<p>কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে গর্ভপাত ও শিশুর অকালমৃত্যু ছিল প্রায়ই স্বাভাবিক ঘটনা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির ফলে অনেকটাই কমে এসেছে অকাল গর্ভপাতের হার। তবু বর্তমান সময়ে গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি শহরেও গর্ভপাতের ঘটনা ঘটছে। অল্প বয়সেই গর্ভধারণের ফলে কিংবা বেশি দেরি করে বেবি কনসিভের জন্য রিস্ক বেড়ে যাচ্ছে। আর্লি প্রেগন্যান্সিতে বারবার গর্ভপাত হওয়ার কারণ ও লক্ষণ নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।</p> <p>মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হলো গর্ভকালীন সময়ে ২০তম সপ্তাহের আগে একটি ভ্রূণের স্বতঃস্ফূর্ত মৃত্যু। ২০তম সপ্তাহের পরে গর্ভকালীন অবস্থায় বাচ্চার মৃত্যু হলে সেটাকে মৃতপ্রসব বলা হয়ে থাকে। চিকিৎসাবিদ্যা বা অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত একটি স্বাভাবিক ঘটনা, আমাদের আশপাশে অনেকেই এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যান।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="প্রেগন্যান্সিতে থাইরয়েডের সমস্যা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/01/31/1706676301-1152a49cbd0d8d4a0d1ca0c37f7c744d.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>প্রেগন্যান্সিতে থাইরয়েডের সমস্যা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2024/01/31/1359530" target="_blank"> </a></div> </div> <p><strong>আর্লি প্রেগন্যান্সিতে মিসক্যারেজ কেন হয়?</strong></p> <p>অনেকেরই দেখা যায় কনসিভ করার কিছু সপ্তাহ পর ভ্রূণ সার্ভাইভ করে না। গর্ভপাত হয়ে যায় বা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ক্লিয়ার করে ফেলতে হয়। লুপাস, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম, হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি থাকলে বারবার দৈহিক মিলন এসব কারণে যেকোনো সময় গর্ভপাত হতে পারে। আর্লি প্রেগন্যান্সিতে গর্ভপাতের কারণ নিয়ে মতবিরোধ আছে। সব ক্ষেত্রে গর্ভপাতের কারণ নির্দিষ্টভাবে নির্ণয় করা যায় না। তবু কিছু কমন ফ্যাক্টর এর সঙ্গে জড়িত। যেমন-</p> <ul> <li>মায়ের অপর্যাপ্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা</li> <li>মায়ের ইউটেরাস ও সারভিক্সে আগে থেকে কোনো সমস্যা থাকলে</li> <li>রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে গেলে (আনকন্ট্রোলড ডায়াবেটিস ম্যালাইটাস)</li> <li>হাইপোথাইরয়েডিজম বা থাইরয়েড ডিজিজ</li> <li>কমন কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর যেমন- অতিরিক্ত ওজন, স্মোকিংয়ের অভ্যাস, বেশি বয়স ইত্যাদি</li> </ul> <p>অনেক সময় কিছু ওষুধও গর্ভপাতের কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। যেমন- এনএসএআইডি, মিথোট্রিকজেট। এ ছাড়া ইনফেকশন বা বিভিন্ন ধরনের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলেও আর্লি প্রেগন্যান্সিতে গর্ভপাত হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ডিম্বাণু নিষিক্ত হলেও ভ্রূণ বা ফিটাস গঠিত হয় না। অনেক সময় আবার ভ্রূণের হার্টবিট স্টপ হয়ে যায়। মূলত জেনেটিক্যাল প্রবলেম থাকলে এবং ভ্রূণের বিকাশ সময় অনুযায়ী ঠিকমতো না হলে সেই প্রেগন্যান্সি কন্টিনিউ হয় না। অনেক ক্ষেত্রে কারণটাও আইডেন্টিফাই করা যায় না।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শিশু কিছুই খায় না, বাড়ছেও কম" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/08/21/1724216641-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শিশু কিছুই খায় না, বাড়ছেও কম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/prescription/2024/08/21/1417161" target="_blank"> </a></div> </div> <p><strong>অল্প বয়সে গর্ভধারণ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ </strong></p> <p>এখনো বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বেশির ভাগ মেয়েকেই খুবই অল্প বয়সে বা ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। আর খুব তাড়াতাড়ি তারা মা-ও হচ্ছেন। অল্প বয়সে গর্ভধারণ করার ফলস্বরূপ মিসক্যারেজ বা গর্ভপাতের কারণ হিসেবে যে বিষয়টিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় তা হলো দুর্বল সার্ভিক্যাল টিস্যু (ইনকম্পিটেন্ট বা অক্ষম সার্ভিক্স)। আবার বেশি বয়সে বাচ্চা নিতে গেলেও ঝুঁকি বেড়ে যায়। পূর্বে গর্ভপাতের ইতিহাস থাকলে অবশ্যই পরবর্তী বেবি নেওয়ার প্ল্যান করলে ডাক্তারের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকুন।</p> <p><strong>গর্ভপাতের লক্ষণ</strong></p> <p>অনেক ক্ষেত্রে ব্লিডিং বা ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হয়, অনেকের তলপেটে ব্যথা হয়। আবার অনেকের কোনো লক্ষণ থাকে না। আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে বোঝা যায় যে ভ্রূণের হার্টবিট নেই। এরপর ডাক্তারের পরামর্শে ডিএনসি করতে হয় বা মেডিসিনের মাধ্যমে সেটা ক্লিয়ার করে ফেলতে হয়। তবে বার বার গর্ভপাত হলে যে আবার আপনি হেলদি বেবি জন্ম দিতে পারবেন না, এমনটা একদমই ভাববেন না। মিসক্যারেজ এর পরও আবার কনসিভ করে সুস্থভাবে সন্তানের মা হয়েছেন, এমন নারীর সংখ্যা কম নয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সন্তান কথায় কথায় মিথ্যা বলছে? যেভাবে সামলাবেন" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/08/18/1723978303-c62affba08439616f8d3f7e488188830.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সন্তান কথায় কথায় মিথ্যা বলছে? যেভাবে সামলাবেন</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2024/08/18/1416205" target="_blank"> </a></div> </div> <p>আর্লি প্রেগন্যান্সিতে মিসক্যারেজ হলেও ভেঙে না পড়ে একজন বিশেষজ্ঞ গাইনি ডাক্তারের চিকিৎসা পরামর্শ নিন। এই সময় পরিবারের অন্য সদস্যদেরও তাকে সাপোর্ট দিতে হবে। প্রতিটা মেয়েরই সুন্দর করে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। অল্প বয়সে বিয়ে বা গর্ভধারণ যাতে কোনো মেয়ের অকাল মৃত্যুর কারণ হয়ে না দাঁড়ায়, সেটি খেয়াল রাখতে হবে সবাইকে।</p> <p>সূত্র : সাজগোজ</p>