাম না। জ্বর প্রায় প্রতিদিন ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ছিল। যেহেতু গানের ডেট আগে থেকে দেওয়া ছিল সে জন্য কাজটি করা ছাড়া কোনো অপশন ছিল না। ডাক্তার একদম কথা বলতে নিষেধ করেছিলেন, এক সপ্তাহ সম্পূর্ণ বেড রেস্টে থাকতে বলেছিলেন। ওই অবস্থাতেই শুটিংয়ে যাই এবং ১০৩ ডিগ্রি জ্বর নিয়েই গানে পারফরম করেছিলাম এবং আমি রোজা ছিলাম। অসুস্থ হলেও রোজা ভাঙিনি। পুরো টিম অনেক বেশি সাপোর্টিভ ছিল, প্রতি মুহূর্তই পাশে ছিল, যার কারণে জ্বরের মধ্যেও যে কাজ করেছি সেটা বুঝতে পারিনি।
এবার ঈদে আপনার সিনেমা ছাড়া আরো অনেকেরই সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। আপনি কোনো চাপ অনুভব করছেন কি?
অনেকগুলো ভালো ছবি আসছে এবারের ঈদে। আফরান নিশো, সিয়াম আহমেদ এবং শাকিব ভাই (শাকিব খান) প্রত্যেকেই আমার ভীষণ প্রিয়। তাদের ছবির টিজারগুলো দেখেছি, আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, একটা জমজমাট ঈদ। আমি তাদের তিনটা ছবিই দেখতে যাব।
আমাদের ‘জ্বীন ৩’-এর কনটেন্ট এখন পর্যন্ত যা এসেছে, দর্শকদের রেসপন্সে আমি অনেক খুশি। আমরা সবাই চাই যেন আমাদের সবার কাজগুলো ভালো যাক। এখানে তো দোষের কিছু নেই। প্রত্যেকের কাজের পেছনেই কিন্তু একটা এফোর্ট থাকে। সেই জায়গা থেকে চেষ্টা, সবার প্রজেক্ট আসুক এবং সেগুলো ভালো চলুক। দর্শকরা ঘুরেফিরে সবগুলো ছবি দেখুক, এটাই চাই।
“শাকিব খান আমাদের সুপারস্টার, শাকিব ভাইকে টপকানোর ক্ষমতা বর্তমানে এ দেশের কারো নেই। যদি আমি দেশে থাকি তবে আমি মুন্না খান মাল্টিমিডিয়ার সব সদস্যকে নিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে ‘বরবাদ’ সিনেমা দেখব। আমি নিজেও একজন শাকিবিয়ান। এ পর্যন্ত শাকিব ভাইয়ের যতগুলো ছবি মুক্তি পেয়েছে সবগুলো আমার দেখা হয়েছে।
কালের কণ্ঠকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেছেন চিত্রনায়ক ও ‘মুন্না খান মাল্টিমিডিয়া’র কর্ণধার মুন্না খান। ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো এবং নিজের সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন এ অভিনেতা। তার মতে, এবার ঈদে বেশ কিছু সিনেমা ভালো করবে। সেগুলো প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখার প্রত্যাশাও জানান তিনি।
এবারের ঈদে মুক্তি পেতে যাওয়া সিনেমাগুলোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এই ঈদে যতগুলো সিমেমা রিলিজ হবে এর মধ্যে অন্যতম বরবাদ, জংলি, দাগি, জ্বিন ৩। আমি চেষ্টা করব সবগুলো সিনেমা হলে গিয়ে দেখার। কারণ সবগুলো সিনেমাই বিগ বাজেটের এবং বড় বড় ভালো প্রডাকশন হাউস থেকে রিলিজ হয়েছে।’
তার অভিনীত সিনেমা রিলিজের বিষয়ে তিনি বলেন, “এই রোজার ঈদে আমার কোনো সিনেমা রিলিজ হচ্ছে না।
সিনেমায় দেশীয় চিত্রনায়িকাদের নেওয়ার বিষয়ে মুন্না বলেন, ‘প্রথমে আমাদের দেশের নায়িকাদের কাছেই গল্প উপস্থাপন করা হবে ওনারা যদি গল্প পছন্দ করেন তাহলে ওনাদের নেওয়া হবে।
দর্শকদের উদ্দেশে মুন্না খান বলেন, ‘আমাদের বাংলা সিনেমাকে বাঁচাতে হলে আপনারা বেশি বেশি হলে গিয়ে সিনেমা দেখেন। বাংলা সিনেমার কদর বেড়ে গেলে আমাদের দেশের বড় বড় প্রডাকশন হাউস সিনেমা নির্মাণ করতে আগ্রহী হবে।’
নিজের অভিনয় আর প্রযোজনা নিয়ে মুন্না বলেন, ‘টাকা থাকলে প্রযোজক হওয়া যায় কিন্তু টাকা দিয়ে অভিনেতা হওয়া যায় না। অভিনয় করতে হলে অভিনয়ের দক্ষতা আর মনমানসিকতা থাকতে হবে।’
এ প্রজন্মের চিত্রনায়ক কাতারপ্রবাসী ব্যবসায়ী মুন্না খান। শতাধিক মিউজিক্যাল ফিল্মে মডেল হিসেবে অভিনয় করেছেন তিনি। গান লিখেছেন পঞ্চাটিরও বেশি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘ডার্ক ওয়ার্ল্ড’ সিনেমার মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। এতে তার বিপরীতে কাজ করেছেন ওপার বাংলার নায়িকা কৌশানী মুখার্জি। মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের পরিচালনায় আরেকটি সিনেমা ‘রুখশার’-এর ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে মুন্না খান মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে নির্মিতব্য সিনেমা বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ‘তছনছ’। একই ব্যানারে নির্মিত হয়েছে ওয়েব ফিল্ম ‘দি পাওয়ার অব লাভ’। এর মাধ্যমে প্রথমবার ওয়েবের দুনিয়ায় নাম লেখাতে যাচ্ছেন মুন্না খান। মাহফুজ রহমান রাজ রচিত এবং পরিচালিত ওয়েব ফিল্মটি শিগগিরই মুক্তি পাবে।
