<p>সাই-ফাই (সায়েন্স ফিকশন) সিনেমা হল এমন এক ঘরানার চলচ্চিত্র যা বিজ্ঞান ও কল্পনার মেলবন্ধনে তৈরি। ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি, এলিয়েন জীবন, মহাকাশ ভ্রমণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সময়-ভ্রমণ এবং বিভিন্ন প্রযুক্তিগত আবিষ্কারকে কেন্দ্র করে এই জনরার সিনেমা নির্মিত হয়। এই ঘরানার সিনেমাগুলো বরাবরই দর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। সাই-ফাই সিনেমা শুধুমাত্র বিনোদন নয়, বরং ভবিষ্যতের প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক সম্ভাবনা নিয়ে দর্শকদের ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে। আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদন এমন ৬টি সাই-ফাই সিনেমা নিয়ে যেগুলো দর্শকদের জন্য পর্দায় বিনোদনের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গভীর বার্তা দিয়ে গেছে।</p> <p><img alt="5" height="188" src="https://movingstory-prod.imgix.net/movies/headers/blade-runner.jpg?w=1440&h=602&auto=compress,format&fit=crop" width="450" /></p> <p><strong>ব্লেড রানার (১৯৮২)</strong><br /> রিডলি স্কটের এই মাস্টারপিস একটি ডিস্টোপিয়ান ভবিষ্যতের কাহিনী তুলে ধরেছে, যেখানে রেপ্লিক্যান্ট (মানবসদৃশ রোবট) এবং তাদের নির্মাতাদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ফিল্মটি তার নয়ার-স্টাইল ভিজ্যুয়াল এবং গভীর দার্শনিক বিষয়বস্তু, বিশেষত মানবতা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপস্থাপনের জন্য বিখ্যাত। আশির দশকে নির্মিত এই সিনেমার টেকনোলজিক্যাল উপস্থাপনা এখনও সমান অর্থ বহণ করে। হারিসন ফোর্ডের অভিনয় এবং ভিজ্যুয়াল ডিজাইন এটিকে কাল্ট ক্লাসিকে পরিণত করেছে। এতে হারিসন ফোর্ড অভিনয় করেছেন রিক ডেকার্ড চরিত্রে, যিনি একজন ‘ব্লেড রানার’ বা রেপ্লিক্যান্ট শিকারি। রেপ্লিক্যান্ট হলো জৈবিকভাবে তৈরি রোবট, যেগুলো মানুষের মতো দেখতে কিন্তু বিদ্রোহী।</p> <p>এটি মুক্তির পর ততটা জনপ্রিয় না হলেও সময়ের সাথে সাথে এটি সাই-ফাই ক্লাসিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এতে আরও অভিনয় করেছেন রজাও হায়ের, সিন ইয়ং, ড্যারিল হান্নাহ প্রমুখ।</p> <p><img alt="5" height="253" src="https://miro.medium.com/v2/resize:fit:1200/1*pe_Rj4aKzcS94vhzWXTo1A.jpeg" width="450" /></p> <p><strong>এক্স মেশিনা (২০১৪)</strong><br /> কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নৈতিক এবং প্রযুক্তিগত সীমা নিয়ে আলোকপাত করা এই সিনেমাটি সাই-ফাই দর্শকদের জন্য দারুণ একটি মাস্টারস্ট্রোক বলা যায়। সিনেমার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এভা নামের একটি রোবট, যে তার নির্মাতা এবং গবেষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। এটি দর্শকদের গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য করে, বিশেষত মানব জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব সম্পর্কে। </p> <p>অ্যালেক্স গারলান্ড পরিচালিত সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন অ্যালিসিয়া ভিকান্দার, অস্কার ইসাক, ডমহল গ্লিসন, কোরে জনসন প্রমুখ।