<p>নাসার মঙ্গল মিশনে সহযোগিতার জন্য জীবাশ্ম ম্যাপ তৈরি করছেন সুইডেনের একদল বিজ্ঞানী। তাঁরা পর্বতের ভেতরে লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন শিলা জীবাণুর ওপর এ ম্যাপ তৈরি করছেন। সুইডেনের ওস্কারহামে খনন করা এস্পো টানেলে প্রাপ্ত ব্যাকটেরিয়া থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে গবেষকরা আশা করছেন।</p> <p>মঙ্গল গ্রহে জীবনের অস্তিত্ব খুঁজতে আগামী বছর পৃথক মহাকাশযান পাঠানোর পরিকল্পনা করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)। ভিনগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েন খুঁজে পেতে গবেষকরা মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ ও আবহাওয়ার মতো পৃথিবীর আদি জীবনের আলামত বিশ্লেষণ করবেন। এ কারণে জীবাশ্মের একটা তুলনাযোগ্য ম্যাপ তৈরি করাই সুইডিশ গবেষকদের লক্ষ্য।</p> <p>গবেষকরা বলছেন, এস্পো টানেল থেকে সংগৃহীত লোহা ভক্ষণকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো হতে পারে মঙ্গল  গ্রহে বাস করা সম্ভাব্য জীবনের প্রতিচ্ছবি। পর্বতের গুহার শিলা ও ফাটলের গভীরে এ অণুজীব অবস্থান করে এবং লোহা থেকে নিউট্রিশন বা পুষ্টি লাভ করে থাকে বলে জানান সুইডিশ মিউজিয়াম অব হিস্ট্রির গবেষক মাগনুস ইভারসন। তিনি বলেন, এস্পো টানেল পর্বত গ্রানাইট শিলাসমৃদ্ধ, যা মঙ্গল গ্রহে নেই। আগ্নেয়গিরির শিলায় মার্সের পর্বতগুলো তৈরি, যা পৃথিবীর সাগরের তলায়, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই ও আইসল্যান্ডে দেখা যায়। আগ্নেয়গিরির শিলার সঙ্গে গ্রানাইট শিলার মিলের জায়গা হচ্ছে ‘ম্যাগমা লাভা’। মঙ্গল গ্রহ লোহাসমৃদ্ধ। এস্পো টানেল থেকে সংগৃহীত ব্যাকটেরিয়াগুলো লোহা ভক্ষণকারী। সুতরাং ধরে নেওয়া যেতে পারে, এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া মঙ্গল গ্রহেও বিদ্যমান। তবে মার্সে আদৌ এলিয়েন বা জীবনের অস্তিত্ব আছে কি না, তা এখনো অজানা বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।</p> <p>‘মার্স মিশন’ গবেষণার অংশ হিসেবে পর্বতের অবকাঠামোগত ম্যাপ তৈরি ছাড়াও পর্বতের শিলায় যেসব রাসায়নিক পদার্থ আছে, তা নির্ণয়ের চেষ্টা চলছে। গবেষকরা মনে করছেন, জীবাণু দিয়েই এসব তৈরি হয়েছে। এর আগে ধারণা করা হতো, ম্যাগমা লাভাবিশিষ্ট শিলায় জীবাণুুর অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়। সে কারণে ‘জীবাশ্ম লাইব্রেরি’ তৈরির তাগিদ ছিল না। পরিবর্তিত বাস্তবতায় একটা ম্যাপ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এস্পো টানেল পর্বত থেকে যত বেশি সম্ভব জীবাশ্ম উপাদান সংগ্রহ করার মাধ্যমে ওই ম্যাপ তৈরি হবে, যার মাধ্যমে মঙ্গল গ্রহে ঠিক কী খুঁজতে হবে, সে সম্পর্কে ধারণা মিলবে।</p>