শঙ্খনীল দেব
সিনেমা শুধু বিনোদনের মাধ্যমই নয়, বরং সিনেমা আমাদের বাস্তব জীবনকে ভিন্ন আঙ্গিকে দেখার সুযোগ করে দেয়। সিনেমা কাল্পনিক উপস্থাপনের মাধ্যমে দর্শকদের শুধু মুগ্ধই করে না, বরং অনুপ্রাণিতও করে। কখনো ভাবায়, কখনো বা আবেগে ভাসায়। আর সেই সিনেমা যদি তৈরি হয় সত্য ঘটনা অবলম্বনে, তাহলে তা হয়ে উঠে শিক্ষণীয়।
‘মঞ্জুম্মেল বয়েজ’ একটি বাস্তব ঘটনার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত মালয়ালম ভাষার চলচ্চিত্র। ২০২৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত অসাধারণ সারভাইভাল থ্রিলারটির নির্মিত হয়েছে কেরালার কোচির মঞ্জুম্মেল এলাকার একদল বন্ধুকে ঘিরে, যারা মজার ছলেই কোড়াইকানালের বিখ্যাত ‘গুনা গুহা’ ঘুরতে যায়। এই গুহা একদিকে যেমন রহস্যময়, তেমনই বিপজ্জনক। একে শয়তানের গুহাও বলা হয়।
গুহার গভীরে পড়ে যাওয়া সুবিকে উদ্ধারের জন্য বাকি বন্ধুরা আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু সমস্যা একটাই—গুহাটি এতটাই গভীর ও সংকীর্ণ যেকোনো সাধারণ উপায়ে সেখানে নামা সম্ভব নয়। স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকর্মীদের সাহায্য পেতে দেরি হওয়ায় বন্ধুরা নিজেরাই উদ্ধারের পরিকল্পনা করতে শুরু করে। এই সময়েই বন্ধুত্বের প্রকৃত পরীক্ষা শুরু হয়। একজন বন্ধুর জীবন বাঁচাতে অন্যরা নিজের জীবন বাজি রেখে চেষ্টা চালিয়ে যায়। কিভাবে তারা এ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করল, কিভাবে সুবিকে জীবিত উদ্ধার করল! জানতে হলে দেখে নিন চমৎকার মালয়ালম এ সিনেমাটি।
২০০৬ সালে ঘটে যাওয়া বাস্তব এই ঘটনায়, সেই বন্ধু দলের সদস্য সিজু ডেভিস অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ১২০ ফুট গভীর ফাটল থেকে তার বন্ধু সুবাসকে বাঁচিয়েছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই সিনেমার কারণে সেই ঘটনা আবারও আলোচনায় এসেছে, যেখানে তামিলনাড়ুর স্বরাষ্ট্র সচিব পি. আমুধা রাজ্যের পুলিশ মহাপরিচালককে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। গুনা গুহায় ঘুরতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ১৬ জনেরও বেশি পর্যটক প্রাণ হারিয়েছেন।
এর আগে, দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গুহায় পড়ে যাওয়া সেই সুবাস জানিয়েছেন, তিনি সেই গুনা গুহায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুশোচনা করেন আজও। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অনুশোচনা তো করি। তবে এখন আমি দেখছি, আমার গল্প থেকে মানুষ অনুপ্রেরণা নিচ্ছে। বলা হচ্ছে, এটি বিপদে পড়া মানুষদের উৎসাহ জোগাতে সহায়তা করছে। এছাড়াও, পুরনো বন্ধুরা আবার যোগাযোগ শুরু করেছে। আগে আমি ভাবতাম, কেন আমি বেঁচে গেলাম! এখন আমি বুঝতে পারছি – হয়তো অন্যদের আশার আলো দেখানোর জন্য বেঁচেছি আ। আমি এর জন্য ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
চিদাম্বরমের পরিচালনায় ‘মঞ্জুম্মেল বয়েজ’ মুক্তি পায় ২০২৪ সালে। সিনেমাটিতে অভিনয় করা প্রতিটি চরিত্রই বাস্তবধর্মী ও প্রাণবন্ত ছিল পর্দায়। বিশেষ করে শ্রীনাথ ভাসি, সৌবিন শাহির, দীপক পরমবল, বালু ভার্গিসদের বন্ধুত্বের যে আবেগ ফুটিয়ে তুলেছেন, তা দর্শকের মনে গভীর দাগ কাটে। পরিচালক চিদাম্বরম অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে গল্পটিকে পর্দায় উপস্থাপন করেছেন। সিনেমার টানটান উত্তেজনা, আবেগ ও বাস্তববাদী উপস্থাপন সিনেমাটিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। মাত্র ২০ কোটি বাজেটে নির্মিত সিনেমাটি ২৪২ কোটি টাকা আয় করে বক্স অফিসের পাশাপাশি দর্শক সমালোচকদের মনও জয় করেছে।