<p>দারুণ হাসিখুশি পরিবেশ তবুও আপনি স্থির থাকতে পারছেন না। কোনো এক ব্যক্তিকে দেখলেই আপনি রেগে যান বা অস্বস্তি হয় নয়তো ব্যক্তিজীবনে ছন্দঃপতন ঘটে। যাকে দেখলে বা যার কথায় আপনার স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ বদলে যায়। হয়তো এরাই আপনার জীবনের টক্সিক পিপল, ক্ষতিকারক ব্যক্তি। যারা সব সময় চাইবে, আপনি বা আপনারা কষ্টে থাকুন। </p> <p>তারা অন্যের মনে দুশ্চিন্তা এনে দিতে, আতঙ্ক ছড়াতে ও প্যানিক তৈরি করতে পছন্দ করে। অন্য কেউ নিরানন্দে আছে দেখলে এদের আনন্দ বাড়ে। দিন শেষে তারা নিজেরাও ভালো নেই, সুখে নেই, আনন্দে নেই। তারা নিজেরা ভালো থাকতে জানে না। এরা শুধুই নিজের স্বার্থ মেটাতে অন্যের কাছে আসেন, তারপর সুবিধা নেওয়া শেষ হলেই তার নামে অভিযোগ বা অপবাদ ছড়ান। এমন ব্যক্তিদের থেকে যতটা দূরে থাকা যায় ততই মঙ্গল।</p> <p>যাদের উপস্থিতিতে আনন্দময় পরিবেশ নিমেষেই বিব্রতকর হয়ে ওঠে তাদের কিভাবে এড়িয়ে চলবেন? পরামর্শ দিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক <strong>ডা. মো. জোবায়ের মিয়া</strong>। লিখেছেন <strong>তানজিনা আকতারী</strong></p> <p>শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. জোবায়ের মিয়া বলেন, ‘যাদের কথায় বিরক্ত হই বা যাদের এড়িয়ে চলি সেই ব্যক্তিরা আমাদের কাছের মানুষ, প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়, সহপাঠী বা কলিগ কি না আগে খেয়াল করতে হবে। এমন ব্যক্তিদের কাউকে তো চাইলেই জীবন থেকে বা চলার পথে পুরোপুরি এড়ানো যায় না। দূরের বা বাইরের কেউ হলে তাকে এড়ানো অনেকটা সহজ। এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘন ঘন দেখা হলে মানসিকভাবে আমরা অস্বস্তিতে পড়ি। সেই সঙ্গে আড্ডা বা আয়োজনের পরিবেশ খারাপ হয়। ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে তিক্ততা তৈরি হয়। সে জন্য খুব বেশি প্রয়োজন না হলে তাঁর বা তাঁদের সঙ্গে যুক্তি, তর্ক, কথার পিঠে কথা, বাদানুবাদে না জড়ানোই উচিত। যদি এই ধরনের ব্যক্তি অযৌক্তিক প্রসঙ্গে বারবার কথায় যুক্তি দেখাতে থাকেন, সে ক্ষেত্রে কথার প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে ফেলা বাঞ্ছনীয়। নয়তো দ্রুত সেই জায়গা বা স্থান থেকে সরে যাওয়া উচিত।’</p> <p>এমন মানুষের সঙ্গে চলাফেরা, কথাবার্তায় আমাদের সব সময় সচেতন থাকা উচিত। কেননা এতে যিনি টক্সিক তাঁর যেমন মানসিক সমস্যা হয়, তেমনি যার সঙ্গে টক্সিক বা ঝামেলাপূর্ণ আচরণ করছেন তাঁরও মানসিক সমস্যা হয়। মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য তাঁদের সঙ্গে সাময়িক দূরত্ব বজায় রাখা সুবুদ্ধির পরিচয় বহন করে। পরিবেশ ও আচরণ প্রশান্তিময় হওয়ার পর নিজের ভুল বুঝতে পারলে টক্সিক আচরণ করা ব্যক্তির দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত সবারই। কারণ একসময় তাঁর নিজের অনুতাপ হতে পারে। তারও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকার জন্য সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকা, আড্ডা, বেড়ানো, সবার সঙ্গে সদ্ভাব থাকা জরুরি।</p> <p>ডা. মো. জোবায়ের মিয়ার মতে, ‘কোনো মানুষই একা বাস করতে পারে না। কেউ কোনো আচরণ বা ব্যবহারের কারণে অন্যের থেকে দূরে সরে গেলে তাঁকে সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা মানুষ হিসেবে আমাদের সবারই দায়িত্ব। এভাবেই তাঁদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে পথ চলতে হবে আমাদের। সাময়িকভাবে দূরত্ব বজায় রেখে তাদের শোধরানোর সুযোগ দেওয়া উচিত।’ </p>