<p style="text-align:justify">সরকার পতনের আগেরদিন ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ১৬দিনে সারা দেশে ২ হাজার ১০টি সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই সকল ঘটনা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। পরিষদের পক্ষ থেকে আগামী শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ-সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিস্তারিত তুলে ধরেন ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি নির্মল রোজারিও। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জন কর্মকার ও ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয়, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপঙ্কর ঘোষ প্রমুখ।</p> <p style="text-align:justify">সহিংসতায় ১৬দিনে এক হাজার ৭০৫টি পরিবার সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে নির্মল রোজারিও বলেন, ‘আদিবাসীসহ ১৫৭টি পরিবারের বাড়িতে হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব পরিবার এখন দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে খুলনা বিভাগে। সেখানে দুইজন নিহত ও চারজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। কিছু পরিবারের জমি জবরদখল করা হয়। সেই সঙ্গে ৬৯টি উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। সহিংসতাই প্রায় ৫০ হাজার নর-নারী, কিশোর-কিশোরী, শিশু ও প্রতিবন্ধী মানুষ সরাসরি আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তরা আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন।’</p> <p style="text-align:justify">সাম্প্রদায়িক সহিংসতার এসব ঘটনায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান নির্মল রোজারিও। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা পতন পরবর্তী সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে সাম্প্রদায়িক নৃশংসতার ঘটনাবলীর পাশাপাশি ১৯৯০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের ওপর সংঘটিত সব মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার ঘটনাবলীর জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক। সংখ্যালঘুদের ওপর অব্যাহত সহিংস ঘটনাবলী রাষ্ট্রীয়, রাজনৈতিক না সাম্প্রদায়িক, তা নিরুপিত হোক। এসব ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক।’</p> <p style="text-align:justify">এসময় ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তসহ অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অবসান এবং দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান। </p> <p style="text-align:justify">সংবাদ সম্মেলনে দাবি আদায়ে আগামী শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে বিক্ষোভ ও সমাবেশের ঘোষণা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ সময় জানানো হয়, স্বাধীনতা পরবর্তী কোনো সরকারের আমলে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত কোনো হামলার ঘটনার এখন পর্যন্ত বিচার হয়নি। তাই বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অংশ হিসেবে শনিবার বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।</p>