</p> <p><img alt="45" height="253" src="https://www.intofilm.org/intofilm-production/3852/scaledcropped/3000x1688/resources/3852/moon-ep-liberty-films-uk.jpg" width="450" /></p> <p><strong>মুন (২০০৯)</strong><br /> ডানকান জোনসের এই সিনেমা একজন মহাকাশকর্মীর জীবন ঘিরে, যিনি চাঁদে একা তিন বছর ধরে অবস্থান করছেন। স্যাম বেল নামের সেই চন্দ্রখনির কর্মী তিন বছরের একটি নির্জন মিশনের শেষ প্রান্তে রয়েছে। এই সময়ে, তার একমাত্র সঙ্গী হল একটি এআই রোবট, গার্টি। গল্পটি একটি অপ্রত্যাশিত মোড় নেয় যখন স্যাম বুঝতে পারে তার চন্দ্র মিশনটি এত সহজ নয় যতটা সে ভেবেছিল। তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে এবং এক দুর্ঘটনার পর সে এমন কিছু আবিষ্কার করে যা তার বাস্তবতা ও পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে।</p> <p>ডানকান জোনস পরিচালিত সিনেমাটিতে স্যাম রকওয়েলের অসাধারণ একক অভিনয় দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। আরো অভিনয় করেছেন ডমিনিট মিলিগট, কেভিন স্পেসে, বেনেডিক্ট ওং প্রমুখ।</p> <p><img alt="5" height="300" src="https://images.squarespace-cdn.com/content/v1/5fea3b3d46d31b1ddd850cf5/1610151898516-ORBZJX1UNGQ65ADEGQ9Y/wall-e.jpeg" width="450" /></p> <p><strong>ওয়াল-ই (২০০৮)</strong><br /> সাই-ফাই অ্যানিমেশন সিনেমার ইতিহাসে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে সিনেমাটি। অ্যানিমেটেড এই সিনেমাটি একটি ছোট রোবটের গল্পে নির্মিত, যাকে একটি দূষণময় পৃথিবী পরিষ্কার করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে। সিনেমাটি মজার হলেও একটি গুরুতর বার্তা বহন করে, বিশেষ করে পরিবেশ রক্ষা এবং মানুষের জীবনযাপনের প্রভাব নিয়ে। দারুণ চিত্রনাট্য এবং ভিজ্যুয়ালি চমৎকার উপস্থাপনার জন্য অস্কার জিতে নিয়েছে সিনেমাটি।</p> <p><img alt="5" height="450" src="https://i0.wp.com/musingsofamiddleagedgeek.blog/wp-content/uploads/2021/02/the-day-the-earth-stood-still-image.jpg?resize=1200%2C1200&ssl=1" width="450" /></p> <p><strong>দ্য ডেইলি আর্থ স্টুড স্টিল (১৯৫১)</strong><br /> দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই সিনেমা শান্তি এবং পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদের উপর জোর দেয়ার গল্প ফুটিয়ে তুলেছে। একজন এলিয়েন এবং তার সহযোগী রোবট পৃথিবীতে এসে মানবজাতিকে একটি বার্তা দেয়। এর শক্তিশালী বার্তা এবং কাহিনির জন্য সিনেমাটি এখনো একটি ক্লাসিক হিসেবেই বিবেচিত দর্শকমনে।</p> <p>রবার্ট ওয়াজ পরিচালিত সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন মাইকেল রিনি, প্যাট্রিকা নীল, লক মার্টিন, স্যাম জেফে প্রমুখ। </p> <p><img alt="5" height="253" src="https://images.mubicdn.net/images/film/113049/cache-89429-1623408443/image-w1280.jpg" width="450" /></p> <p><strong>ইন্টারস্টেলার (২০২৪)</strong><br /> ক্রিস্টোফার নোলানের এই মহাকাব্যিক সাই-ফাই সিনেমা ভবিষ্যতের পৃথিবীর গল্প বলে, যেখানে মানব জাতি টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে। বিজ্ঞান ও আবেগের এক অভূতপূর্ব মিশ্রণ, <em>ইন্টারস্টেলার</em> একজন প্রাক্তন নভোচরের (ম্যাথিউ ম্যাককোনাহে) এবং তার দলের গ্যালাক্সির বাইরে বাসযোগ্য গ্রহের সন্ধান করার মহাকাশ যাত্রাকে ঘিরে আবর্তিত। নোবেল বিজয়ী পদার্থবিদ কিপ থর্নের পরামর্শে ফিল্মটি ব্ল্যাক হোল, ওয়ার্মহোল, এবং টাইম ডাইলেশনকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সাইফাই প্রেমীদের জন্য ইন্টারস্টেলার এক মহাকাব্যিক নাম। সিনেমাটি বেষ্ট ভিজ্যুয়াল এফেক্টের ক্যাটাগরীতে অস্কারও জিতে নিয়েছে। </p> <p>ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত ইন্টারস্টেলারে অভিনয় করেছেন ম্যাথিউ ম্যাকনাহে, জেসিকা চাস্টেইন, অ্যান হ্যাথাওয়ে, ম্যাট ডেমন, টিমোথি চালামোসহ এক ঝাঁক তারকা।</p>