<p>জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও বংশী বাদক বারী সিদ্দিকী। জীবদ্দশায় তিনি মূলত গ্রামীণ লোকসংগীত ও আধ্যাত্মিক ধারার গান করেছেন। তার গাওয়া- ‘শুয়া চান পাখি’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘সাড়ে তিন হাত কবর’, ‘পুবালি বাতাসে’, ‘তুমি থাকো কারাগারে’, ‘রজনী হইসনা অবসান’, ‘ওগো ভাবিজান নাও বাওয়া’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’ প্রভৃতি গান দর্শক হৃদয় ছুঁয়েছে।</p> <p>প্রয়াত বারী সিদ্দিকীর ৭০তম জন্মদিন আগামী রবিবার (১৭ নভেম্বর)। বর্ণাঢ্য আয়োজন বিশেষ এই দিনটি উদযাপন করতে যাচ্ছে বারী সিদ্দিকী স্মৃতি পরিষদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন  প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি প্রিন্স আলমগীর। সেদিন সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বারী সিদ্দিকী স্মরণে স্মৃতিচারণা, গুণীজন সম্মাননা ও আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।</p> <p>অনুষ্ঠানে  প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভূঁইয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালিক বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সংগীতানুরাগী মিনহাজুর রহমান (রাজু ভূঁইয়া)। বিশেষ অতিথি থাকবেন এটিএন বাংলার উপদেষ্টা তাশিক আহম্মেদ, গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়জী, শরিফ কামাল হোসেন ও দেলোয়ার আরজুদা শরফ।</p> <p>উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মো. আরফাতুর রহমান (আপেল)। এ ছাড়া উপস্থিত থাকবেন বারী সিদ্দিকী স্মৃতি পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা অভিনেতা ডি এ তায়েব।</p> <p>অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন জনপ্রিয় শিল্পী সালমা, নোলক বাবু, শফি মণ্ডল, ফকির শাহাবুদ্দিন, আশরাফ উদাস, শাহনাজ বেলী, কামরুজ্জামান রাব্বী, জুয়েল সরকার, গামছা পলাশ, রাজীব, বিউটি, আলম আরা মিনু, এম এম শফি, তামান্না হক, প্রিন্স আলমগীরসহ আরো অনেকে।</p> <p>মূলত কথাসাহিত্যিক ও চিত্রনির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের প্রেরণায় নব্বইয়ের দশকে সংগীত জগতে প্রবেশ করেন বংশীবাদক বারী সিদ্দিকী। অল্পদিনেই বিরহ-বিচ্ছেদের মর্মভেদী গানের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে তিনি স্থায়ী আসন করে নেন। ১৯৯৫ সালে বারী সিদ্দিকী হুমায়ূন আহমেদের ‘রঙের বাড়ই’ নামের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে জনসমক্ষে প্রথম সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর ১৯৯৯ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে ৭টি গানে কণ্ঠ দেন। এর মধ্যে ‘শুয়া চান পাখি’ গানটির জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ১৯৯৯ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব বাঁশি সম্মেলনে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেন।</p> <p>বারি সিদ্দিকীর প্রকাশিত অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে, ‘দুঃখ রইলো মনে’, ‘অপরাধী হইলেও’, ‘আমি তোর’, ‘‘সরল মনে কতই দুঃখ দিলে’, ‘ভাবের দেশে চলো’, ‘সাদা রুমাল’, ‘মাটির মালিকানা’, ‘মাটির দেহ’, ‘মনে বড় জ্বালা’, ‘প্রেমের উৎসব’, ‘ভালোবাসার বসত বাড়ি’, ‘লিলুয়া বাতাসে প্রাণ’, ‘দুঃখ দিলে দুঃখ পাবি’, ‘আসমান সাক্ষী’ (২০০৯), ‘চন্দ্রদেবী’ (২০০৯) ইত্যাদি। এছাড়া বারি সিদ্দিকী অভিনীত চলচ্চিত্র ‘মাটির পিঞ্জিরা’।</p> <p>২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে বারী সিদ্দিকীকে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ২৪ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্যু হয়। তার এক কন্যা ও দুই ছেলে রয়েছেন।</p>