<p>থ্রিলার পছন্দ করেন না, এমন দর্শক হয়তো খুঁজে পাওয়াই দুস্কর। সিনেমাপ্রেমীদের প্রায় সব অংশই রীতিমতো থ্রিলারপ্রেমী। আর থ্রিলারপ্রেমীদের জন্য আজকে একটি বিশেষ সিনেমার রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম। আজ বলবো ‘ফোন বুথ’-এর কথা।</p> <p>২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ঘরানার হলিউড সিনেমা ‘ফোন বুথ’ সিনেমাপ্রেমীদের কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে রয়েছে আজও। পরিচালক জোয়েল শুমাখার নির্মিত এই ছবির মূল চরিত্র স্টু শেফার্ডের ভূমিকায় দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন কলিন ফ্যারেল। সাসপেন্স ও মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েনের মিশেলে তৈরি এই সিনেমাটি দর্শকদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আটকে রাখবে পর্দায়।</p> <p>ছবির গল্পে দেখা যায়, স্টু শেফার্ড একজন উচ্চাভিলাষী পাবলিসিস্ট, যার জীবনের লক্ষ্য দ্রুত ধনী হওয়া। তবে এ লক্ষ্য অর্জনে সে মিথ্যা বলা ও অন্যদের ব্যবহার করাসহ বেছে নেয় নানা অনৈতিক পথ। বিবাহিত স্টু এক উঠতি অভিনেত্রীর সঙ্গে গোপন সম্পর্কে জড়ায় এবং প্রতিদিন নিউইয়র্কের একটি পুরনো ফোন বুথ থেকে তাকে কল করে। একদিন সেই ফোন বুথেই একটি রহস্যময় ফোন কল পেয়ে স্টুর জীবন এক কঠিন সংকটে পড়ে। অপরিচিত কণ্ঠস্বর জানায়, সে একটি স্নাইপার রাইফেলের নিশানায় আছে। এরপর থেকে স্টুর প্রতিটি পদক্ষেপ নির্ধারণ হয় সেই ভয়ঙ্কর ব্যক্তির নির্দেশনায়। ঘটনাটি দ্রুত জটিল মোড় নেয়, যা দর্শকদের শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনায় বেঁধে রাখে। এরপরের গল্প জানতে দেখতে হবে ছবিটি।</p> <p><img alt="4" height="683" src="https://m.media-amazon.com/images/M/MV5BMTU5ODMzMzMzM15BMl5BanBnXkFtZTYwOTAyMTU3._V1_.jpg" width="450" /></p> <p>ছবিটির সবচেয়ে বড় শক্তি এর টানটান চিত্রনাট্য। প্রথম কয়েক মিনিট বাদ দিলে পুরো সিনেমাতেই উত্তেজনা ধরে রাখা হয়েছে নিখুঁতভাবে। মাত্র ৮১ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই সিনেমা গল্পকে অযথা টেনে না বাড়িয়ে মুহূর্তে মুহূর্তে সাসপেন্স তৈরি করে। সীমিত সেটিংস—মাত্র একটি ফোন বুথের মধ্যে গল্প আবদ্ধ থাকলেও ছবিটি গভীর সামাজিক বার্তা দেয়। সত্যতা, পাপবোধ এবং আত্মস্বীকৃতির মতো বিষয়গুলো অত্যন্ত চমৎকারভাবে উঠে এসেছে।</p> <p>স্টু শেফার্ড চরিত্রে কলিন ফ্যারেলের অভিনয় ছিল অনবদ্য। অহংকারী, আত্মবিশ্বাসী অথচ ভীত চরিত্রটির বিভিন্ন স্তরকে তিনি চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তার অভিব্যক্তি এবং সংলাপের শক্তি গল্পের আবেগকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে। অন্যান্য চরিত্ররাও তাদের জায়গায় যথেষ্ট সাবলীল। পরিচালক জোয়েল শুমাখার ছবিটি নির্দেশনায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। সিনেমাটোগ্রাফি ছিল দারুণ। পুরনো ফোন বুথের মতো জায়গায়ও চিত্রগ্রহণের মাধ্যমে টানটান উত্তেজনা তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দৃশ্যগুলোতে ভয় ও অনিশ্চয়তার আবহ ছবির নির্মাণে দারুণ সহায়ক ছিল।</p> <p>যারা টানটান উত্তেজনায় মোড়ানো ভালো একটি থ্রিলার দেখতে চান, তাদের জন্য ‘ফোন বুথ’ হতে পারে একটি আদর্শ পছন্দ। তবে ছবিটি ইংরেজি সাবটাইটেল দিয়েই দেখতে হবে, কারণ হিন্দি ডাবিং কিংবা বাংলা সাবটাইটেল নেই। বলিউডে ‘নক আউট’ নামে এই ছবিটির একটি আনঅফিশিয়াল রিমেক হয়েছিল, তবে তা বক্স অফিসে সফল হয়নি। সাসপেন্স আর মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েনের দুর্দান্ত মিশ্রণে তৈরি ‘ফোন বুথ’ নিঃসন্দেহে থ্রিলারপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নেবে।</p>