শেষ পর্যন্ত অকালেই জীবনপ্রদীপ নিভে গেল মাগুরার সেই নির্যাতিত শিশু আছিয়ার। চার-চারটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রাণান্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে পৃথিবীই ছাড়তে হলো তাকে। বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার ৮ বছর বয়সী শিশু আছিয়া দুপুর ১টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
শিশু আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় শোকে বিহ্বল গোটা দেশ।
সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে মানুষের শোকবার্তা। এই নির্মম মৃত্যু ব্যথিত করেছে শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের মনও। ইতোমধ্যে বেশ কিছু তারকা শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।
আরো পড়ুন
‘ধর্ষক কেন বেঁচে থাকবে?’, মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যুতে তমা মির্জা
ঢালিউড অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডলে শুধু লিখেছেন, ‘আছিয়া।
’
অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দিয়ে লিখেছেন, ‘আল্লাহ আপনি বিচার কইরেন।’
অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়ের কথায়, ‘আছিয়ার মৃত্যু শুধুই একটা মৃত্যু নয়। বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর প্রতিটি নারীর আজীবনের অভিশাপ। প্রতিটা সুস্থ পুরুষের নিজের মেয়ের কাছে আমৃত্যু ছোট হয়ে থাকা।
’
অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান লিখেছেন, ‘আমাদের মাফ করে দিও আছিয়া। আমরা তোমাকে বাঁচাতে পারলাম না।’
অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি লিখেছেন, ‘এ শহরে আর কোনো কন্যার জন্ম না হোক। মাতৃহীন, ভগ্নিহীন, কন্যাহীন মরুভূমি হোক এ দেশ। কুলাঙ্গারের আবাদ হোক!’
আছিয়াকে নিয়ে নিজের ফেসবুকে সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী পারশা মাহজাবীন পূর্ণি লিখেছেন, ‘মরে গিয়ে বেঁচে গেল।
’
আরো পড়ুন
সোনা পাচার শিখেছেন ইউটিউব দেখে, স্বীকারোক্তি অভিনেত্রীর
নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী লিখেছেন, ‘মরে আছিয়া বেঁচে গেল। আর বুঝিয়ে দিয়ে গেল অনেক কিছুই। আছিয়া, তীব্র কষ্ট পেয়েছ মা, এবার ঘুমাও। লজ্জিত, ক্ষমার অযোগ্য আমরা।’
চিত্রনায়িকা তমা মির্জা ধর্ষকের মৃত্যু কামনা করে লিখেছেন, ‘শোনেন পশু ধরে রেখে দেয় না মেরে ফেলে, আবর্জনা পরিষ্কার করে ফেলতে হয় রেখে দিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াতে হয় না। দশ/বিশজন পশুরূপী অমানুষ না থাকলে আমাদের দেশের জনসংখ্যা কমবে না।’ ধর্ষকের শাস্তির বিষয়ে অভিনেত্রী লেখেন, ‘ধর্ষক কেন বেঁচে থাকবে? হয় সঙ্গে সঙ্গে মারেন, না পারলে সাধারণ জনগণের কাছে দিয়ে দেন, কিন্তু বাঁচিয়ে রেখেন না।’
আরো পড়ুন
শাহরুখের জন্য বাতিল হয়েছিল মুম্বাইয়ের শতাধিক বিয়ে!
গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় ওই শিশুটি। পরের দিন তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন রবিবার শিশুটিকে সিএমএইচে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে নেয়া হয়। ধর্ষণের ওই ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, দুলাভাই ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে চার আসামিকে হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।