<p>হিমোগ্লোবিন মূলত রক্তে অবস্থিত প্রোটিন। এটি রক্তের লোহিত রক্ত কণিকায় থাকে এবং রক্তের মাঝে প্রয়োজনীয় ঘনত্ব বজায় রাখে। এই হিমোগ্লোবিনের কারণেই রক্ত লাল হয়। হিমোগ্লোবিনের মূল কাজ হলো রক্তের মাধ্যমে দেহের প্রতিটি অংশে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে অ্যানিমিয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা, যেমন মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।</p> <p>শরীরে আয়রনের অভাব হলে হিমোগ্লোবিনের স্তর কমতে থাকে। এর অভাবে মাথা ঘোরা, মুখে ঘা হওয়া, হাত ও পা ফুলে যাওয়া, ত্বকের রং পরিবর্তন হওয়া, পিরিয়ডে অধিক রক্তপাত হওয়া, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দেয়। </p> <p>একজন পুরুষের দেহে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ১৩.৫ থেকে ১৭.৫ গ্রাম। নারীদের রক্তে ১২-১৫.৫/১৬ গ্রাম। তবে অনেকেরই রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকে।</p> <p><span style="font-size:18px"><strong>হিমোগ্লোবিন বাড়াতে কী খাবেন</strong></span></p> <p><strong>প্রাণিজ খাদ্য</strong></p> <p>কলিজা, ডিম, দুধ, মাংসের মতো প্রাণিজ খাদ্য থেকে খুব সহজে হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় এবং তা শরীরে খুব দ্রুত শোষণ হয়। উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে সে পরিমাণে হিমোগ্লোবিন তৈরি হতে পারে না বলে প্রাণিজ উৎসকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।</p> <p><strong>ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার</strong></p> <p>ভিটামিন ‘সি’র অভাব হলে রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যেতে পারে। কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, টমেটো, গোলমরিচ ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকে। এগুলো লৌহ শোষণে সহায়তা করে ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে।</p> <p><strong>রঙিন সবজি ও ফল</strong></p> <p>ডালিম, আপেল, বিট, লাল আঙ্গুর, ব্রকলিতে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফাইবার। এগুলো রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়ক। এগুলোর মধ্যে ডালিম খুব দ্রুত রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়।</p> <p><strong>সামুদ্রিক মাছ</strong></p> <p>সামুদ্রিক মাছ থেকে লৌহ পাওয়া যায়। যা হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য খুবই উপযোগী।</p> <p><strong>খেজুর, কিসমিস, ডুমুর</strong></p> <p>খেজুর ও কিসমিস একত্রে আয়রন ও ভিটামিন সি-এর উপযুক্ত উৎস। অন্যদিকে ডুমুরে রয়েছে যথেষ্ট মাত্রায় আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন এ ও ফোলেট। প্রতিদিন সকালে তিনটি করে খেজুর, এক মুঠো কিসমিস ও শুকনা ডুমুর মিশিয়ে খেলে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শরীরে এনার্জিও থাকে চূড়ান্ত। তবে ডায়াবেটিক রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের খাবার খাবেন না।</p> <p><strong>তিল</strong></p> <p>কালো তিলে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, জিংক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি৬, ই ও ফোলেট।</p> <p><strong>সজনে পাতা</strong></p> <p>জিংক, লোহা, তামা, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজসহ ভিটামিন এ, বি, সি দ্বারা পূর্ণ সজনে পাতা। সজনে শাক প্রতিদিন ভাতের সঙ্গে খাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি।</p>